গাজীপুরে রোমা হত্যা মামলার চাঞ্চল্যকর রহস্য উন্মোচন

গ্রেফতারকৃত আসামি আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। হত্যাকাণ্ডটি পূর্বপরিকল্পিত ছিল। মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

মো: আজিজুল হক, গাজীপুর মহানগর

Location :

Gazipur
গ্রেফতার খোরশেদ আলম
গ্রেফতার খোরশেদ আলম |নয়া দিগন্ত

গাজীপুরে সাবেক স্ত্রী রোমা আক্তারকে (৩৩) নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় মূল রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গাজীপুর জেলা ইউনিট। একইসাথে ঘাতক খোরশেদ আলমকে (৪৮) গ্রেফতার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গাজীপুর পিবিআই এসব তথ্য জানায়।

সংস্থাটি জানায়, তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানীর খিলক্ষেত থানার কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা থেকে গত ১৩ অক্টোবর বেলা সাড়ে ৩টার দিকে খোরশেদ আলমকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ১৪ অক্টোবর বিকেলে গাজীপুর আদালতে ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিতে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করেন।

পিবিআই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, প্রায় আট বছর আগে রোমা আক্তার ও খোরশেদ আলম নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে করেন। তাদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তবে বিয়ের পর থেকেই স্বামীর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে রোমা গত ৮ মে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে খোরশেদকে তালাক দেন। এরপর তিনি গাজীপুর সদর থানার টেক কাথোরা এলাকায় মেয়েকে নিয়ে বসবাস শুরু করেন এবং স্থানীয়ভাবে একটি মুদি দোকান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

পুলিশ জানায়, তালাকের পর রোমার অন্য এক ব্যক্তির সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ তথ্য জানার পর থেকেই খোরশেদ ক্ষুব্ধ ছিলেন। পরে গত ২৮ সেপ্টেম্বর সকালে রোমা তার মেয়েকে মাদরাসায় দেয়ার জন্য ঘরে এলে খোরশেদ পূর্বপরিকল্পিতভাবে ধারালো ছুরি নিয়ে তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। পেছন থেকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করার পর হাত-পা বেঁধে বুকে, পিঠে, পায়ে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্মমভাবে আঘাত করে পালিয়ে যান। পরে গুরুতর অবস্থায় স্থানীয়রা রোমাকে উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে সেদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি মারা যান।

ঘটনায় মামলাটি প্রাথমিকভাবে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর থানা তদন্ত করলেও পরবর্তী সময়ে পিবিআই মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে। এতে অতিরিক্ত আইজিপি পিবিআই মো: মোস্তফা কামালের তত্ত্বাবধানে মামলাটির তদন্ত পরিচালনা করেন পিবিআই গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপার মো: আবুল কালাম আজাদ।

তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মো: মোস্তাফিজুর রহমান আনসারী বলেন, ‘গ্রেফতারকৃত আসামি আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। হত্যাকাণ্ডটি পূর্বপরিকল্পিত ছিল। মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’