২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

শ্বশুরবাড়ি থেকে সাবেক ছাত্রদল নেতার গলা ও পেটকাটা লাশ উদ্ধার

ছায়াদ আহমদ - ছবি : সংগৃহীত

সিলেটের ওসমানীগরে শ্বশুরবাড়ি থেকে উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ছায়াদ আহমদের (৪৫) গলা ও পেটকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) ভোরে উপজেলার বুরুঙ্গা ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামের মৃত মতিন মিয়ার বাড়ি থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

এসময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত ছায়েদের স্ত্রী শাহানাজ আক্তার পলিকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহত ছায়েদ গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের জহিরপুর গ্রামের মৃত আব্দুল ছত্তার মেম্বারের ছেলে। সন্তান ও শাশুড়ির দাবি, গভীর রাতে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে স্ত্রীকে আহত করার পর নিজেই নিজের গলা ও পেট কেটে আত্মহত্যা করেছেন ছায়াদ।

জানা যায়, ছায়াদ প্রায় ১০ বছর আগে কামারগাঁও গ্রামের মৃত মতিন মিয়ার মেয়ে শাহানাজ আক্তার পলিকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে তিনটি কন্যাসন্তান রয়েছে। ৬/৭ বছর যাবৎ স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করছিলেন তিনি। বিয়ের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়াঝাটি হতো। মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে শাশুড়ি সৈয়দা বেগম চিৎকার শুনে এগিয়ে গিয়ে গলা ও পেট কাটা অবস্থায় পেট থেকে নাড়িভুড়ি বের করা ছায়াদের নিথর দেহ এবং আহত মেয়ে পলিকে দেখতে পান। বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য ও পুলিশকে জানালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়। এবং আহত স্ত্রী পলিকে চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়।

এদিকে, নিজেই নিজের পেট কেটে নাড়িভুড়ি বেড়িয়ে যাওয়ার পর গলা কাটা অথবা গলা কাটার পর পেট কেটে কিভাবে আত্মহত্যা করতে পারে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এটি হত্যা না আত্মহত্যা এ নিয়ে চলছে আলোচনা।

নিহত ছায়াদের বড় মেয়ে সাইরা জান্নাত মাইশা (৮) জানায়, ‘বাবা-মায়ের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে চিৎকার শুনে গিয়ে দেখি আমার বাবার পেট কাটা এবং দা দিয়ে নিজে নিজের গলা কেটে ফেলছেন।’

শাশুড়ি সৈয়দা বেগম বলেন, ‘চিৎকার শুনে ঘরে ঢুকে দেখি অন্ধকার। লাইট নিয়ে গিয়ে দেখি মেয়ের জামাইয়ের গলা ও পেট কাটা অবস্থায় নিথর দেহ পড়ে আছে। মেয়ের অবস্থাও খারাপ।’

নিহতের ছোট ভাই জুয়েল মিয়া বলেন, ‘গত প্রায় সাত বছর ধরে আমার ভাই স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে থাকেন। মঙ্গলবার ভোরে স্থানীয় এক ব্যক্তির মাধ্যমে খবর পেয়ে আমার সেখানে ছুটে যাই।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য হুশিয়ার আলী বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি সাড়ে ৬টায় তাদের বাড়িতে যাই। গিয়ে দেখি গলা ও পেট কাটা নাড়িভুড়ি বের করা নিথর দেহ পড়ে আছে। বিষয়টি বুঝতে পারছি না।’

গোয়ালাবাজার ইউপি সদস্য দিলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ছায়াদ আহমদ দীর্ঘদিন ছাত্ররাজনীতি করেছেন। একজন সুস্থ সমাজসচেতন লোকের এমন মৃত্যু রহস্যজনক।’

ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ রাশেদুল হক বলেন, ‘নিহতের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার মেয়েরা বলেছে, বাবা নিজেই আত্মহত্যা করেছে। বিষয়টি তদন্ত চলছে।’


আরো সংবাদ



premium cement

সকল