ট্রাম্পের অভিবাসন বিরোধী আইন কংগ্রেসে অনুমোদন, গ্রেফতার ৪ বাংলাদেশী
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩:৪৯
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত অবৈধ অভিবাসন বিরোধী আইনে অনুমোদন দিয়েছে রিপাবলিকান নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস। সন্দেহভাজন বিদেশী অপরাধীদের বিচার পূর্ব কারাবাসের মেয়াদ বাড়ানোর একটি বিলও কংগ্রেস অনুমোদন করেছে। কংগ্রেসের অনুমোদন লাভের পর সিনেটে ৬৫-৪৫ ভোটে অবৈধ অভিবাসন বিরোধী আইনটি সহজেই পাশ হয়।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি আজ এই খবর জানিয়েছে।
এদিকে দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কংগ্রেসের অনুমোদন লাভের পর অবৈধ অভিবাসী বিরোধী ব্যাপক ধরপাকড় অভিযান শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে চার বাংলাদেশীসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত কারো কাছেই বৈধ কাগজপত্র ছিল না। এদের মধ্যে একজন অ্যাথেন্সের ও অন্যজন ভেনেজুয়েলার নাগরিক। তারা দু’জনই খুনের মামলার আসামি।
প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মাইক জনসন এক এক্স বার্তায় বলেছেন, ‘অবৈধ অভিবাসীদের অবশ্যই আটক করা হবে এবং তাদের কখনো আমাদের দেশে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।’
তিনি বলেছেন, ‘আমেরিকানরা নিরাপত্তা দাবি করে এবং নিরাপত্তা দাবির অধিকারও তাদের রয়েছে।’
নিউইয়র্কের ব্রুকলিন বরোর ফুলটন এলাকা থেকে চার বাংলাদেশীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিবাসী ধরপাকড়ে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হবে স্কুল-গির্জা-হাসপাতালেও। সংবেদনশীল এই স্থানগুলোতে অভিবাসী আটক কার্যক্রমের ওপর থেকে এক দশকের বেশি সময়ের নিষেধাজ্ঞা বাতিল করে ট্রাম্প প্রশাসন। এতে সেসব স্থানে ধরপাকড়ে আর কোনো বাধা নেই। এই সিদ্ধান্তে আতঙ্কিত অভিবাসীরা।
প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কাল বিলম্ব করেননি নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শপথ নিয়েই শক্ত হাতে অবৈধ অভিবাসী দমন শুরু করেছেন তিনি। ধরপাকড় শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নানা অঙ্গরাজ্যে। গ্রেফতার করা হয়েছে বেশ কয়েকজনকে। এর মধ্যে চার বাংলাদেশীও রয়েছেন ।
নিউইয়র্কের ব্রুকলিন বরোর ফুলটন এলাকা থেকে ওই চার বাংলাদেশীকে গ্রেফতার করে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস ইনফোর্সমেন্ট-আইস।
জানা গেছে, পরিচয়পত্র দেখাতে অস্বীকৃতি জানানোয় তাদের গ্রেফতার করে সাদা পোশাকের পুলিশ। এ ঘটনার পর বাঙালি অধ্যুষিত এলাকার সড়ক ও রেস্তোরাঁয় লোকজনের ভিড় নেই বললেই চলে। চরম আতঙ্কে বৈধ কাগজপত্রবিহীন অভিবাসীরা।
এদিকে এখন থেকে স্কুল, গির্জা এমনকি হাসপাতালগুলোতেও অভিবাসীদের গ্রেফতার করতে পারবে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। আইস এবং কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রটেকশন সংস্থাগুলোর ওপর গেলো এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এসব স্থানে অভিযান পরিচালনায় নিষেধাজ্ঞা ছিল।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটির পক্ষ থেকে এই নিষেধাজ্ঞা বাতিল করাসহ জারি করা হয় নতুন নির্দেশনা। এতে বলা হয়, স্পর্শকাতর স্থানগুলোতে যাতে কেউ লুকিয়ে না থাকতে পারে তাই এই নিষেধাজ্ঞা বাতিল করা হয়।
অপর নির্দেশনায় বলা হয়, বৈধ কাগজপত্র না থাকা কেউ গ্রেফতার হলে সেই ব্যক্তি যদি যুক্তরাষ্ট্রে দুই বছরের বেশি সময় ধরে তার অবস্থান করার প্রমাণ করতে ব্যর্থ হন, তাহলে তাকে দ্রুতই দেশ থেকে বের করে দিতে পারবে কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, স্পর্শকাতর স্থানগুলোতে গ্রেফতারের অনুমতি দেয়ার ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে বলে সতর্ক করেছেন আইনজীবীরা। সেন্টার ফর ল অ্যান্ড সোশ্যাল পলিসি এক বিবৃতিতে জানায়, এই পদক্ষেপের কারণে অভিবাসীদের পরিবার ও তাদের সন্তানের পাশাপাশি মার্কিন শিশুরাও মারাত্মক মানসিক চাপের সম্মুখীন হতে পারে।
এছাড়া, এর মধ্যেই মেক্সিকো সীমান্তে জারি করা হয়েছে জরুরি অবস্থা। নিশ্চিত করা হয়েছে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এই আদেশের আওতায় অভিবাসীদের বৈধতা দেয়ার একটি প্রকল্পও বন্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তরক্ষীরা।
সূত্র : এএফপি