২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ইরানকে নিয়ে কুর্দিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু তুরস্কের

কুর্দিদের বিরুদ্ধে তুরস্কের সামরিক অভিযান - ফাইল ছবি

তুরস্কের পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তে কুর্দি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করেছে তুরস্ক ও ইরান। সোমবার তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সোলাইমান সোইলু এই ঘোষণা দেন।

তুর্কি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সোলাইমান সোইলু বলেন, অবৈধ কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে) বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে সোমবার এই সামরিক অভিযান শুরু হয়।

সোমবার ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী শহর আনাতোলিয়ায় এক সমাবেশে তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,‘সোমবার সকাল ৮টায় ইরানকে সাথে নিয়ে আমাদের পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তে পিকেকে’র বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করেছে তুরস্ক। এই অভিযানের ফলাফল আমরা পরে ঘোষণা করবো।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সোইলু এই অভিযানের ব্যাপারে প্রথম মুখ খুললেও তিনি বিস্তারিত আর কিছু বলেননি।

অবশ্য, ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ ভিন্ন কথা বলছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ইরানের সামরিক বাহিনীর একটি সূত্রের বরাত দিয়ে সংস্থাটি বলছে, তেহরান এই সামরিক অভিযানে অংশ নেয়নি।

উল্লেখ্য, আঙ্কারা পিকেকে’কে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে। অন্যদিকে কুর্দিদের স্বায়ত্তশাসন দেয়ার ব্যাপারে তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে তুরস্কের প্রতি দাবি জানিয়ে আসছে পশ্চিমা দেশগুলো। তুরস্ক সরকার ও কুর্দিদের মধ্যকার দ্বন্দ্বে এখন পর্যন্ত কয়েক লাখ মানুষ নিহত হয়েছে।

তুরস্ক ও উত্তরাঞ্চলীয় ইরাকে কুর্দিরা পিকেকে নামেই কার্যক্রম পরিচালনা করে। অন্যদিকে সরিয়িায় কুর্দিদের সংগঠনের নাম পিপলস প্রটেকশন ইউনিট (ওয়াইপিজি)। পাশাপাশি কুর্দিস্তান ফ্রি লাইফ পার্টি (পিজেএকে) নামক সংগঠনের নামে কুর্দিরা ২০০৪ সাল থেকে ইরানের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে।

এর আগে তুরস্ক ও পিকেকে’র মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরু হলেও ২০১৫ সালে তা ভেস্তে যায়। এরপর থেকেই এই কুর্দিদের বিরুদ্ধে স্থল ও বিমান হামলা জোরদার করে তুরস্ক। তুরস্ক কেবল নিজেদের সীমান্তের মধ্যেই নয়, উত্তর ইরাকে অবস্থানরত কুর্দি বিদ্রোহী ও স্থপনাতেও হামলা চালিয়ে আসছে। কুর্দিদের প্রধান ঘাঁটি ইরাকের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত। সূত্র : আলজাজিরা।

আরো পড়ুন : কুর্দি ইস্যুতে মুখোমুখি যুক্তরাষ্ট্র-তুরস্ক
নয়া দিগন্ত অনলাইন, (১৪ জানুয়ারি ২০১৯)

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আঙ্কারাকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর কুর্দিদের আক্রমণ করা হলে তুরস্কের অর্থনীতি ধ্বংস করে দেয়া হবে। এক টুইটবার্তায় রোববার ডোনাল্ড ট্রাম্প এ বলেন।

ট্রাম্প বলেন, কুর্দিদের আক্রমণ করা হলে তুরস্কের অর্থনীতি ধ্বংস করে দেয়া হবে। যখন ২০ মাইল নিরাপত্তা অঞ্চল তৈরি নিয়ে দাবি উঠেছে, তখনই এমন হুশিয়ারি দিলেন ট্রাম্প। তবে ট্রাম্প নিরাপত্তা অঞ্চলের বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন।

এদিকে তুরস্ককে উত্তেজিত না করতে কুর্দিদের প্রতি আহ্বান জানান ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, তুরস্ককে উত্তেজিত করা যাবে না।

ট্রাম্প বলেন, সিরিয়া থেকে উগ্রপন্থী আইএস যোদ্ধাদের ধ্বংস করার মার্কিন নীতিতে রাশিয়া, ইরান ও সিরিয়া বড় ধরনের লাভবান হয়েছে। আমরাও লাভবান হয়েছি, আমাদের সেনা দেশে ফিরিয়ে এনে। এরপর তিনি টুইটে লেখেন- ‘শেষ যুদ্ধ বন্ধ করুন’।

এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন এক টুইটবার্তায় বলেন, সিরিয়ান কুর্দিদের সাথে পিকেকে’কে মিলিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প সমীকরণে বড় ধরনের ভুল করেছেন। এই সংগঠনটি যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসী তালিকায় রয়েছে এবং এর শাখা পিওয়াইডি/ওয়াইপিজে।

ট্রাম্পের উদ্দেশে ইব্রাহিম কালিন বলেন, সন্ত্রাসী আপনার মিত্র ও অংশীদার হতে পারে না। তুরস্ক আশা করছে- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের কৌশলগত অংশীদার এবং সন্ত্রাসী প্রচারণার ছায়া হতে পারে না।

এদিকে সিরিয়া সীমান্তে নতুন করে আরও সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম বৃদ্ধি করেছে তুরস্ক।


আরো সংবাদ



premium cement