সাটুরিয়ায় কোরবানির পশুর খামারি ও পাইকারদের লোকসানের শঙ্কা

‘এ বছর আমি ২০টি গরু লালন-পালন করেছি। এ বছর গরুর হাটে দাম কম। বাজার না বাড়লে আমার এক থেকে দেড় লাখ টাকা লোকসান হবে।’

সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) সংবাদদাতা

Location :

Manikganj
সাটুরিয়ায় কোরবানির পশুর হাট
সাটুরিয়ায় কোরবানির পশুর হাট |নয়া দিগন্ত

আর কয়েকদিন পরেই পবিত্র ঈদুল আজহা। কোরবানির ঈদ উপলক্ষে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় কোরবানির পশুর হাটগুলোতে এবার চাহিদার তুলনায় প্রায় ৯০০০ অতিরিক্ত পশু উঠেছে। ফলে হাটে পশুর সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম কমে গেছে।
ইতোমধ্যে সাটুরিয়ার বিভিন্ন পশুর হাট জমে উঠতে শুরু করেছে। যেখানে বেপারীদের কেনার চাইতে গরু ভেদে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। যা খামারি ও বিক্রেতাদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সাটুরিয়ার বিভিন্ন খামারিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গরু-ছাগল ও ভেড়ার উৎপাদন খরচ গত বছরের তুলনায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বেড়েছে। খাদ্য, ওষুধ ও শ্রমিকের মূল্য বাড়ার কারণে এই খরচ বেড়েছে। তবে হাটে পশুর সরবরাহ বেশি থাকায় প্রত্যাশিত দাম পাচ্ছেন না তারা।

সাটুরিয়ার হরগজের পশু হাটে পর পর দুই দিনে দেখা গেছে, ৭০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা মূল্যে গরুর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। দেড় লাখ থেকে উপরের দামের পশুর চাহিদা তুলনামূলক কম।

বিক্রেতা ও খামারিরা বলছেন, এ বছর চার থেকে পাঁচটি গরু নিয়ে এলে বিক্রি করতে পারছি না। প্রতিটি গরুর দাম ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা কম বলছেন। বাধ্য হয়ে দিন শেষে ট্রাক ভাড়া উঠানোর জন্য কিছু গরু কম দামে বিক্রি করে বাড়ি যাচ্ছি। ফলে বিক্রেতারা লোকসানের মুখে পড়ছেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার কোরবানির জন্য গরু (ষাঁড়, বলদ) ৮৬০১টি এবং ছাগল-ভেড়া ৫৬১৯টিসহ মোট ১৪ হাজার ২২০টি লালন পালন করা হয়েছে। আর সাটুরিয়ায় চাহিদা রয়েছে ৯০০৫টি। চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত থাকছে ৫২১৫টি পশু।

সাটুরিয়ার হরগজ পশুর হাটে আলিম নামে এক বেপারী বলেন, ‘আমি ঢাকার সাভার থেকে ছয়টি গরু নিয়ে আসছি। বিকেল পর্যন্ত গরুর দামই বলে না। প্রতিটি গরু কেনার চাইতে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা কম বলছে। পরে সব গরু ফেরত নিয়ে যাচ্ছি।’

বরাইদ ইউনিয়নের ধুলুট গ্রামের নিজু মিয়া নামে খামারি বলেন, ‘এ বছর আমি ২০টি গরু লালন-পালন করেছি। এ বছর গরুর হাটে দাম কম। বাজার না বাড়লে আমার এক থেকে দেড় লাখ টাকা লোকসান হবে।’

সাটুরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ইমরান হোসেন বলেন, সাটুরিয়ায় চাহিদার তুলনায় ৫২১৫টি পশু বেশি রয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর বড় গরুর দাম কম যাচ্ছে হাটে। তবে এক লাখ টাকার নিচে গবাাদি পশুর দাম স্বাভাবিক আছে বলে দাবি এই কর্মকর্তার।