দোয়ারাবাজার সীমান্ত দিয়ে আসা জব্দকৃত ভারতীয় ৯০ গরু গায়েব

‘এগুলো বাঁশতলা এলাকায় আছে।’ তাহলে পুলিশ কেন খুঁজে পেল না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পুলিশের সাথে ভুল-বোঝাবুঝি হয়েছে। আমি এ নিয়ে চরম পেইনের মধ্যে আছি।’

দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা

Location :

Dowarabazar
দোয়ারাবাজার সীমান্ত দিয়ে আসা জব্দকৃত ভারতীয় ৯০ গরু গায়েব
দোয়ারাবাজার সীমান্ত দিয়ে আসা জব্দকৃত ভারতীয় ৯০ গরু গায়েব |নয়া দিগন্ত

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে আসা একটি চালানের জব্দকৃত ৯০টি গরু প্রায় আড়াই মাস আগে জব্দ করেছিল যৌথবাহিনী (টাস্কফোর্স)। আইনি জটিলতায় নিলাম না দিয়ে স্থানীয় এক স্কুল শিক্ষকসহ পাঁচ ব্যক্তির জিম্মায় দেয়া হয় প্রায় কোটি টাকার ওই ৯০টি গরু। রাখা হয় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার ফার্মে। কয়েকদিন পর পুলিশ তদন্তে নামলে জানতে পারে ওই ৯০টি গরু জিম্মাদারদের কাছে নেই। আশঙ্কা করা যাচ্ছে প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে এগুলো বিক্রি করে দেয়া হয়েছে।

সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, ৩০ এপ্রিল সন্ধায় দোয়ারাবাজার উপজেলার বোগলাবাজার সীমান্ত থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকাযোগে সুনামগঞ্জে ৯০টি ভারতীয় গরু নিয়ে আসছিলেন চোরাকারবারিরা।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওইদিন সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জ জেলা শহরের বিজিবি ক্যাম্পের পাশে সুরমা নদীতে বিজিবি সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়নের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান হৃদয়ের নেতৃত্বে পরিচালিত টাস্কফোর্স এসব গরু আটক করে।

নিয়মানুযায়ী নিলামের প্রস্তুতি নিলে আইনি জটিলতা দেখা দেওয়ায় পরে আদালতের মাধ্যমে জব্দকৃত গরু গুলোর বিষয় বিচারাধীন থাকায় দোয়ারাবাজার উপজেলার মিতালী পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক ছবির আহমদ’র নেতৃত্বে বোগলাবাজার ইউপি যুবদল সভাপতি পদপ্রার্থী হারুন অর রশীদ, নাজমুল হোসেন পায়েল, স্থানীয় বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটি সদস্য বাহার উদ্দিন জব্দকৃত ভারতীয় গরুগুলো জিম্মা নেয়।

পরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আজহার মিয়া’র মালিকানাধীন ফার্মে গরুগুলো পালনের জন্য রাখা হয়। এর কয়েকদিন পর থেকে হঠাৎ উধাও হয়ে যায় জব্দকৃত এসব গরু। এ নিয়ে স্থানীয়দের জনমনে প্রশ্ন ওঠেছে। স্থানীয়রা বলছেন, কতিপয় প্রশাসনের লোকজনদের হাতে জব্দকৃত এসব গরু আত্মগোপন করে নেয় চোরাকারবারিরা।

মামলার সূত্রে, গত জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে সুনামগঞ্জ সদর থানার এসআই আল আমিন ঘটনাস্থলে সরেজমিন পরিদর্শনে যান। তিনি জিম্মাদারদের সাথে দেখা করে গরুগুলো দেখতে চাইলে কেউ তাকে গরু দেখাতে পারেনি।

ফার্ম মালিক আজহার মিয়া বলেন, ‘গরু গুলো আমার খামারে একরাত ও একদিন রাখা হয়। পরে তারা সরিয়ে নেয়।’

জিম্মাদার হারুন রশিদ বলেন, ‘গরুগুলো বিভিন্ন স্থানে আছে। আমার গুলোও আমার কাছে নেই।’

অপর জিম্মাদার নাজমুল হাসান বলেন, ‘এগুলো বাঁশতলা এলাকায় আছে।’ তাহলে পুলিশ কেন খুঁজে পেল না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পুলিশের সাথে ভুল-বোঝাবুঝি হয়েছে। আমি এ নিয়ে চরম পেইনের মধ্যে আছি।’

পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা আল আমিন বলেন, ‘গরুগুলো জিম্মাদারদের কাছে পাইনি। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন আমি আদালতে জমা দিয়ে এসেছি।‘

সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জাকারিয়া কাদির নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘আদালত এখন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’ তবে টাস্কফোর্স কমান্ডার লিখিত নিয়েই পাঁচজনের জিম্মায় গরুগুলো দিয়েছিলেন বলে সত্যতা নিশ্চিত করেন তিনি।

টাস্কফোর্স কমান্ডার মেহেদি হাসান হৃদয় বলেন, ‘এগুলো রাখার এখতিয়ার আমাদের ছিলো না। আমি বিজিবিকে নিয়মিত মামলা করার আদেশ দিয়ে গরুগুলো পাঁচজনের জিম্মায় দিয়েছিলাম ‘