২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

আরো ঘনিষ্ঠ হচ্ছে রাশিয়া ও তুরস্কের প্রতিরক্ষা সম্পর্ক

আরো ঘনিষ্ঠ হচ্ছে রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যের প্রতিরক্ষা সম্পর্ক। - ছবি : সংগৃহীত

আরো ঘনিষ্ঠ হচ্ছে রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যের প্রতিরক্ষা সম্পর্ক। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়ের এরদোগান প্রতিরক্ষা শিল্পের সহযোগিতার সম্ভাব্য সম্প্রসারণ সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে দেশ দু’টির মতভেদের মধ্যেই এই আলোচনা হলো। 
গত এপ্রিলের শেষের দিক থেকে মস্কো সমর্থিত সরকার সেখানে আক্রমণ চালিয়ে আসছে। গত মঙ্গলবার দুই নেতার মধ্যে বৈঠক হয়। এর এক দিন আগে আঙ্কারা বলেছিল, সিরিয়ায় তাদের একটি পর্যবেক্ষণ পোস্ট ঘিরে রেখে সরকারি বাহিনী আক্রমণ করেছে। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন এরদোগান। তুরস্ক ও রাশিয়ার মধ্যে যে শান্তির সৃষ্টি হয়েছে তা বিঘিœত করছিল ইদলিব। গত বছরই ইদলিবে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান না চালানোর বিষয়ে একমত হয়েছিলেন দুই নেতা।

এরদোগান বলেছিলেন, সিরীয় সেনাবাহিনী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ভান করে আকাশ ও ভূমি থেকে বেসামরিকদের ওপর বৃষ্টির মতো যে গোলা নিক্ষেপ করছে তা মেনে নেয়া যায় না। আমরা এটি চালিয়ে যেতে দিতে চাই না। প্রয়োজনে সব পদক্ষেপ নেয়া হবে। ইদলিবে পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে উঠেছে যে, এই মুহূর্তে আমাদের সেনারা বিপদে পড়েছে। তার পরে পুতিন বলেছিলেন, দুই নেতা ইদলিবের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য অতিরিক্ত যৌথ পদক্ষেপ নিয়ে একমত হয়েছেন। তবে কোনো বিবরণ দেননি। তিনি আরো বলেছিলেন, ইদলিব ডি-এস্কেলেশন জোনের পরিস্থিতি আমাদের এবং তুর্কি অংশীদারদের জন্য গুরুতর উদ্বেগের বিষয়। আঙ্কারাকে আক্রমণ বন্ধের জন্য বলেছিলেন পুতিন। তিনি আরো বলেন, মস্কো চায়নি এই অঞ্চল বিদ্রোহীদের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠুক। সিরিয়া নিয়ে এই মতপার্থক্য সত্ত্বেও দুই নেতা ঘন ঘন বৈঠক করছেন। তারা এরই মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার নিবিড় সম্পর্ক স্থাপনও করেছেন।

রাশিয়ার স্টেলথ যুদ্ধবিমান কিনবে তুরস্ক
রাশিয়ার নির্মিত এসইউ-৫৭ ও এসইউ-৩৫ সামরিক বিমান তুরস্কের কাছে সম্ভাব্য হস্তান্তর নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে। বুধবার রুশ কর্মকর্তাদের বরাতে সংবাদ সংস্থা আরআইএ এমন খবর দিয়েছে।

রুশ কেন্দ্রীয় সামরিক কৌশলগত সহযোগিতার প্রধান দিমিত্রি শুগায়েভ বলেন, এ নিয়ে তুরস্ক আগ্রহ দেখিয়েছে। এখনো কোনো আবেদন করা হয়নি। তার আগেই চুক্তি নিয়ে আলোচনা হতে যাচ্ছে। এর আগে গত মঙ্গলবার রুশ-তুর্কি বিকশিত হতে যাওয়া সামরিক সম্পর্কের মধ্যেই প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের আমন্ত্রণে রাশিয়ার বার্ষিক বিমান প্রদর্শনীর উদ্বোধনীতে অংশ নিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তইয়ব এরদোগান। এ সময় রাশিয়ার সাম্প্রতিক নির্মিত যুদ্ধবিমান ক্রয়ের ক্ষেত্রে তিনি আগ্রহ দেখিয়েছেন।
ন্যাটো সদস্য তুরস্ক গত মাস থেকে রুশ এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে শুরু করেছে। এরদোগান সরকারকে এই চুক্তি বাতিল করতে ব্যাপক চাপ দিয়ে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র। এতে রাশিয়া গোয়েন্দা সহায়তা পাবে অজুহাত দেখিয়ে মার্কিন নির্মিত যুদ্ধবিমান কর্মসূচি থেকে বের করে দেয়ার হুঁশিয়ারি দেয়া হয় তুরস্ককে। কিন্তু উচ্চ-প্রযুক্তির এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কর্মসূচি থেকে তুরস্ককে বাদ দিলেও রাশিয়ার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার মনোভাবে কোনো পরিবর্তন আনেননি এরদোগান। বরং রাশিয়ার কাছ থেকে এসইউ-৩৫ যুদ্ধবিমান কেনার পরিকল্পনার কথা মাথায় নেই তুর্কি কর্তৃপক্ষের।

তুরস্কে পৌঁছেছে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্রের দ্বিতীয় চালান
রাশিয়া থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দ্বিতীয় চালান তুরস্কে পৌঁছেছে। গত মঙ্গলবার রাজধানী আঙ্কারার কাছে মূর্তেদ বিমান ঘাঁটিতে এস-৪০০-এর চালান নিয়ে অবতরণ করে রাশিয়ার সামরিক পরিবহন। তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। পার্স টুডে এখবর জানিয়েছে। 
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রথম চালান তুরস্কে পৌঁছেছে গত ২ থেকে ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে। এবার দ্বিতীয় চালান এসে পৌঁছাল। এ চালানে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার যাবতীয় উপকরণ তুরস্কে এসে পৌঁছাতে প্রায় মাসখানেক সময় লাগতে পারে।

সূত্র : আলজাজিরা


আরো সংবাদ



premium cement