২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ডলার

-

আব্বা একখানা কচকচে ৫০০ টাকার নোট হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললেন, ‘এই টাকায় ঈদের কেনাকাটা করবি।’
আব্বার এহেন কাণ্ডে আমি আকাশ থেকে পড়লাম। মাত্র ৫০০ টাকা! ৫০০ টাকায় কী হবে? বাজারে যে পাঞ্জাবিটা চয়েজ করে রেখেছি, সেটার দামই তো ১২০০ টাকা। কিন্তু ৫০০ টাকায় কী হবে আমার? আব্বা কেন বোঝেন না! ইচ্ছা হলো তার টাকা তাকেই ফেরত দেই। কিন্তু অসভ্যের মতো এই কাজ করলে আব্বা যে আমায় এক কিল মেরে তার নাম ভুলিয়ে দেবেন, এ আমি নিশ্চিত।
অবশেষে ১২০০ টাকার চয়েজ করা প্রিয় পাঞ্জাবিটা আমার কেনা হচ্ছে না ভেবে মন খারাপ হলো। মন খারাপ নিয়ে রাস্তায় বের হলাম। পকেটে আব্বার দেয়া ৫০০ টাকা। এলোমেলো হাঁটছি। হঠাৎ একটা টোকাই ছেলে আমার পাশে এসে দাঁড়ায়। ছেলেটার হাতে টাকা না কী যেন দেখা যাচ্ছে। ভালো করে চেয়ে দেখি টাকাই তো। ১০০ টাকার নোট। আরে, এ তো আমাদের দেশী টাকা নয়। বিদেশী টাকা। ডলার মনে হয়! হ্যাঁ, ডলারই তো।
‘খোকা, তোমার হাতে এই টাকা?’
‘রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়েছি।’
‘কত টাকা দেখি।’
হাতে নিয়ে দেখি সেটি ১০০ টাকার নোট। টাকা নয়, ডলার। আমেরিকান ডলার। এই ডলার ভাঙালে সাড়ে আট হাজার টাকা হবে। আহারে, কার ১০০ ডলার রাস্তায় পড়ে গেছে। টোকাই ছেলেটা কুড়িয়ে পেয়েছে।
হঠাৎ এই ডলারের লোভ হলো আমার। ছেলেটার কাছে চাইতেই সে দেবে না বলে গর্জে উঠল। শেষে আমার পকেটের ৫০০ টাকা বের করে বললাম, ‘তুমি এই ৫০০ টাকা নিয়ে তোমার এই ১০০ টাকা আমাকে দেবে?’
আনন্দে ছেলেটার চোখ চকচক করে উঠল। উচ্ছ্বাসে বলল, ‘১০০ টাকার বদলে ৫০০ টাকা? দেন দেন!’
৫০০ টাকার নোট পেয়ে সে খুশিতে নাচতে নাচতে চলে গেল। সে তো জানে না এর আসল ঘটনা। এই ১০০ ডলার ভাঙিয়ে আমি সাড়ে আট হাজার টাকার মালিক হবো। রওনা দিলাম গঞ্জের হাঁটে। ইসমাইল নামে একজনের সাথে আমার পরিচয় আছে, যিনি বৈদেশিক মদ্রার ব্যবসা করেন। তাকে এই ডলার দিলে তিনি আমায় সাড়ে আট হাজার টাকা দেবেন। আনন্দে আমার ইচ্ছা হলো লেজ তুলে নাচি।
গঞ্জে যেতে যেতে আমার চোখে কত স্বপ্ন ভাসতে শুরু করল। এই ১০০ ডলার থেকে যে টাকা পাবো, সেটা দিয়ে আমার ঈদের দারুণ কেনাকাটা হবে। পাঞ্জাবি দুটো কিনব। প্যান্ট তিনটি। শার্টও তিনটি। জুতা না কিনলেও চলবে। আমার বন্ধু রনির জন্যও একটা পাঞ্জাবি কিনব। বেচারা খুশি হবে।
আমি এখন বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবসায়ী ইসমাইল কাকার সামনে। তার হাতে ১০০ ডলার দিলাম। সেটা হাতে নিয়ে তিনি নাড়াচাড়া করলেন।
‘এটা তো ডলার নয়।’
‘তো?’
‘এটা রুপি।’
‘ওহ আচ্ছা। ঠিক আছে, এই রুপি থেকে আমি কত টাকা পাবো?’
‘পাবে না।’
‘কী বলছেন?’
‘এটা শ্রীলঙ্কার রুপি। এ দেশে চলে না।’
‘মানে?’
‘কোনো মানে নেই। শ্রীলঙ্কাসহ বেশ কয়েকটি দেশের মুদ্রা আমাদের দেশে চলে না। তুমি এই অচল জিনিস কোথায় পেলে?’
ইসমাইল কাকার প্রশ্নের জবাব কী দেবো বুঝতে পারছি না। এভাবে বোকা হবো, ভাবতে পারিনি। ১০০ ডলারের লোভে ওই টোকাই ছেলেটাকে ৫০০ টাকা দিয়ে বড্ড ভুল করেছি। আমার এখন আমও গেল, ছালাও গেল। ধ্যাত!


আরো সংবাদ



premium cement
নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা, অন্যদের কথা ব্যক্তিগত : প্রেস উইং সালাহর জোড়া গোলে জিতল লিভারপুল ১০ সাংবাদিকসহ ১১ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ৬ দফা মেনে নেয়ার আহবান হাসিনা-কন্যা পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক লেনদেন স্থগিত বুটেক্স-পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হবে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে : প্রেস উইং ব্যর্থ টপ অর্ডার, মুমিনুলের ফিফটির পর পথ দেখাচ্ছেন লিটন তেজগাঁওয়ে বুটেক্স ও ঢাকা পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ বেলজিয়ামের উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ বাড়ছে এসডিজি কার্যক্রমে যুক্ত হচ্ছে ড. ইউনূসের ‘থ্রি জিরো তত্ত্ব’

সকল