২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

সংঘর্ষের শঙ্কায় ৭ গ্রামের মানুষ

- ছবি : নয়া দিগন্ত

মৌলভীবাজারের রাজনগরে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়ার ঘটনায় এক মাস ধরে আতঙ্কে রয়েছেন সাত গ্রামের মানুষ। বন্ধ রয়েছে এলাকার হাটবাজার। গ্রামের মানুষের মাঝে নেই স্বাভাবিক চলাফেরা।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলেন, সংঘর্ষ এড়াতে প্রথমে সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছিল হাটবাজার। উভয় পক্ষকে নিয়ে চেষ্টা চলছে, তবে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা যাচ্ছে না।

উপজেলা প্রশাসন বলছেন, ‘বাজার বন্ধ করা হয়নি। লোকজন বাজারে আসছে না কেনো বিষয়টি দেখা হবে।’

উল্লেখ্য, মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার পাঁচগাও ইউনিয়নের মধুর বাজারে গত ৯ আগস্ট এক সংঘর্ষে স্থানীয় চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ছানা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এরপর থেকে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় এলাকার মানুষের কোলাহল। ঘটনার পর থেকে জমছে না বাজার। খুলছে না দোকানপাট।

সরেজমিনে এলাকায় জানা গেছে, এক মাস ধরে এমন পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আতঙ্কে রয়েছেন রক্তা, খালদারপার, কেওলা, শারমপুর, ঢেউরবন্দ, নয়াগাঁও, মুখাসূতা এই সাত গ্রামের মানুষ।

কথা হয় রক্তা গ্রামের মধুর দোকানের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সর্দন বিশ্বাসের সাথে তিনি বলেন, ‘স্বল্প আয়ের মানুষ আমি। বাজারে গলিতে বসে ব্যবসা করতাম, তা দিয়ে সংসার চলতো। এক মাস ধরে বড় কষ্টে আছি। ব্যবসা নেই জমানো পুঁজি খরচ করে ফেলেছি।’

এছড়াও কথা হয় মধুর বাজারের ব্যবসায়ী ছমির মিয়ার সাথে তিনি বলেন, ‘গত মাসে বাজারে সংঘর্ষের ঘটনায় ইউনিয়ন চেয়ারম্যন নিহত হন। এরপর থেকে বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে। এলাকায় রয়েছে আতঙ্ক। এর সাথে আমারও দোকান বন্ধ হয়ে যায়। এখন কষ্ট করে সংসার চলছে।’

শারমপুর গ্রামের মারুত আহমদ বলেন, ‘আমাদের স্থানীয় মধুর বাজার বন্ধ থাকায় আমরা অনেক কষ্ট করে ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে গিয়ে কেনাকাটা করতে হচ্ছে।’

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য হাসিম আলী বলেন, ‘গত ৯ আগস্ট মধুর বাজারে সংঘর্ষে আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ছানা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এরপর থেকে চরম আতঙ্কে বন্ধ হয়ে যায় ওই বাজার। এতে ব্যবসায়ীদের ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।’

পাঁচগাও ইউনিয়নের সদস্য ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জুবেল আহমদ বলেন, ‘সংঘর্ষ এড়াতে প্রথমে হাটবাজার সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছিল। উভয় পক্ষকে নিয়ে চেষ্টা চলছে এলাকার স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে। সংঘর্ষের শঙ্কা রয়েছে। তাই স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা যাচ্ছে না। আশা রাখি, কিছু দিনের মধ্যে সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’

রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুপ্রভাত চাকমা বলেন, ‘আমরা বাজার বন্ধ রাখিনি। বাজার বন্ধ থাকলে তা খুলে দেয়া চেষ্টা করা হবে। সংঘর্ষের শঙ্কা এখন আর নেই।’


আরো সংবাদ



premium cement