টঙ্গীর অগ্নিকাণ্ডে আহত ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর নাঈমের মৃত্যু

সোমবার টঙ্গীর সাহারা মার্কেটের একটি কেমিক্যাল কারখানায় আগুন নিয়ন্ত্রণে গিয়ে তিনি গুরুতর দগ্ধ হন। তার শরীরের ৪২ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।

নিজস্ব প্রতিবেদক
খন্দকার জান্নাতুল নাঈম (৩৭)
খন্দকার জান্নাতুল নাঈম (৩৭) |সংগৃহীত

গাজীপুরের টঙ্গীতে কেমিক্যাল কারখানায় ভয়াবহ আগুনে দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর (অফিসার) খন্দকার জান্নাতুল নাঈম (৩৭) মৃত্যুবরণ করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

আজ শনিবার সকাল ১০টায় রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

এর আগে, সোমবার টঙ্গীর সাহারা মার্কেটের একটি কেমিক্যাল কারখানায় আগুন নিয়ন্ত্রণে গিয়ে তিনি গুরুতর দগ্ধ হন। তার শরীরের ৪২ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।

ওই ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের চারজন সদস্য আহত হন, যাদের মধ্যে ইতোমধ্যে তিনজন মৃত্যুবরণ করেছেন। মঙ্গলবার ফায়ারফাইটার শামীম আহমেদ এবং বুধবার ফায়ারফাইটার নুরুল হুদা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। সর্বশেষ এই গৌরবময় আত্মত্যাগের মিছিলে যুক্ত হলেন ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর জান্নাতুল নাঈম।

খন্দকার জান্নাতুল নাঈম ১৯৮৮ সালের ২৪ আগস্ট শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার গড়দুয়ারা ইউনিয়নের খন্দকার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। মোল্লার টেক উদয়ন বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ফুলপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করার পর তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট তিনি বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে যোগদান করেন। কর্মজীবনে স্টেশন অফিসার হিসেবে মানিকগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ ফায়ার স্টেশনে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে পদোন্নতি পেয়ে ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর হিসেবে চট্টগ্রাম এবং সর্বশেষ টঙ্গী ফায়ার স্টেশনে কর্মরত ছিলেন।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত ছিলেন এবং এক সন্তানের জনক। তার পিতা খন্দকার মোজাম্মেল হক এবং মাতা দেলোয়ারা বেগম।

ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা অগ্নি দুর্ঘটনার ঝুঁকিপূর্ণ মিশনে সর্বদা জীবনবাজি রেখে দায়িত্ব পালন করেন। এ পর্যন্ত ৫১ জন সদস্য কর্তব্যরত অবস্থায় প্রাণ উৎসর্গ করেছেন। তাদের সর্বশেষ সহযাত্রী হলেন খন্দকার জান্নাতুল নাঈম একজন সাহসী, নিবেদিতপ্রাণ কর্মকর্তা, যিনি দেশের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন।