২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ডাংগুলি

-

রাফি খুব দুষ্টু প্রকৃতির ছেলে। সারা দিন পঁই পঁই করে ঘুরে বেড়ায় আর এর সাথে, ওর সাথে ডাংগুলি খেলে। তার মা শত চেষ্টা করেও স্কুলে পাঠাতে পারে না। যদিও মাঝে মধ্যে ধরে বেঁধে স্কুলে নিয়ে যায় কিন্তু কোনো লাভ হয় না। স্কুলে দিয়ে আসার পর নানা অজুহাতে স্কুল থেকে চলে আসে। পেট ব্যথা, মাথা ব্যথাসহ আরো কত রকম বাহানা যে তার জানা আছে তা না দেখলে বিশ্বাস হবে না। একদিন তো সে অজ্ঞানই হয়ে যায়। শিকরা মাথায় পানি-টানি দিয়ে জ্ঞান ফেরায়। সাথে আরেকজন সহপাঠী মিরনকে দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু বাড়িতে এলে তো ভালোই হতো। বাড়িতে না এসে আধো পথে এসে রাফি মিরনকে বলে, এই মিরন ডাংগুলি খেলবি?
মিরন বলে, সেকি রে তুই না অসুস্থ।
রাফি বলে, ধুর, আমি আবার অসুস্থ হই নাকি? বাহানা করে ছুটি নিলাম আরকি।
মিরন বলে, তুই তো ডাহা মিথ্যাবাদী। আমি তোর সাথে খেলব না।
রাফি বলে, আরে আয় না। অনেক মজার খেলা। একবার খেলেই দেখ।
শেষ পর্যন্ত মিরন খেলতে রাজি হয়। রাফি গাছ থেকে একটি ডাল ভেঙে দেড় হাত পরিমাণ একটি ডাং আর আধ হাত পরিমাণ একটি গুলি তৈরি করল। রাফির ডাংগুলি তৈরি করার দতা দেখে মিরন বেশ মুগ্ধ হলো। প্রথম প্রথম মিরনের খেলাটি বুঝতে একটু কষ্ট হয়। সে আগে কখনো এ খেলা খেলেনি। রাফি তার নানুর বাড়ি থেকে এ খেলা শিখে এসেছে। বলতে গেলে সে-ই এলাকায় প্রথম এ খেলার উদ্ভব ঘটায়। এখন পাড়ার অনেক ছেলেই এ খেলায় ওস্তাদ হয়ে গেছে।
রাফি মিরনকে এক এক করে খেলার সব নিয়ম-কানুন শিখিয়ে দেয়। রাফি বলে, এই যে এখানে একটু মাটি গর্ত করলাম। এবার গর্তের উপরে আড়াআড়িভাবে গুলিটা রাখতে হবে। তারপর গুলির নিচে ডাংটা ঢুকিয়ে দ্রুত খানিকটা উপরে তুলে সাঁই করে একটা বারি মারতে হবে। তারপর যেখানে গিয়ে গুলিটা পড়বে সেখান থেকে সোজা ডাং ফেলে ফেলে এক, দুই গুনে গর্ত পর্যন্ত আসতে হবে। পয়েন্টের একটা নির্দিষ্ট ল্যমাত্রা থাকবে। অর্থাৎ ল্যমাত্রা পাঁচ শ’ বা এক হাজার অথবা এর কম-বেশি একটা সংখ্যা খেলা শুরুর আগেই নির্ধারণ করে নিতে হয়। তারপর এভাবে পয়েন্ট করতে করতে যে আগে ল্যমাত্রা পূরণ করতে পারবে সেই হবে বিজয়ী।
রাফির কথা মিরনের কাছে প্রথম হযবরল মনে হলেও দু-এক দান খেলার পর বেশ আয়ত্ত করে ফেলেছে সে। সত্যি সত্যিই মিরনের কাছে খেলাটি বেশ লাগে। আজ প্রথম খেলেই সে যেন পাক্কা প্লেয়ার হয়ে উঠেছে।
দিনভর তারা ডাংগুলি খেলল। খেলতে খেলতে মাথার ওপর থাকা কড়া সূর্যটা কখন যে ঢলে পড়ে নিস্তেজ হয়ে গেছে সে দিকে খেয়াল করল না কেউই। খেলার নেশায় পেটের ুধাও যেন ছুটি নিয়েছে। স্কুল শেষে তাদের গণিতের শিক হক স্যার হেঁটে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন। হঠাৎ তার নজরে এল রাফি আর মিরন ডাংগুলি খেলছে। পরনে স্কুল ড্রেস। স্যারের বুঝতে বাকি রইল না যে, সকাল থেকে এখনো বাঁদর দুটো বাড়ি ফেরেনি। আর নিশ্চই রাফি সকালে ভং ধরেছিল। দাঁড়া আজ দেখাচ্ছি মজাÑ বলে হক স্যার তাদের দিকে এগিয়ে গেলেন। হক স্যারের আগমন টের পেয়ে ডাংগুলি ফেলেই ছুট লাগাল দু’জন।
রাতে হক স্যার রাফিদের বাড়ি গেলেন। পুরো ঘটনা খুলে বললেন। রাফির মা শুনে তো অবাক! ঘটনা শুনে রাফির বাবা লাঠি হাতে নিলেন ছেলেকে শায়েস্তা করতে। কিন্তু হক স্যার বাধা দিলেন। স্যার বললেন, থাক মারবেন না। মেরে তো লাভ নেই। আর মারলে ফলাফল ভালো হয় না বরং সন্তান ভয় পাওয়ার পরিবর্তে আস্তে আস্তে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। তার চেয়ে বরং ছেলেকে বুঝান। বুঝিয়ে বললে, আশা করি ভালো ফল পাবেন।
কথাগুলো বলে স্যার উঠতে যাবেন অমনি রাফির বাবা বললেন, স্যার এখন যেতে পারবেন না। আমাদের সাথে রাতের খাবার খেয়ে তারপর যাবেন।
স্যার মৃদু হাসলেন এবং পুনরায় বসলেন। রাফিকে কাছে টেনে একটু আদর করে বললেন, শুনো বাবা, জীবনে বড় হতে হলে পড়ালেখার বিকল্প নেই। যে যত পড়বে সে তত বড় হতে পারবে। তুমি বড় হতে চাও না?
রাফি হ্যাঁসূচক অর্থে মাথা নাড়ল। স্যার আবার বললেন, হ্যাঁ, খেলাধুলা করবে। খেলাধুলা করতে তো নিষেধ নেই। খেলাধুলা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। ছুটির দিনে খেলবে, স্কুল থেকে ফিরে এসে বিকেলে খেলবে তাহলেই তো হলো। স্কুল ফাঁকি দিয়ে খেলতে হয় নাকি? আর দুপুরের কড়া রোদে খেলাধুলা করাও স্বাস্থ্যের জন্য বেশ তিকর। এ সময় সূর্য থেকে নেমে আসে অতি বেগুনি রশ্মি। যা আমাদের দেহ এবং ত্বকের জন্য মারাত্মক তিকর। রাফি স্যারের সব কথা মনোযোগ দিয়ে শোনে।
পরদিন থেকে সে আর স্কুল ফাঁকি দেয় না। প্রতিদিন স্কুলে যায়। প্রথম বেঞ্চে বসে। হঠাৎ রাফির এত পরিবর্তন দেখে তার সব বন্ধুরাও তাকে অনুসরণ করতে থাকে। সব শিকও তাকে আদর করে। একদিন রাফি অনেক বড় হয়। হ


আরো সংবাদ



premium cement
জামিন পেলেন সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী মার্চের মধ্যে শ্রম আইন সংশোধন করা হবে : শ্রম সচিব ডেঙ্গুতে আরো ২ মৃত্যু, হাসপাতালে ৯৩৪ নোয়াখালীর আ’লীগ নেতা ঢাকা থেকে গ্রেফতার ঢাকায় যখন-তখন সংঘর্ষ-বিক্ষোভ, ইচ্ছে হলেই রাস্তা বন্ধ বিনা সুদে লাখ টাকা ঋণের প্রলোভন : মূল হোতা মোস্তফা আটক উন্নয়ন ব্যয়-বিনিয়োগ স্থবিরতায় অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা পরিকল্পনা উপদেষ্টার দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনতে হবে : সেলিম উদ্দিন ছাত্র সংগঠনগুলোকে নিয়ে বৈঠকের ডাক বৈষম্যবিরোধীদের সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে মোল্লা কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ : ৮ হাজার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা

সকল