২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

কুলাউড়ায় দ্বিতীয় দফা বন্যা : আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ত্রাণের জন্য হাহাকার

ত্রাণবাহী নৌকা ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে। - ছবি : নয়া দিগন্ত

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ২ জুলাই থেকে প্রচুর বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ায় ফলে ও উজান থেকে নেমে আসা ভারতীয় ঢলে হাকালুকি হাওরসহ কুলাউড়ার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। দ্বিতীয় দফার বন্যায় মানুষের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই।

আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ত্রাণের জন্য চলছে হাহাকার। এদিকে গত পাঁচ দিন থেকে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে কোনো ত্রাণ সামগ্রি দেয়া হয়নি।

জানা যায়, হাকালুকি হাওর তীরবর্তী উপজেলা গুলোতে বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়ে জলাবদ্ধতায় রূপ নিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে রান্নাকরা খাবার, বিশুদ্ধ পানি আর স্যানিটেশন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন লোকজন। দিন দিন বাড়ছে পানিবাহিত রোগবালাই। বিশেষ করে গবাদিপশুর খাবার ও বাসস্থান নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বানভাসিরা।

ভূকশিমইল ইউনিয়নের ভুকশিমইল গ্রামের আলী আহমদ জানান, আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা মানুষ খাদ্য সঙ্কটের সাথে বিশুদ্ধ পানির সমস্যায় ভুগছেন। এতে পানিবাহিত রোগ জীবাণুতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে হাওর এলাকায়।

রাবেয়া স্কুলে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা রিনা বেগম জানান, গত সপ্তাহে বন্যার পানি কিছুটা কমায় তিনি বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু ফের টানা বৃষ্টিতে পানি আগের মতো বেড়েছে। তাই আবারো আশ্রয় কেন্দ্রে চলে এসেছেন।

কামারকান্দি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়ে ছিলেন দবর মিয়া, সেন্টু মিয়া, মনাই মিয়াসহ ১৬টি পরিবারের লোকজন। পানি কমায় গত ৩০ জুন তারা সকলেই নিজ নিজ বাড়িতে চলে যান। কিন্তু ২ জুলাই থেকে টানা বৃষ্টির ফলে আবারো তাদের ঘরবাড়িতে পানি।
ভূকশিমইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির জানান, বন্যার পানি অনেকটা কমে গিয়েছিল। কিন্তু দু’দিনের ব্যাবধানে ফের অবনতি হয়েছে। হাকালুকির ভয়াবহ ঢেউ তীরবর্তী এলাকার মানুষের কাঁচা ও আধপাকা বাড়িঘরসহ রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতি করছে। হাওর পাড়ের মানুষ পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত তিন হাজার পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেয়া সম্ভব হয়েছে। খাদ্য সহায়তার জন্য প্রতিদিনই লোকজন যোগাযোগ করছেন। গো-খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে তার এলাকায়।

কুলাউড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: শিমুল আলী জানান, ফের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় অতিরিক্ত দুই হাজার পরিবারকে খাদ্য সহায়তা করার ব্যবস্থা আছে। নতুন করে বরাদ্দের চাহিদা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই দ্রুত বানভাসী মানুষের মাঝে সেগুলো বিতরণ করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement