ব্রেক্সিট ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পেছাতে সম্মত ইইউ
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৯ অক্টোবর ২০১৯, ০৯:৩৮, আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৯, ০৯:৪৭
অনেক তর্ক-বিতর্কের পর অবশেষে আগামী বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ব্রেক্সিট পেছানোর ব্যাপারে সম্মত হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সম্মেলনের এই সিদ্ধান্তের ফলে ব্রেক্সিট চূড়ান্ত করতে ব্রিটেন আরো তিন মাস সময় পেল। ব্রিটেনের একটি ‘ফ্লেক্সটেনশন’ অর্থাৎ বেক্সিট নিয়ে ব্রিটেনের পার্লামেন্টে যে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, সেটি দূর করার জন্য প্রক্রিয়াটির বিলম্বে সম্মত হয়েছে ইইউ। তবে এর ভেতরে তাদের (ব্রিটেন) অচলাবস্থা কেটে গেলে তারা বেরিয়ে যেতে পারে ইইউ থেকে।
সোমবার দুপুরে এক টুইট বার্তায় ইইউ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক জানিয়েছেন, ব্রেক্সিট বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছার জন্য আগামী ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে রাজি হয়েছে ইইউ। যদি নির্ধারিত সময়ের আগে ব্রিটেনের পার্লামেন্ট ব্রেক্সিট ইস্যুতে সর্বসম্মতিক্রমে কোনো চুক্তি অনুমোদনে সমর্থ হয়, তবে তারা চাইলে ৩১ জানুয়ারির আগেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করতে পারবে। এখন লন্ডনকে পরবর্তী ইউরোপীয় কমিশনে দায়িত্ব পালনের জন্য একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে মনোনীত করতে হবে। ইইউর বিবৃতি অনুসারে, গত মাসে প্রত্যাহারকৃত চুক্তিটি পুনর্বহাল হবে না বলেও সম্মতি দিতে হবে। ইইউ থেকে ব্রিটেনের বিদায় নেয়ার বিষয়ে ২০১৬ সালের গণভোটের পরে দ্বিতীয়বারের মতো ব্রেক্সিটের সময়সীমা পরিবর্তন করা হলো। ইইউর আলোচক মিশেল বার্নিয়ার গতকাল সোমবার বলেছেন, এটি একটি স্বল্পকালীন, কার্যকর ও গঠনমূলক সভা হয়েছে। সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছি বলে আমি খুব খুশি।
আগামী ১২ ডিসেম্বর ব্রিটেনের পার্লামেন্ট সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের দেয়া প্রস্তাবগুলোর পক্ষে-বিপক্ষে ভোট দেবেন। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের এই সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন ব্রেক্সিট চুক্তি আগামী বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পেছাতে রাজি হয়েছে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭ জন প্রতিনিধির নেয়া সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ইউনিয়ন থেকে একবার বেরিয়ে যাওয়ার পর ব্রিটেন ভবিষ্যতে ফের কখনো এই ব্লকে ফিরতে পারবে না। আগামী বৃহস্পতিবার দেশটির ইউনিয়ন ত্যাগ করার কথা ছিল; কিন্তু ব্রেক্সিট ইস্যুতে একটি চুক্তি অনুমোদনে সর্বসম্মতি আদায়ে ব্যর্থ হয় ব্রিটিশ পার্লামেন্ট। তাই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের জন্য চুক্তি পেছানোর ব্যাপারে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে অনুরোধ জানানো প্রয়োজন হয়ে পড়ে। ব্রিটিশ আইনপ্রণেতাদের চাপের মুখে পড়ে বাধ্য হয়ে ইইউয়ে ব্রেক্সিট পেছানোর আবেদন করেছিলেন জনসন। তবে বরিস বরাবরই বলে আসছিলেন, ৩১ অক্টোবর যেভাবেই হোক তিনি ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসবেন; কিন্তু ব্রিটিশ আইন অনুযায়ী, এ ক্ষেত্রে তাকে পার্লামেন্টের সম্মতি অর্জন করতে হবে। ফলে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
দীর্ঘ দিন ধরেই ব্রেক্সিট ইস্যুতে ব্রিটেনের রাজনীতিতে টালমাটাল অবস্থা তৈরি হয়েছে। ব্রেক্সিট চুক্তি কার্যকরে ব্যর্থ হওয়ার পর চলতি বছর দেশটির প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে পদত্যাগ করেন। এরপর নতুন করে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব আসে বরিস জনসনের কাঁধে। পূর্বসূরিদের মতো বরিস জনসনও এই চুক্তি কার্যকরে বারবার হোঁচট খাচ্ছেন। চলতি মাসের শুরুর দিকে ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে বরিসের একটি পরিকল্পনা প্রস্তাব পার্লামেন্টে আটেক যায়। দেশটিতে আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন পার্লামেন্টের সদস্যরা। আগামী ১২ ডিসেম্বর দেশটিতে আগাম নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নির্ধারণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস। সূত্র : এএফপি, রয়টার্স ও বিবিসি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা