মিয়া গোলাম পরওয়ার

আগামী নির্বাচনে দুর্নীতিবাজদের লাল কার্ড দেখাবে জনগণ

স্বাধীনতার ৫৪ বছরে রাষ্ট্রের প্রশাসন, অর্থনীতি, বিচারব্যবস্থা, কৃষি, শিক্ষা ও সংস্কৃতিসহ কোনো ক্ষেত্রেই জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। এ সময়ের সরকারগুলো দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, ভিন্নমতের ওপর নির্যাতনসহ মানুষের জীবনমানের চরম অবনতি ঘটিয়েছে।

Location :

Dumuria
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার শাহপুর আন্দুলিয়া ফুটবল মাঠে ছাত্র গণজমায়েতে বক্তব্য দেন  জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার শাহপুর আন্দুলিয়া ফুটবল মাঠে ছাত্র গণজমায়েতে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার |নয়া দিগন্ত

খুলনা ব্যুরো ও ডুমুরিয়া সংবাদদাতা

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে রাষ্ট্রের প্রশাসন, অর্থনীতি, বিচারব্যবস্থা, কৃষি, শিক্ষা ও সংস্কৃতিসহ কোনো ক্ষেত্রেই জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। এ সময়ের সরকারগুলো দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, ভিন্নমতের ওপর নির্যাতনসহ মানুষের জীবনমানের চরম অবনতি ঘটিয়েছে। ফলে আগামী নির্বাচনে জাতি তাদেরকে লাল কার্ড দেখাবে।

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার (খুলনা-৫ আসন) শাহপুর আন্দুলিয়া ফুটবল মাঠে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আয়োজিত ছাত্র গণজমায়েতে তিনি এসব কথা বলেন।

ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মোক্তার হুসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জমায়েতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি আবু সাদিক কায়েম ও জাহাঙ্গীর নগর বিশবিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (জাকসু) জিএস মাজহারুল ইসলাম। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন ডুমুরিয়া সনাতনী কমিটির সভাপতি কৃষ্ণ নন্দী, রাকসুর হাবিবুর রহমান হল সংসদের ভিপি আহমদ আহসানউল্লাহ ফারহান, জাকসুর সদস্য আবু তালহা, মালয়েশিয়া প্রবাসী আবু হানিফ আকুঞ্জি, জামায়াতের খুলনা জেলা আমির মাওলানা এমরান হুসাইন, মহানগরী আমির ও খুলনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, খুলনা জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, খুলনা মহানগরী ছাত্রশিবিরের সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন, খুলনা জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মঈনুল ইসলাম, অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস ও গাউসুল আযম হাদী, মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি আজিজুল ইসলাম ফারাজী, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবু ইউসুফ মোল্লা, খুলনা জেলা উত্তর ছাত্রশিবিরের সভাপতি ইউসুফ ফকির, ডুমুরিয়া উপজেলা নায়েবে আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান ও গাজী সাইফুল্লাহ, সেক্রেটারি ও উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু কমিটির সহ-সভাপতি ডা. হরিদাস মন্ডল ও উপজেলা যুব বিভাগের সভাপতি বি এম আলমগীর হুসাইন।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, গতবছরের ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পরও জমিদখল, টেম্পু-বাসস্ট্যান্ড দখল, বাজার–ঘাটের নিয়ন্ত্রণ ও চাঁদাবাজি আগের ধারায় চলছে। এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জামায়াতের কোনো সম্পর্ক নেই । তবে জনগণ এখন পরিবর্তন চায়। পুরনো রাজনৈতিক ধারা, দুর্নীতি ও দখলদারিত্ব থেকে মুক্ত হয়ে একটি ন্যায়পরায়ণ রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। জামায়াত এই পরিবর্তন আনতে পারবে ।

তিনি জামায়াত আমির ড. শফিকুর রহমানের ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দেয়া বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে জামায়াতের এমপি-মন্ত্রীরা কোনো ট্যাক্স ফ্রি গাড়ি, প্লট বা বিশেষ সুবিধা নেবেন না। এ প্রতিশ্রুতি অন্যান্য দলের প্রধানরা দিতে পারবেন না।

তিনি ডুমুরিয়ায় হিন্দু ভোটারদের একটি দলের পক্ষ থেকে অর্থের প্রলোভন, বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া ও হুমকি দেয়া হচ্ছে দাবি করে উপস্থিত হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা ভয় পাবেন না। আপনারা যেমন নৌকা, ধানের শীষ, লাঙলে ভোট দিতে পারেন, তেমনি দাঁড়িপাল্লায় ভোট দেয়ার অধিকারও আপনাদের আছে। আমরা আপনাদের পাশে আছি।

প্রবাসী শ্রমিকদের সমস্যা তুলে ধরে গোলাম পরওয়ার বলেন, পাসপোর্ট, রেজিস্ট্রেশনসহ নানা হয়রানি বন্ধে একটি দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন প্রয়োজন। ক্ষমতায় গেলে প্রবাসীদের ভোটাধিকারসহ সকল প্রশাসনিক জটিলতা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে। তিনি জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, ডিসি, এসপি, ইউএনওসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি নিরপেক্ষ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দিনের ভোট রাতে হলে তার পরিণতি কী হয়, দেশ তার মূল্য দিয়েছে। এবার কেউ ভোট ডাকাতির চেষ্টা করলে দায় এড়াতে পারবেন না।

ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম বলেন, একটি দলের অন্তঃকলহে ইতোমধ্যেই দুই শতাধিক নেতাকর্মী নিহত হয়েছে। সুতরাং যে দল নিজের দলের নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা দিতে পারে না সেই দলের কাছে দেশ নিরাপদ নয়। তিনি বলেন, আগামীর বিপ্লব হবে ইনসাফের বিপ্লব। তরুণ প্রজন্ম ইনসাফের পক্ষে। তিনি ইনসাফের প্রতীক দাঁড়িপাল্লায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ইনসাফ কায়েম হলে শহীদদের স্বপ্ন পূরণ হবে। তিনি সকলকে ভোটকেন্দ্র পাহারা দেয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, কাউকে ভোট ডাকাতি, কেন্দ্র দখল, ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করতে দেয়া যাবেনা। তিনি জুলাই সনদ নিয়ে তালবাহানা করার বিরুদ্ধেও হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন।