২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ভোট কারচুপি খতিয়ে দেখতে বলায় শীর্ষ কর্মকর্তার পদত্যাগ নিয়ে বিতর্ক

- সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের অনিয়ম অভিযোগের জেরে পদত্যাগ করেছেন দেশটির বিচার বিভাগের শীর্ষ নির্বাচন অপরাধবিষয়ক প্রসিকিউটর রিচার্ড পিলগার। অঙ্গরাজ্যগুলোতে চূড়ান্ত ফল ঘোষণার আগে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা উচিত বলে ফেডারেল প্রসিকিউটরদের বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার। তার এই মন্তব্যের জের ধরেই পদত্যাগ করেন প্রসিকিউটর রিচার্ড পিলগার। সোমবার তিনি পদত্যাগ করেন। এদিকে রিচার্ড পিলগারের পদত্যাগ নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।

অবশ্য পদত্যাগ করলেও, রিচার্ড পিলগার বিচার বিভাগের অন্য পদে থাকতে চান কি না সে বিষয়ে পরিষ্কার করে কিছু বলেননি তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাইডেনের কাছে ব্যাপক ব্যবধানে হারের পরই ভোট চুরির অভিযোগ তুলে আসছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সেই অভিযোগের তদন্ত করতে পিলগারকে চাপ দিচ্ছিলেন মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার। এ ব্যাপারে নির্দেশিকা জারি করে তিনি সব প্রাদেশিক অ্যাটর্নিদের খোলাখুলি তদন্তের নির্দেশ দেন। কিন্তু ডিওজে–র দীর্ঘদিনের নিয়মাবলী অনুযায়ী, ভোটে মাথা গলাতে পারবে না দফতর। সেই নীতির তোয়াক্কা না করে উইলিয়াম বার তদন্তের নির্দেশ দেন। যার বিরোধিতা করেন পিলগার। এবং বারের তরফ থেকে আসা চাপ সহ্য করতে না পেরে, তার নির্দেশিকা জারির কয়েক ঘণ্টা পরই ইমেইল করে নিজের পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন পিলগার।

পদত্যাগপত্রে পিলগার তার সহকর্মীদের লিখেছেন, ভোটে কারচুপির তদন্তের ক্ষেত্রে ডিওজে–র মাথা না গলানোর যে ৪০ বছরের পুরনো নীতি ছিল, সেটা তুলে দিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল সম্পূর্ণ নতুন একটি নীতির প্রণয়ন করেছেন। যা তিনি মানতে পারছেন না বলেই এই পদত্যাগ। তবে বিচার বিভাগের অন্য কোনো পদে তিনি থাকবেন কি না তা পদত্যাগপত্রে পরিষ্কার করেননি পিলগার।

মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বারের দেয়া নির্দেশনায় তদন্তের ক্ষেত্রে আইনজীবীদের সেই ক্ষমতা দেয়া আছে, যাতে তারা সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করার মতো পদক্ষেপও নিতে পারেন। এর আগে এধরনের কাজে বিচার বিভাগের নির্বাচনী অনিয়মের তদন্তকারী দফতরের অনুমতি লাগত। উইলিয়াম বার যদিও একবারের জন্যও তার নির্দেশনায় এই ইঙ্গিত দেননি যে, বিচার বিভাগ ট্রাম্পের ভোটে কারচুপির দাবির সমর্থনে কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ পেয়েছে।

বার নির্দেশিকায় বলেছেন, বেশিরভাগ অভিযোগই এমন যে- সেগুলো ভোটের ফলে কোনো প্রভাব নাও ফেলতে পারে। এবং বিচার বিভাগের নেয়া কোনো পদক্ষেপ নির্বাচনে উল্টো প্রভাব ফেলবে তার সম্ভাবনাও খুব কম। ট্রাম্পের ভোট কারচুপির অভিযোগের সমর্থক বারের এই নির্দেশনা এমন সময় করা হল, যখন নির্বাচনে বিজয়ী জো বাইডেন শিবির দায়িত্ব নিতে উদ্যোগী হচ্ছে এবং ট্রাম্প শিবির তা ছাড়তে নারাজ।‌

অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার সোমবার নির্দেশিকা জারি করেন। তাকে ওই নির্দেশিকা জারির কথা কেউ বলেননি বলে জানিয়েছেন বিচার বিভাগের এক কর্মকর্তা। বার সোমবারের নির্দেশিকায় বলেছেন, ভোটে কারচুপির যে অভিযোগ উঠেছে প্রদেশগুলোতে সেগুলো তদন্তের অধিকার প্রাদেশিক অ্যাটর্নিদের তিনি দিচ্ছেন।

সেই সঙ্গে বার এটাও উল্লেখ করেছেন যে, ভোট কারচুপির অভিযোগ যেমন খুব সন্তর্পণে তদন্ত করতে হবে। তেমনই এটাও খেয়াল রাখতে হবে, কাল্পনিক দাবি বা অভিযোগ যেন তদন্তের মূল না হয়ে দাঁড়ায়।

যদিও নির্দেশিকার উদ্দেশ্য অস্পষ্ট। কারণ অ্যাটর্নিরা আগে থেকেই জানেন ভোটে কারচুপির অভিযোগের তদন্তে তাদের কী দায়িত্ব রয়েছে। কিন্তু এই নির্দেশিকা অন্তত প্রেসিডেন্টকে ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, বার এবং বিচার বিভাগ সেই প্রমাণ খোঁজার চেষ্টা করছে যা ট্রাম্প শিবির এখনো পর্যন্ত দিয়ে উঠতে পারেনি।


আরো সংবাদ



premium cement