কমলগঞ্জে চা শ্রমিক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার ১

কমলগঞ্জের মাধবপুর ইউনিয়নের শ্রী গবিন্দপুর চা বাগানে ১৩ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে এক বখাটে যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) সংবাদদাতা

Location :

Maulvibazar
কমলগঞ্জে চা শ্রমিক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার ১
কমলগঞ্জে চা শ্রমিক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার ১ |নয়া দিগন্ত

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মাধবপুর ইউনিয়নের শ্রী গবিন্দপুর চা বাগানে ১৩ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে এক বখাটে যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর বাবা দিলীপ পাশী কমলগঞ্জ থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করেছেন।

কমলগঞ্জ থানায় করা মামলা সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে মা বাবার অনুপস্থিতে প্রতিবেশী দিপিকা পাশি (১৩) ছদ্মনামকে ঘরে একা পেয়ে শ্রী গবীন্দপুর চা বাগানের রামদরস পাশির বখাটে ছেলে রামপ্রসাদ পাশি (২০) তাকে কু-প্রস্তাব দেয়, তার প্রস্তাবে রাজি না হলে দিপিকার পড়নের ওড়না দিয়ে হাত-পা ও মুখ বেঁধে জোর পূর্বক তাকে ধর্ষণ করে। এসময় দিপিকা রক্তাক্ত হয়ে অচেতন হয়ে পড়ে। ধর্ষণ শেষে অচেতন হওয়া দিপিকাকে বিবস্ত্র অবস্থায় মেজেতে ফেলে রেখে বখাটে রামপ্রসাদ পালিয়ে যায়।

এদিকে বিকেলে চা বাগানের কাজ শেষে দিপিকার (ছদ্মনাম) বাবা দিলিপ পাশী ও মা চামরতি পাশি বাড়ি ফিরে বাড়ির ভেতরে মেয়েকে বিবস্ত্র হাত-পা, মুখ বাঁধা রক্তাক্ত অচেতন অবস্থায় মেজেতে পড়ে থাকতে দেখে সাথে সাথে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।

নির্যাতিতা দিপিকার (ছদ্মনাম) বাবা দিলীপ পাশী জানান, ঘটনার দিন আমি এবং আমার স্ত্রী চামরতি পাশী প্রতিদিনের মতো সকালে আমাদের মেয়েকে বাড়িতে একা রেখে চা বাগানে কাজে যাই, কাজ শেষে বিকালে বাড়িতে ফিরে আসি। এদিন বিকেলে কাজ শেষে বাড়ি ফিরে ঘরের দরজা আটকানো দেখে তা খুলে আমার মেয়েকে খাটের মধ্যে রক্তাক্ত ও উলঙ্গ এবং হাত-পা বাঁধা অবস্থায় জ্ঞানহীন হয়ে পড়ে থাকতে দেখি। আমি ঘটনা বুঝতে পেরে সাথে সাথে একটা সিএনজি নিয়ে এসে আমার মেয়েকে মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্যে কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। সেখান থেকে তাকে দ্রুত মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসকরা। মৌলভীবাজার হাসপাতালে ভর্তি করার পর তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে সেখান থেকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে তার অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলে বিস্তারিত ঘটনা জেনে গত সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে কমলগঞ্জ থানায় রামপ্রসাদ পাশিকে আসামি করে ধর্ষণের লিখিত অভিযোগ করেছি। আমি ন্যায় বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোমবার রাত ১১টার দিকে কমলগঞ্জ থানার এসআই রনি তালুকদার এর নেতৃত্বে এসআই অনিক, আমির হোসেন, এএসআই রবীন, তোফাজ্জল হোসেনসহ পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে মাধবপুর ইউনিয়ন এর শ্রী গবীন্দপুর চা বাগানের নতুন লাইন এলাকার রামদরস পাশির ছেলে প্রধান আসামি ধর্ষক রামপ্রসাদ পাশিকে (২০) গ্রেফতার করা হয়েছে।

আসামি রামপ্রসাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা নম্বর- ১৩, তাং- ১৬/০৯/২০২৫ ইং, ধারাঃ ২০০০ সালের (সংশো/০৩) ৯(১) মামলা করা হয়েছে।

কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু জাফর মাহফুজুল কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আমরা গতকাল সোমবার সকালে কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগ পেয়ে এদিন রাতেই অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে আদালতের মাধ্যমে আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।