নীলফামারীর সৈয়দপুরে ট্রেন থেকে অজ্ঞান অবস্থায় অজ্ঞান পার্টির হোতাসহ দুই নারী যাত্রীকে উদ্ধার করেছে রেলওয়ে পুলিশ।
শনিবার (৩০ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৬টায় খুলনা থেকে ছেড়ে আসা চিলাহাটিগামী সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে তারা সৈয়দপুর রেলওয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
উদ্ধারকৃতরা হলেন, ট্রেন যাত্রী দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার সেতাবগঞ্জের রশনী রায়ের স্ত্রী কৌশলা রাণী (৬০) ও তার মেয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার রায়পাড়ার উজ্জ্বল রায়ের স্ত্রী বিথি রাণী (৩৫) এবং অজ্ঞান পার্টির হোতা রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার আব্দুল্লাহপুরের আব্দুস সামাদের ছেলে ফুল মিয়া (৫৫)।
জানা যায়, ফুল মিয়া ট্রেনের যাত্রী ওই দুই নারীকে কৌশলে জুস খাওয়ালে তারা অজ্ঞান হয়ে পড়েন। বিষয়টি পাশের যাত্রীরা আঁচ করতে পেরে ফুল মিয়াকে তার ব্যাগে থাকা জুস জোর করে পান করান। এতে তিনিও অজ্ঞান হয়ে পড়েন।
অসুস্থ যাত্রী কৌশলা রাণীর ছেলে প্রদীপ রায় বলেন, ‘আমার মা ও বোন সাতক্ষীরায় আমার ভাগ্নির বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। সেখান থেকে গতরাতে সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনে পার্বতীপুর আসছিল। তারা ট্রেনের ঝ বগির ৭৮ ও ৭৯ নম্বর সিটের যাত্রী ছিল। তাদের পাশের ৭৭ নম্বর সিটের যাত্রী ছিল ফুলমিয়া নামে অজ্ঞান পার্টির হোতা। তিনি আমার মা বোনকে কৌশলে জুস খাওয়ান। এতে তারা অজ্ঞান হয়ে পড়েন।’
‘এই সুযোগে ফুলমিয়া আমার মায়ের কাছে থাকা নগদ তিন হাজার টাকা এবং বোনের কানের দুল ও নাকের ফুল হাতিয়ে নেন। পরে বিষয়টি আঁচ করতে পারেন পাশের যাত্রী এক অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা। তিনি তাৎক্ষণিক ফুলমিয়াকে আটক করেন। এসময় অন্য যাত্রীরাও এগিয়ে আসেন এবং তাকে তল্লাশী করে স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা উদ্ধার করেন। ইতোমধ্যে ট্রেন সৈয়দপুরে এসে পৌঁছালে রেলওয়ে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে এবং আমাকে মোবাইলে জানায়।’
বিথি রাণী বলেন, ‘আমাদের সাথে যে ব্যক্তি এমন করেছে তার বিচার চাই। সে ধরা না পড়লে আমাদের কি অবস্থা হতো?’ এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে তাই অজ্ঞান পার্টির পুরো চক্রকে আটকের দাবিও জানান তিনি।
সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার এসআই ও এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জনক রায় বলেন, ‘আটক ফুলমিয়া অজ্ঞান পার্টির চিহ্নিত হোতা। এঘটনায় শনিবার মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা ঘটনার সাথে জড়িত আর কেউ আছে কি না তা খতিয়ে দেখছি। তদন্তে সন্দিগ্ধ আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চালানো হবে।’