মনোনয়ন নিয়ে দ্বন্দ্ব

গাংনীতে বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

মঙ্গলবার সকাল ১১ টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত দফায় দফায় এই পাল্টাপাল্টি হামলা ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে কয়েক ঘণ্টাব্যাপী এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও সেনাবাহিনী ও পুলিশের টিম হাসপাতাল বাজার এলাকায় নিরপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

রাশিদুল ইসলাম বোরহান, গাংনী (মেহেরপুর)

Location :

Gangni
মনোনয়ন নিয়ে দ্বন্দ্বে গাংনীতে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় বিএনপির দুই গ্রুপ
মনোনয়ন নিয়ে দ্বন্দ্বে গাংনীতে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় বিএনপির দুই গ্রুপ |নয়া দিগন্ত

মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে প্রার্থী আমজাদ হোসেন ও মনোনয়ন বঞ্চিত জাভেদ মাসুদ মিল্টনের সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়েছেন। দফায় দফায় এই সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে গাংনী উপজেলা শহর কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

মঙ্গলবার সকাল ১১ টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত দফায় দফায় এই পাল্টাপাল্টি হামলা ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে কয়েক ঘণ্টাব্যাপী এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও সেনাবাহিনী ও পুলিশের টিম হাসপাতাল বাজার এলাকায় নিরপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

জানা যায়, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মেহেরপুর-২ আসনে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি আমজাদ হোসেনকে দ্বিতীয়বারের মতো মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এতে বর্তমান জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টনের সমর্থক নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। মনোনয়ন ঘোষণার পরপরই সোমবার রাতে গাংনী উপজেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল, টায়ার জ্বালিয়ে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়ক অবরোধ করেন। এসময় তারা মনোনয়নকে অবৈধ, ভুয়া আখ্যায়িত করে নানাভাবে শ্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় সেনাবাহিনীর একটি টিম ঘটনাস্থলে এসে রাস্তা ফাঁকা করে দেয়।

এদিকে মঙ্গলবার সকালে মিল্টনের সমর্থকরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। সমাবেশে গাংনী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলফাজ উদ্দিন কালু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আওয়াল, পৌর বিএনপির সভাপতি মকবুল হোসেন মেঘলা, সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলামসহ তাদের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন ।

পরে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া আমজাদ হোসেন বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী নিয়ে রাস্তায় বের হলে মিল্টনের লোকজন তাদের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। এসময় আমজাদ হেসেনের অফিসের সামনে থাকা ২২ টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। অপরদিকে আমজাদের সমর্থকরা জড়ো হয়ে মিল্টনের লেকজনকে ধাওয়া দেন। তারা মিল্টনের অফিস ভাঙচুর করে এবং চেয়ার টেবিলে বাইরে বের করে এনে আগুন ধরিয়ে দেন। এসময় বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।

মেহেরপুর-২ আসনের বিএনপির দলীয় প্রার্থী আমজাদ হোসেন অভিযোগ করেন, গতকাল মনোনয়ন ঘোষণার পরপরই তারা রাস্তায় নেমে উচ্ছৃংখলতা শুরু করেন। আজ সকালের দিকে আমি কিছু নেতাকর্মী নিয়ে বড়বাজার মসজিদের কাছে পৌঁছানো মাত্রই মিল্টনের লোকজন আমার ওপর হামলা চালায়। ছুঁড়তে থাকে ইট-পাথর। এসময় তাদের ইট-পাটকেলের মুখে একটি মার্কটে আশ্রয় নিই আমিসহ দলীয় লোকজন। এরপর আবারও তারা জড়ো হয়ে আমার অফিস ও নেতাকর্মীদের ওপর দফায় দফায় হামলা চালান। দলীয় কার্যালয়ের সাইনবোর্ড ছিঁড়ে ভেঙে ফেলেন। একই সাথে অফিসের নিচে থাকা সামাদ হোটেলেও ভাঙচুর চালান। খাবার হোটেলে আসা লোকজনের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন।

এ ব্যাপারে জাবেদ মাসুদ মিল্টনের সাথে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে অফিসে বসে কথা বলবো।

গাংনী থানার ওসি বানী ইসরাইল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। গাংনী উপজেলা শহরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।