ময়মনসিংহে ধর্ম অবমাননা এবং সাইবার সুরক্ষা আইনে গ্রেফতার শামীম আশরাফকে (৩৮) কোতোয়ালি মডেল থানা হাজত থেকে আদালতে নেয়ার পথে ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে দেখা গেছে। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হলে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে পাঁচ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এছাড়াও বৃহস্পতিবার ধর্ম অবমাননা ও সাইবার সুরক্ষা আইনের এই মামলায় আদালত শামীম আশরাফের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো: আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, অভ্যন্তরীণ কারণে এবং দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে পাঁচ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তারা কোতোয়ালি মডেল থানায় কর্মরত ছিলেন।
প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন- কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো: আল আমিন ও চারজন কনস্টেবল। তবে পুলিশ কনস্টেবলদের নাম জানা যায়নি।
এদিকে আদালত পরিদর্শক পীরজাদা শেখ মোস্তাছিনুর রহমানও জানান, আসামিকে আদালতে আনার সময় পতাকা দেখার বিষয়টি জানাজানি হলে পুলিশ প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেয়।
এর আগে, সোমবার (৬ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে নগরীর আমলাপাড়া এলাকা থেকে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) শামীম আশরাফকে আটক করে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নিজের ফেসবুক আইডি থেকে একটি কমেন্টের পাল্টা জবাবে ‘ধর্ম অবমাননাকর’ মন্তব্য করেন, যা দ্রুতই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।
পরে স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মানুষ ও আলেম-উলামারা তার গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন। অনেকে ফেসবুকে স্ট্যাটাসও দিতে থাকেন।
এ ঘটনায় সদর উপজেলার চরআনন্দিপুর গ্রামের বাসিন্দা মো: দুলাল মিয়ার ছেলে মো: ইয়াসিন আরাফাত বাদি হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় সাইবার সুরক্ষা ও দণ্ডবিধি আইনে মামলা করেন। মামলার বাদি খেলাফত মজলিসের নেতা বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, শামীম আশরাফ নিজের ফেসবুকের একটি পোস্টে শামীম চৌধুরী নামে একজনের একটি কমেন্টের পাল্টা জবাবে ‘ধর্ম অবমাননাকর’ মন্তব্য করেন। তার ফেসবুকের কমেন্ট ভাইরাল হলে শামীম আশরাফকে গ্রেফতার ও বিচার দাবিতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিতে থাকে ধর্মপ্রাণ মানুষ। এতে স্থানীয় আলেম ও উলামাদের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
এদিকে শামীম আশরাফকে গ্রেফতারের পর গত ৭ অক্টোবর সংশ্লিষ্ট মামলায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিজ্ঞ আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো: শরীফুল হক রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।