নড়াইলে ইজিবাইকচালককে গলা কেটে হত্যা, আসামি গ্রেফতার

নড়াইলে ঋণ টাকা ও অবৈধ সম্পর্কের জেরে ইজিবাইকচালক আকবার ফকিরকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় আসামি বাবু সরদারকে তিন দিনের মধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ফরহাদ খান, নড়াইল

Location :

Narail
নড়াইল জেলার মানচিত্র
নড়াইল জেলার মানচিত্র |নয়া দিগন্ত

নড়াইলে ঋণের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ দেনাদার বাবু সরদারের স্ত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়ান পাওনাদার ইজিবাইকচালক আকবার ফকির (৬৫)। এতে ক্ষিপ্ত আকবারকে গলা ও পুরুষাঙ্গ কেটে হত্যা করেন বাবু (৫৯), ঘটনার তিন দিনের মধ্যে তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জেলার পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম।

এর আগে, ২৬ সেপ্টেম্বর নড়াইল সদর উপজেলার শড়াতলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ সুপার জানান, হত্যাকাণ্ডের এক দিন পর নিহত আকবারের ছেলে নাজির ফকির অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে শড়াতলা গ্রামের বাবু সরদারের সম্পৃক্ততা খুঁজে পায় পুলিশ। বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মশাঘুনি ব্রাক অফিসের সামনের মহাসড়ক থেকে তাকে গ্রেফতার করে জেলা পুলিশের একাধিক টিমসহ গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

তিনি জানান, পূর্বশত্রুতার জের ধরে ১০ থেকে ১২ দিন আগেই আকবারকে হত্যার পরিকল্পনা করেন বাবু। প্রায় ১০ বছর আগে আকবারের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা ঋণ নেন অভিযুক্ত বাবু। এত বছর গড়িয়ে গেলেও ঋণের ওই টাকা দিতে ব্যর্থ হন চাতালশ্রমিক বাবু। ওই ঋণের টাকার সূত্র ধরে আকবার বাবু সরদারের স্ত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এ অবৈধ সম্পর্ক নিয়ে আকবারের প্রতি বাবুর ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।

তিনি আরো জানান, গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিকেল থেকেই আকবারের সাথে সময় দেন বাবু। এক পর্যায়ে রাতের বেলা শড়াতলার পাশে বুড়িখালী গ্রামের বাঁশবাগানের ভেতর তালগাছের নিচে নিয়ে কোমল পানীয়ের সাথে এলার্জিনাশক ২০টি ট্যাবলেট মিশিয়ে আকবারকে খেতে দেন। আকবার ওই পানীয় খেয়ে অচেতন হয়ে পড়েন। বাবু গামছা টুকরো টুকরো করে আকবারের হাত ও পা গাছের সাথে বেঁধে চাকু দিয়ে আকবারের গলা ও অণ্ডকোষসহ পুরুষাঙ্গ কেটে পাশের ডোবায় (অণ্ডকোষ ও পুরুষাঙ্গ) ফেলে দেন। আর আকবারের লাশ তালগাছের নিচে ফেলে চলে যান তিনি।

পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম আরো জানান, এ মামলার একমাত্র আসামি বাবু সরদারের সাথে আকবারের জমিজমা-সংক্রান্ত বিরোধ, স্ত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক, বাবুর শ্বাশুড়িকে ধর্ষণচেষ্টা এবং বাবুর মেয়ে ও পুত্রবধূর প্রতিও আকবারের কুনজর ছিল। আকবারের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে বাবু সরদার দীর্ঘদিন ধরে শোধ করতে না পারায় অপকৌশলে বাবুর পরিবারের প্রতি আকবারের খারাপ প্রভাব পড়ে। এ সব নিয়ে আকবারের প্রতি বাবুর দীর্ঘদিনের ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। এ ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ শেষ পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডে রূপ নেয়।