এস এম খোকন, বানিয়াচং (হবিগঞ্জ)
পরিবারের স্বপ্ন পূরণ করা হলো না মহিবুরের। মা, স্ত্রী ও সন্তানের স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেছে। সুখের মুখ দেখার শুরুতেই না ফেরার দেশে পারি জমালেন মহিবুর রহমান খাঁ(৩০)। আর কাউকে বাবা বলে ডাকবে না পাঁচ বছরের অবুঝ সন্তান তাসকিয়া।
শুক্রবার (৩০ মে) সকালে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে লাশ আসলে বিকেলে তার লাশ বানিয়াচংয়ের পাশের গ্রাম আজমিরীগঞ্জ উপজেলার শিবপাশায় এসে পৌঁছেছে। রাতেই জানাযা শেষে গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
মৃত্যুর খবর শুনে কাঁদতে কাঁদতে এতদিনে চোখের পানি যেন শেষ হয়ে গেছে মা ও স্ত্রী জেসমিন আক্তারের। স্ত্রী জেসমিন অবুঝ শিশুকে কী দিয়ে শান্তনা দিবেন বুঝে ওঠতে পারছেন না। নিজেই মাথা গোঁজার ঠাই নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন। চোখে দেখছেন অন্ধকার।
গত ১৫ মে (বৃহস্পতিবার) মালয়েশিয়ায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান মহিবুর।
দেশে থাকতে পেশায় সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিকের কাজ করতেন। শিবপাশা গ্রামের বাইন্নে বাড়ির তাজুল খাঁর ছেলে মহিবুর খাঁ। বাবা তাজুল খাঁ বিয়ে করে গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে গেলে মা ও তার একমাত্র বোনকে নিয়ে নিজ গ্রামের মামার বাড়িতে আশ্রয় নেন মহিবুর। বোনকে বিয়ে দিয়ে নিজেও সাত বছর আগে বিয়ে করে সংসার শুরু করেন। অভাবের কারণে মামা তফুর আলীর বাড়িতে আশ্রয় নেয়া মহিবুর অনেক কষ্টে ঋণ করে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। সেখানে একটি কোম্পানিতে ভালো বেতনে চাকরি করে দেশের ঋণ পরিশোধ করেন।
তফুর আলী জানান, অভাবের সংসারে মা লাফু আক্তার ও স্ত্রী জেসমিন আক্তার আর তিন বছরের অবুঝ সন্তান তাসকিয়ার মুখে হাসি ফুটাতে দুই বছর আগে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিল মহিবুর। ধীরে ধীরে তার সংসারে অভাব দূর হয়। অভাব শেষে সুখের মুখও দেখার পালা এসেছিল এবার। কিন্তু তার আগেই আপনজনদের কাঁদিয়ে মহিবুর চলে গেলেন না ফেরার দেশে।’