গাজীপুরে স্ত্রীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার, স্বামী গুরুতর আহত : যা বলছে মেয়ে

শনিবার মহানগরীর কোনাবাড়ি থানাধীন বাইমাইলের নওয়াব আলী মার্কেট এলাকার একতা টাওয়ার ভবনে এ ঘটনা ঘটে।

মোহাম্মদ আলী ঝিলন, গাজীপুর

Location :

Gazipur
ঘটনাস্থলে উৎসুক জনতা
ঘটনাস্থলে উৎসুক জনতা |নয়া দিগন্ত

গাজীপুরে একটি ফ্ল্যাট বাসা থেকে গলাকাটা এক নারী পোশাক শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসময় তার পাশ থেকে গলাকাটা অবস্থায় গুরুতর আহত তার স্বামীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকালে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। মহানগরীর কোনাবাড়ি থানাধীন বাইমাইলের নওয়াব আলী মার্কেট এলাকার একতা টাওয়ার ভবনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত রহিমা খাতুন (৩৫) সিরাজগঞ্জের শাহাদাতপুর থানার বিনুটিয়া গ্রামের শাহজাহান সরকারের মেয়ে। তার স্বামী আহত কসাই ইমরান হোসেনের (৩৮) গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট থানার আমতৈল গ্রামে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, প্রায় আট বছর আগে প্রথম স্বামী মামুনের সাথে রহিমা খাতুনের ডিভোর্স হয়। পরে রহিমা কসাই ইমরানকে বিয়ে করেন। এটি উভয়ের দ্বিতীয় বিয়ে। বিয়ের পর স্বামী ইমরান তার প্রথম সংসারের মেয়ে শারমিনকে নিয়ে (১৬) রহিমা গাজীপুরের বাইমাইল এলাকার একতা টাওয়ার ভবনের ৫ম তলার একটি ফ্ল্যাটের একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে (সাবলেট) থাকতেন। তিনি একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। মেয়ে শারমিন টিকটকসহ স্টুডিও মিউজিকের গান করেন। পারিবারিক বিষয়াদি নিয়ে প্রায়ই রহিমা ও স্বামীর মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ চলে আসছিল।

আরো জানা যায়, শুক্রবার দিবাগত রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষে তারা খাটে শুয়ে পড়েন। মধ্যরাতে অজ্ঞাত কয়েক দুর্বৃত্ত ওই বাসায় প্রবেশ করে ইমরান ও তার পাশে শুয়ে থাকা স্ত্রী রহিমাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও গলা কেটে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই রহিমা খাতুনের মৃত্যু হয়।

নিহতের মেয়ে শারমিন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, দাম্পত্য কলহের জেরে ঘটনার সময় ইমরান বটি দিয়ে রহিমার গলা কাটছিল। এ দৃশ্য দেখে চিৎকার করলে শারমিনকে পাশের কক্ষে আটকে রাখা হয়। এসময় শারমিন তার মামা জুয়েলকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানালে তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং দরজা খুলে দুইজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানার উপর পড়ে থাকতে দেখেন।

কোনাবাড়ি থানার ওসি মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শনিবার ভোরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুতর আহত ইমরানকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। নিহত রহিমা খাতুনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা একটি ছুরি উদ্ধার করেছে। ঘটনার পর থেকে ওই ফ্ল্যাটের অপর কক্ষের ভাড়াটিয়া তিনজন পলাতক রয়েছেন। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। নিহতের মেয়ে শারমিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শারমিন অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পূর্বশত্রুতার জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি তদন্ত চলছে।