ওর জন্য
- পাভেল হোসাইন ইমরান
- ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০
ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখি আমার বন্ধুরা ক্যাফেটেরিয়ায় বসে ধুমিয়ে আড্ডা দিচ্ছে। আমিও ওদের সাথে বসে পড়লাম। আড্ডাটা আরো জমানোর জন্য ওদের উদ্দেশ করে বললাম, দোস্ত তোদের জোকস শুনাই। আমার প্রস্তাব শুনে একজন তো সোজা উঠে চলে গেল। আরেকজন বলেই বসল, ভাই মাফ কর।
এমন অপমানে আমি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম। একবার এর দিকে আরেকবার ওর দিকে তাকাচ্ছিলাম। আমার বন্ধুরা আমাকে এভাবে অপমান করবে তা আমি ভাবতেও পারিনি। অপমানটা একদমই হজম হচ্ছিল না।
ঠিক ওই মুহূর্তে আমার আরেক বন্ধু দৌড়ে এসে বলল, মামা কলেজে তো বিশাল সিনেমা চলছে।
আমি সুযোগ বুঝে পাঞ্চ লাইন মেরে দিলাম, নায়কটা বুঝি জনি সিন্স?
কেউ আমার কথার ভ্যালু দিলো না। আমাকে তুচ্ছ করে সেই বন্ধুটিকে প্রশ্ন করল, কী হইছে? ক্লিয়ার করে বল। বন্ধুটি জবাব দিলো, তোরা আয় আমার সাথে। গেলেই দেখতে পারবি কী ঘটেছে।
সবাই তড়িঘড়ি-পড়িমরি করে ছুটলাম সেই বন্ধুর পেছনে। বন্ধু আমাদের বটতলায় নিয়ে এলো। সেখানে গিয়ে যা দেখলাম তাতে তো আমরা সবাই শকড!
আমাদের ডিপার্টমেন্টের গুটিকয়েক মেয়ে সারি বেঁধে বসে বসে কাঁদছে। সবাই আগ্রহ নিয়ে তাদের কান্নাকাটি দেখছে। আমার আগ্রহ তাদের কান্নাকাটিতে নয়, বরং আমার আগ্রহ জন্মাল কান্নাকাটি করার কারণটার প্রতি। আমি আর সবার মতো দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না। সোজা চলে গেলাম মেয়েদের কাছে।
Ñ এই রিয়া, তুই কাঁদছিস কেন?
Ñ মিতুর কান্না আমার সহ্য হয়নি। ওর জন্য আমিও কাঁদছি।
Ñ এই মিতু তুই কাঁদছিস কেন?
Ñ অণুকে দেখ। এত গোল্টুস একটা মেয়ের কান্না দেখে তুই না কেঁদে থাকতে পারবি?
Ñ অণু তুই কাঁদছিস কেন?
Ñ মিথিলার জন্য।
যাকেই জিজ্ঞেস করি, কেন কাঁদছিস? সবাই একই উত্তর দেয় পাশের জনের জন্য। শুধু শেষ মেয়েটার আগের মেয়েটা ভিন্ন উত্তর দিলো।
Ñ শশী তুই কাঁদছিস কেন?
Ñ ইমা গতকাল ছ্যাঁকা খেয়েছে। তাকিয়ে দেখ মেয়েটা শোকে পাথর হয়ে গেছে। কাঁদতেও পারছে না। তাই ওর হয়ে আমি কেঁদে দিচ্ছি। দেখ দেখ এখন আবার ও ফিট হয়ে পড়ে গেল। ভাই তুই যা তো। একটু পরে ক্লাস আছে। ক্লাসের আগ পর্যন্ত ওর হয়ে একটু কেঁদে নেই!