বগুড়ায় বাঙালি নদীতে কাটাখালি বাঁধের ভাঙন

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যার দিকে বাঁধে ভাঙনের ঘটনা ঘটে। বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পরপরই দু’পাশের রাস্তা ধ্বসে পড়ে।

মুগনিউর রহমান মনি, শেরপুর

Location :

Sherpur
বাঙালি নদীতে কাটাখালি বাঁধের ভাঙন
বাঙালি নদীতে কাটাখালি বাঁধের ভাঙন |নয়া দিগন্ত

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের চককল্যাণী এলাকায় কাটাখালি বাঁধ ভেঙে গেছে। পানির স্রোতে দু’পাশের রাস্তার ধারের দোকানপাট পানিতে ভেসে গেছে। এই বাঁধের পুনঃনির্মাণ করার জন্য প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যার দিকে বাঁধে ভাঙনের ঘটনা ঘটে। বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পরপরই দু’পাশের রাস্তা ধ্বসে পড়ে।

স্থানীয়রা জানায়, টানা বৃষ্টিতে বাঁধের নিচে থাকা পানি নিষ্কাশনের জন্য বসানো পাইপগুলো বন্ধ হয়ে যায়। দক্ষিণ পাশে জমে থাকা পানির অতিরিক্ত চাপেই মূলত বাঁধটি ভেঙে পড়ে। এতে বিলজয় সাগর, জয়লা, জালশুকা, কইগাতী, যুগিগাতি, রুদ্র্রবাড়িয়া, আওলাকান্দি, চককল্যাণী, ভুবনগাতি, জয়নগর, গুয়াগাছি, চরকল্যাণী ও বেলগাছি এলাকার মানুষজন এই বাঁধের কারনে বন্যা থেকে রক্ষা পেত।

চককল্যাণী এলাকার বাসিন্দা মোজদার সেখ, আবুল কাসেম বলেন, সকালে বাঁধের নিচের পাইপের মুখ পরিষ্কার করে পানি পানি যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। বিকেল ৬টার দিকে বাঁধটি ভেঙে যায়।

তারা আরো জানান, অতীতে পাকিস্তান আমলে নির্মিত বাঁধ ভেঙে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন এলাকাবাসী। পরবর্তীতে সরকারি সহায়তায় নতুন বাঁধ নির্মাণ করা হলেও পাইপের মাধ্যমেই অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশন করা হতো। যার জন্য এলাকাবাসীর আবেদনের প্রেক্ষিতে নতুন করে পাইপ বসানো হলেও সেটি এখন ভেঙে পড়েছে।

আব্দুল আজিজসহ অনেকেই জানায়, বাঁধটি ভেঙে পানি নদীতে যাওয়ার ফলে ওই এলাকার প্রায় ৬০০ একর আবাদি জমিতে দ্রুত কৃষকরা চাষ করতে পারবে, তবে নদীতে পানি বেশি হলে বা বন্যা দেখা দিলে জমিগুলো তলিয়ে যাবে। তারা বাঁধটি দ্রুত সংস্কারের দাবি করে বলেন, আবাদি জমি যেন নদীর পানিতে তলিয়ে না যায়।

স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তি আব্দুল জব্বার, কোরবান মণ্ডলসহ অনেকেই জানান, এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে একটি টেকসই সুইচগেট নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন, যাতে করে বর্ষায় নদীর পানি এই খালে প্রবেশ করতে না পারে এবং বৃষ্টির অতিরিক্ত পানি নদীতে নেমে যেতে পারে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। তাই তাদের দাবি, বাঁধের দ্রত পুনঃনির্মাণ এবং টেকসই সুইচগেট স্থাপন ছাড়া এই দুর্যোগের স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। তারা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রকৌশলী আব্দুল জব্বার বলেন, ‘বাঁধ ভাঙনের খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। টেকসই বাঁধ নির্মাণে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আশিক খান বলেন, বাঁধ ভাঙনের খবর পাওয়ার সাথে সাথে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে দ্রুততম সময়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। আজকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা পরিদর্শন করবেন, তাদের সাথে কথা বলে দ্রুততম সময়ে টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা হবে।