২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

যার সাথে ভালোবাসার তুলনা হতে পারে

-

চার দিকে আজ শুধু ভালোবাসার চিটিং বিটিং। ভালোবাসার জন্য আর গলির পরে গলি খুঁজে বেড়াতে হয় না কারো। যেতে হয় না কোনো নির্দিষ্ট গন্তব্যে। যেখানে সেখানে চিৎ কাইৎ হয়ে পড়ে থাকে। আপনার মনে হয়তো আসতেছে কাক কিংবা ময়লা আবর্জনার কথা। না সেটা নয়, একদমই সেটা নয়। এর নাম ভালোবাসা। বর্তমানের ভালোবাসার কার্যবিধির সাথে অনেক ধরনের কাজের মিল চোখে পড়ার মতো। আসুন দেখিÑ

নেশা
ভালোবাসা পার্কের খোলা জায়গা থেকে একবারে ঝোপঝাড়ের মধ্যে নেমে গেছে। ভালোবাসা এখন শুধু বাগান চেনে। নেশাখোরেরা নেশা করতে যেমন বাগান খোঁজে ঠিক তেমনিভাবে আজকালের ভালোবাসাও বাগান খোঁজে। ভালোবাসার সাথে এখন বাগানের গভীর সম্পর্ক। একটিকে ছাড়া অন্যটি ভাবাই যায় না। নেশাখোরদের ধরতে পারলে পুলিশে দেয়ার ভয় দেখিয়ে লোকে টাকাপয়সা কেড়ে নেয়। আর আজকের ভালোবাসার মানুষগুলোর রঙ্গলীলা করতে দেখলে বিয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে টাকাপয়সা ফোন সব তো নেয়ই, সাথে এক-দেড় শ’বার কান ধরে উঠবস তো থাকলই। তার পরও ভালোবাসা থেমে থাকে না। এ এক ধরনের নেশা।

পাগলাগারদ
মনে পড়ে না, শুনেছি কেউ পাগলাগারদ থেকে ভালো হয়ে বাড়ি ফিরেছে। বরং ভালো মানুষ পাগলাগারদ ঘুরে দেখতে গিয়ে পাগল হয়েছে। এমন সংবাদ অহরহ শোনা যায়। পাগলাগারদ আসলে এমনই একটা জায়গা যেখানে শুধু পাগল আর পাগল। আচ্ছা, পাগলের সাথে থেকে পাগলের সাথে মিশে কিভাবে একটি পাগল ভালো হতে পারে। মুখে বলি সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস আর অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ। অথচ কেউ পাগল হলে দৌড়ে নিয়ে পাগলাগারদে রেখে আসছি, অনেক পাগলের মাঝে। কী অদ্ভুত ব্যাপার। যা হোক, এবার আসল কথা বলি। ভালোবাসাও পাগলাগারদের মতো। যারা পাগল তারা তো পাগল থাকবেই চিরকাল। ভালোবাসায় পড়লে পছন্দের মানুষকে কাছে পেলে মানুষের পাগল হতে আর বাকি থাকে না। কোন সময় কি করবে ঠিক বুঝে উঠতে পারে না। আবার যদি সেই মানুষটি ছেড়ে চলে যায় তাহলে তো আর কথাই থাকে না। ফুল ম্যাড। তাহলে বলা যায় ভালোবাসা দিনের পর দিন অজস্র পাগল তৈরি করে চলছে। এটি একটি পাগলাগারদের মতো।

শহরের লোকাল বাস
বাসে ধূমপান নিষেধ। ভালোবাসায়ও কড়াভাবে ঘুমপান নিষেধ। শহরের রাস্তায় চলা লোকাল বাসগুলোর সীমাহীন মায়া-মমতা। কোনো মানুষকেই তারা সুবিধাবঞ্চিত করতে চায় না, সবাইকে বাসে তোলে এবং কোনোভাবে উঠাতে পারলে কিন্তু আবার সহজে নামাতেও চায় না। মন চাইলেই থেমে পড়ে যাত্রী উঠাবার জন্য, নামানোর জন্য নয়। প্রয়োজনে যাত্রীর বাসা থেকে এমনকি ঘুম থেকে ডেকে এনে উঠিয়ে নিতেও কোনো বাধা নেই। সময় বিশেষে অফুরন্ত সময় আবার সময় বিশেষ চোখের পলক ফেলারও সময় থাকে না। হাজার অনুরোধেও কাজ হয় না। কোনোভাবেই নামাতে চায় না। বাসে হেলপার গোয়ালার মতো চেঁচাতে থাকে। ঠিক ভালোবাসাও মোবাইল নামের হেলপার মার্কা চামচাটা সময়ে অসময়ে বেজে ওঠে। আর ফোন রিসিভ করলেই কন্ডাকটরের মতো এটা দাও ওটা দাও। এ দিবসে কী দিবা। ও দিবসে কী দিবা। নানান ফরমুলা।

ট্রেনের মতো
বগির পরে বগি। মন যত চাইবে তত বগি। সামনের বগিটায় কোনো যাত্রী না থাকলেও প্রথমটাই সব শক্তির উৎস। প্রথমটা থামলেই পেছনের সব বগি অচল। আবার প্রথম বগিটা যেকোনো সময় টান ধরলেই পেছনেরগুলোও চলতে থাকে। পেছনের বগির সংখ্যা অনেক হলেও সব বগিই কেমন যেন প্রথমটার কাছে খুব দুর্বল। ভালোবাসাটাও অনেকটাই এরকম। মানুষ একটি নয় কয়েকটি সম্পর্ক করে। একের পর একটি করতেই থাকে। ট্রেনে যেমন চা, মুড়ি, ছোলা, বাদামওয়ালার তাণ্ডব থাকে, ভালোবাসে তাই থাকে। ডেটিংয়ের সময় ছোলা, মুড়ি, বাদাম, কফি, চাটনি খাওয়া চলতে থাকে।

বেলুন জাতীয়
ভালোবাসা ঠিক রঙ-বেরঙের বেলুনের মতো। বেলুনে হাওয়া দিলে ফুলে ওঠে। যত হাওয়া ততই বেলুনের বিস্তার। হাওয়ার সাথে যদি সামান্য পরিমাণ গ্যাস মিশানো যায় একবারে এক লাফে আকাশের দিকে রওনা হয়। ভালোবাসাও ঠিক তেমনই। দু’জনে যত গাল গপ্পো দিবে ভালোবাসা ততটায় জমতে থাকে। আর সাথে ভালোবাসার গ্যাস মিথ্যাটাকে যদি যুক্ত করা যায় তাহলে তো আর কথায় নেই। প্রেমিক-প্রেমিকারা হাওয়ায় উড়ে বেড়ায়। আবার ঠিক শস্যদানার মতো সামান্য ভুল বোঝাবুঝি হলে মুহূর্তেই ভ্যানিশ হয়ে পড়ে। হ


আরো সংবাদ



premium cement