রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার রাজামেহার ইউনিয়নের চুলাশ ভূঁইয়া বাড়ির মিনহাজুর রহমান ভূঁইয়ার একমাত্র ছেলে মাহতাবের জন্য বার্ন ইউনিটের বাইরে তার মা-বাবা ও স্বজনদের কান্না থামছে না। মহান আল্লাহর কাছে একমাত্র ছেলের জীবন ভিক্ষা আর দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়ে অঝোরে কাঁদছেন অসহায় মা-বাবা।
ঢাকায় জাতীয় বার্ন ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) মৃত্যুর সাথে লড়ছেন রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় গুরুতর দগ্ধ ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহতাব রহমান ভূঁইয়া চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মাহতাবের শরীরের প্রায় ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। বর্তমানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
মিনহাজুর রহমান ভূঁইয়া তার পরিবার নিয়ে উত্তরার একটি বাসায় থাকেন। প্রতিদিনের মতো সোমবার (২১ জুলাই) সকালেও মাহতাবকে তার বাবা স্কুলে পৌঁছে দেন। এদিন স্কুল ছুটির ১০-১৫ মিনিট আগে একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে ওই স্কুলের অনেক শিক্ষক-শিক্ষার্থী হতাহত হয়। এ সময় অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের খুঁজে পেতে ছোটাছুটি করতে থাকেন। এ সময় মাহতাব রহমানকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বার্ন ইউনিটে নিয়ে যায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা। সেখানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় আইসিউইতে নেয়া হয়।
মাহতাবের বাবা মিনহাজুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘একমাত্র ছেলে আইসিইউতে আছে, আমরা বাইরে অপেক্ষা করছি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন মাহতাবের শরীরের প্রায় অর্ধেকের চেয়ে বেশি অংশ পুড়ে গেছে। অবস্থা ভালো না। মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলছে। চিকিৎসকরা চেষ্টা করছেন। আল্লাহ যেন আমার একমাত্র ছেলের জীবন ভিক্ষা দেয়, দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।’
এর আগে সোমবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এ পর্যন্ত নিহত হওয়ার সংখ্যা বেড়ে ৩১ জনে পৌঁছেছে। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে ৭৮ জন। এ পর্যন্ত ২০ জনের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
কুমিল্লার দেবিদ্বারে আহত শিক্ষার্থী মাহতাবসহ সকল আহতদের জন্য গ্রামের লোকজন আল্লাহর কাছে রহমত চাইছেন। ফজর নামাজের পরও এলাকার মসজিদে মাহতাবের সুস্থতার জন্য আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করেছেন মুসল্লিরা।