১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০১ মাঘ ১৪৩১, ১৪ রজব ১৪৪৬
`

বিশুদ্ধ পানি বঞ্চিত সিলেটের ৮২ শতাংশ চা শ্রমিক

৮২ শতাংশ শ্রমিক বিশুদ্ধ পানির সুবিধা থেকে বঞ্চিত বলে এক জরিপে জানা গেছে - ছবি : নয়া দিগন্ত

দেশের ১৬৯টি চা বাগানের মধ্যে সিলেটেই রয়েছে ১৩৫টি। তবে সিলেটের এসব চা বাগানের ৮২ শতাংশ শ্রমিক বিশুদ্ধ পানির সুবিধা থেকে বঞ্চিত বলে এক জরিপে জানা গেছে।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অক্সফামের অর্থায়নে এথনিক কমিউনিটি ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (একডো) আয়োজনে ‘লিডারশিপ ডেভলপমেন্ট অব টি লেবার ওমেন ওয়ার্কার অন দেয়ার রাইটস’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব তথ্য জানানো হয়।

নারী চা শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে তাদের নেতৃত্বের বিকাশের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খুশনূর রোবায়েত। একডো-এর নির্বাহী পরিচালক লক্ষ্মীকান্ত সিংহের সভাপতিত্বে বৈঠকের মডারেটর ছিলেন অ্যাডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম।

বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা অধিদফতর সিলেটের উপ-পরিচালক শাহিনা আক্তার, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবির, লাক্কাতুরা চা বাগানের অ্যাসিসেন্ট ম্যানেজার নূর মোহাম্মাদ ফারুকি সিয়াম।

বৈঠকের শুরুতেই সিলেটের চা বাগানের চিত্র তুলে ধরেন একডো-এর প্রকল্প সমন্বয়ক মোমতাহিনুর রহমান চৌধুরী।

তিনি জানান, সিলেটের দলদলি, কেওয়াছড়া ও হিলুয়াছড়া চা বাগানে একডো একটি জরিপ করে। জরিপে দেখা যায়, এ তিনটি বাগানে ৮৯০ পরিবার রয়েছে। জনসংখ্যা আছে পাঁচ হাজার ৬০০ জন। এর মধ্যে নারী শ্রমিক আছেন এক হাজার ৫০৯ জন। এ তিন বাগানের ৪২ শতাংশ শিশু স্কুলে যাচ্ছে না। ৩৩ শতাংশ শিক্ষার্থী প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেছে এবং তিন শতাংশ শিক্ষার্থী মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেছে। চা বাগানের ৮২ শতাংশ শ্রমিক বিশুদ্ধ পানির সুবিধা পান না। বৈঠকে উপস্থিত বেশ কয়েকজন চা শ্রমিক জরিপের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

চা শ্রমিক সুমি নায়েক বলেন, ‘তিন বাগানের জরিপে যে তথ্য পাওয়া গেছে, সেটা সিলেটের সব চা বাগানের চিত্র। চা বাগনে নারী শ্রমিকই বেশি। কিন্তু আমরা চিকিৎসা, স্যানিটেশনের কোনো সুবিধা পাই না। পর্যাপ্ত মজুরি না পাওয়ার কারণে অনেক নিম্নমানের এবং কম পরিমাণে খাবার খেতে হয়। চা বাগানে কোনো সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই, তাই আমাদের বাচ্চারা পড়ালেখা বিমুখ। আবার বাগানের বাইরে বাচ্চাদের পড়ালেখা করানোর সামর্থ্য আমাদের নেই।’

চা শ্রমিকনেতা দিলীপ রঞ্জন কুর্মী বলেন, ‘চা বাগানের সব সমস্যার সাথে আরেকটি নতুন সমস্যা হলো মাদকের সমস্যা। আমাদের এই মাদক সমস্যা দূর করার উদ্যোগ নিতে হবে। বহিরাগতরা মাদক নেয়ার জন্য বাগানে ঢুকে অরাজকতা করে।’


আরো সংবাদ



premium cement