১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

অপহরণের ৩ দিন পর শিশু সন্তানের বস্তাবন্দী লাশ পাঠানো হলো মা-বাবাকে

অপহরণের ৩ দিন পর শিশু বস্তাবন্দী লাশ পাঠানো হলো মা-বাবাকে - ছবি : নয়া দিগন্ত

সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলায় তোফাজ্জল হোসেন নামে সাত বছরের নিখোঁজ শিশুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার সকালে উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের বাঁশতলা নিখোঁজ শিশুর বাড়ির পাশের বাড়ি থেকে লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় জিজ্ঞেসাবাদের জন্য দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।

আটকরা হলেন-কালন মিয়া (৬০) ও তার ছেলে সেজা মিয়া (২২)। উদ্ধার শিশুটির সারা মাথায় রক্তে ভরপুর,দূর্বৃত্তরা শিশুটিকে হত্যা করেই শান্ত হয়নি,তাকে হত্যা করে তার ডান চোখটিও খুলে নেয় তারা। তোফাজ্জল হোসেন উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী বাশঁতলা গ্রামের জুবেল হোসেনের ছেলে এবং বাঁশতলা হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। গত বুধবার বিকাল ৫টার সময় নিখোঁজ হয় সে। এরপর নিখোঁজের বিষয়ে নিখোঁজ তোফাজ্জলের দাদা জয়নাল আবেদীন বৃহস্পতিবার দুপুরে তাহিরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেন। জিডি নং ২৬০। এ নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে শনিবার শিশুটির বস্তাবন্দী লাশ পাওয়া যায়।

তাহিরপুর থানার ওসি মোঃ আতিকুর রহমান এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।

এলাকাবাসী ও শিশুর স্বজনরা বলেন, গত বুধবার বিকাল ৫টার সময় নিখোঁজ তোফাজ্জল তার দাদা জুবেল হোসেনের বাড়ীর উঠানে খেলা করার সময় হঠাৎ নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের পর থেকে প্রতিবেশী, তাদের আত্মীয় স্বজন ও তোফাজ্জলের বন্ধুদের বাড়ীতেও তার কোন সন্ধান মেলেনি। এরপর শুক্রবার সকালে ঘরের দরজার সামনে একটি চিঠি পাওয়া যায়, চিঠিতে লেখা ছিল ৮০ হাজার টাকা দিলে তোফাজ্জলকে ফেরত দিবে না হলে লাশ পাঠাবে। সাথে শিশুটির কাপড় ও জুতাও পাঠায়। 

এ বিষয়ে নিহত শিশুটির বাবা জুবায়ের সন্দেহ করে বলেন, রেজাউল ও তার বাবা কালন মিলে শিশু তোফাজ্জলকে গুম করে চিঠির মাধ্যমে আমাদের কাছে ৮০ হাজার টাকা দাবি করে এবং তাদের চাহিদা পূরণ করতে পারিনি বলেই আমাদের ছেলেটিকে খুন করেছে। তার ডান চোখটি খুলে নিয়েছে, সারা শরীরে নির্যাতনের চিহৃ রয়েছে। আমাদের ছেলে হত্যার সাথে যারা জড়িত তাদের সবাইকে আইনের আওতায় এনে ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আতিকুর রহমান বলেন, গত বৃহস্পতিবার শিশুটি নিখোঁজ উল্লেখ করে থানায় জিডি করেছিলেন শিশুটির দাদা। এরপর থেকে আমরা অনুসন্ধানে ছিলাম। এরপর ভোরে আমার কাছে  ফোন আসে শিশুটিকে হত্যা করে বস্তায় ভরে ফেলে গেছে। আমরা ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করি এবং সুনামগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করেছি।

মামলা মোকদ্দমা ও পারিবারীক পূর্ব বিরোধের জের ধরে শিশু তোফাজ্জলকে অপহরণ পরবর্তী হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে -মন সন্দেহে সন্দেহ থেকে উপজেলার বাঁশতলা গ্রামের কালা মিয়া ও তার ছেলে সেজাউল কবিরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে শনিবার ভোররাতেই টেকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা আটক করে ফাঁড়িতে নিয়ে যান।


আরো সংবাদ



premium cement