২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ভোজনরসিকের পলায়ন

-

আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে এলেই আমার ভয় ধরে যায়। আমার আত্মীয়গুলো একটু অদ্ভুত টাইপের। তারা অতিথির জন্য যাই আয়োজন করে অতিথিকে তাই খেতে হবে। পুরোটুকু খাওয়ার আগ পর্যন্ত কোনো প্রকার বিশ্রাম নেই। খেতে বসলে মনে হয় কোনো ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করেছি। এই তো কয়েক দিন আগে গেলাম মাসুদ ভাইয়ের ভাষায়। আমাকে দেখে তিনি হেসে দিলেন। তার হাসি দেখে আমার কলিজা মোচড় দিয়ে উঠল। জানি না সামনে কি বিভীষিকা অপেক্ষা করছে। হাত মুখ ধুয়ে যখন একটু আয়েশ করতে যাবো, তখনি মাসুদ ভাইয়ের ডাক পড়ল। ডাইনিং টেবিলের একপ্রান্তে মাসুদ ভাই অন্যপ্রান্তে আমি বসে আছি। নাশতার বাটির কারণে একজন আরেকজনের মুখও দেখতে পাচ্ছি না। এত নাশতার কী দরকার ছিলÑ এই টাইপের কথাবার্তা আমি কখনো বলি না। দরকার না থাকলে তারা আয়োজন করত না। নিজেকে নিজেই বলছি। সব নাশতা আমাকে খেতে হবে এমন না, তবে এগুলোর স্বাদ আমাকে নিতে হবে এটা ভেবে ভয়ে আমার শরীর কেঁপে ওঠার কথা। কিন্তু এরকম কিছুই হয় না। বরং আনন্দে আমি মাতোয়ারা। ঠিক কী কারণে আনন্দিত তা বলতে না পারলেও কিছুটা আঁচ করতে পেরেছি। এক এক করে নাশতা গলাধকরণ চলছে। আমি তাকাই মাসুদ ভাইয়ের দিকে, মাসুদ ভাই তাকায় আমার প্লেটের দিকে। তিনি হয়তো এত পারফরম্যান্স আমার কাছে আশা করেননি। যা হোক, তিনি উৎসাহী হয়ে আমার প্লেটে একে একে নানান প্রকারের নাশতা দিতে লাগলেন। আমি তাকে বাধা দিই না। তাকে বাধা দিয়ে কেউ আটকাতে পেরেছে এরকম রেকর্ড নেই। নাশতা মোটামুটি শেষ করে একটু শুয়ে পড়লাম। নিঃশ্বাস নিতে বেশ কষ্ট হচ্ছে। নিঃশ্বাসের সাথে সাথে পেটটাও দারুণ এক খেলায় মেতে উঠল। কী সুন্দর করে একবার উপরে ওঠে আবার নেমে যায়। পেটের খেলা দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পড়লাম।
ঘুম থেকে উঠে দেখি দুপুরের খাবার রেডি। কত রকমের খাবার আমার সামনে। ভোজনরসিক হিসেবে আমার তেমন নাম নেই। নামটা নেই কেন তা নিয়ে আমার অনেক আফসোস। মাসুদ ভাই আমাকে আপ্যায়ন করছেন। এখান থেকে একটু নেন এ কথা বলে সব তরকারি দিয়ে আমার প্লেট ঢেকে দিয়েছে। সারা প্লেটে তরকারি আর তরকারি। ভাত খুঁজে পাওয়া মুশকিল। আমি একটা একটা করে হাপুস হুপুস করে খেতে লাগলাম। একটু খালি হলেই মাসুদ ভাই সে খালি স্থান পূরণ করেন। খেতে খেতে আমি হাঁপিয়ে উঠেছি। মুখ দিয়ে আর কথা বের হচ্ছে না। চিবাতে চিবাতে আমার প্রাণ ওষ্ঠাগত। তার পরও আমি হাল ছেড়ে দিইনি। একটা পর্যায়ে এসে থেমে যেতে হলো। খাওয়া শেষে বড় বড় নিঃশ্বাসে সময় কাটতে লাগল। নিঃশ্বাস ঠিকমতো ডেলিভারি হচ্ছে না। কোথাও বাধা খাচ্ছে। সম্ভবত বমিও আসবে। এই সম্ভবত চিন্তার আগেই নিজের গায়েই নিজে বমি করে দিলাম। কী দরকার ছিল এত কষ্ট করে খাওয়ার।
দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলো। আমি পুরো সর্বস্বান্ত হয়ে গেলাম। মুখ দিয়ে কোনো রকম নিঃশ্বাস নিচ্ছি। অযথাই খাবার নষ্ট করলাম এটা ভেবে আরো কষ্ট পেলাম। এদিকে মাসুদ ভাই বিকেলের নাশতা রেডি করছিলেন। সে ধীরপায়ে নাশতা নিয়ে আমার দিকে এগিয়ে আসছেন। আমার মনে হলো আমাকে গলাটিপে ধরতে আসছেন। আমি তাড়াহুড়ো করে দরজা দিয়ে দিলাম দৌড়। আমাকে আর পায় কোথায়। আমি আসার পর অনেক কথার প্রচলন হয়। খাবারের ভয়ে অতিথি পালিয়ে গেল এরকম টাইপের একটা কথাও ভাইরাল হয়।


আরো সংবাদ



premium cement
নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা, অন্যদের কথা ব্যক্তিগত : প্রেস উইং সালাহর জোড়া গোলে জিতল লিভারপুল ১০ সাংবাদিকসহ ১১ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ৬ দফা মেনে নেয়ার আহবান হাসিনা-কন্যা পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক লেনদেন স্থগিত বুটেক্স-পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হবে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে : প্রেস উইং ব্যর্থ টপ অর্ডার, মুমিনুলের ফিফটির পর পথ দেখাচ্ছেন লিটন তেজগাঁওয়ে বুটেক্স ও ঢাকা পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ বেলজিয়ামের উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ বাড়ছে এসডিজি কার্যক্রমে যুক্ত হচ্ছে ড. ইউনূসের ‘থ্রি জিরো তত্ত্ব’

সকল