১১ জানুয়ারি ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১, ১০ রজব ১৪৪৬
`

আগামীর বাংলাদেশ বিষাদের নয়, উৎসবমুখর হবে : প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন মো: সিরাজ উদ্দিন মিয়া - ছবি : নয়া দিগন্ত

আগামীর বাংলাদেশ বিষাদের নয়, উৎসবমুখর হবে মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব মো: সিরাজ উদ্দিন মিয়া বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস ৫ আগস্টের পর জাতির ক্লান্তিলগ্নে দেশের হাল ধরেছেন। তিনি বরাবরই বলেন, এমন একটা বাংলাদেশ দেখতে চান, যেখানে দেশের মানুষেরা হাসিমুখে থাকবে।’

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) বিকেলে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের কাকিয়াছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের উদ্যোগে পর্যটন শিল্পকে বিকশিত করতে প্রথমবারের মতো তিন দিনব্যাপী ‘হারমোনি ফেস্টিভ্যাল’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

সিরাজ উদ্দিন মিয়া বলেন, ‘উৎসবমুখর বাংলাদেশের জন্য এই আয়োজন একটি সূচনা হতে পারে। কারণ শ্রীমঙ্গলসহ মৌলভীবাজরের প্রকৃতি বৈচিত্র্য প্রশংসনীয়। এই বৈচিত্র্য নিয়েই আমাদের বসবাস করতে হবে। আমাদের বিভিন্ন পরিচয় আছে, সংস্কৃতি আছে কিন্তু আমরা একই দেশের মানুষ। শ্রীমঙ্গলের ঐতিহ্যের মধ্যে যে ঐক্য, এটা বোধহয় বাংলাদেশের অন্য কোথাও নেই। এটাই শ্রীমঙ্গলের বিশেষত্ব।’

তিনি আরো বলেন, ‘এখানে প্রবেশের সময় বিভিন্ন নৃ-জাতী গোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে যে হাসিমাখা মুখ দেখলাম তাতে আমি বিশ্বাস করি, সেই হাসিমুখ তাদের মধ্যে থাকবে এবং এই হাসিমুখ চিরস্থায়ী হবে। শ্রীমঙ্গলসহ সিলেট বিভাগ পর্যটনের জন্য একটা আকর্ষণীয় অঞ্চল। এখানে পাহাড়, হাওড়, জলাভূমি, বৃক্ষরাজি, বন, চা বাগানসহ অনেক বৈচিত্র্যের সমাহার আছে। এটা বাংলাদেশের অন্য অঞ্চলে নাই। এখানের প্রকৃতি অপরূপ সাজে সাজিয়েছে। এছাড়া এখানকার মানুষের মধ্যে যে বৈচিত্র্য এবং প্রকৃতির মাঝে যে বৈচিত্র্য, এটার একটা মেলবন্ধন করা যেতে পারলে পর্যটনের জন্য অপার সম্ভাবনা হয়ে ওঠবে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড এই হারমোনি উৎসবের জন্য শ্রীমঙ্গলকে বেচে নেয়া সঠিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখানের যে প্রকৃতি ও বৈচিত্র্যের মাঝে মানুষের যে বৈচিত্র্য রয়েছে, তার একটা মেলবন্ধন ঘটিয়ে পর্যটনকে বিকশিত করা যেতে পারে। এখানকার কমবেশি ২৩টি নৃ-জাতী গোষ্ঠীর মানুষকে আজ একসাথে করা হয়েছে। সুযোগ রয়েছে প্রকৃতির মাঝে যে মানুষের বসবাস সেটাকে কাজে লাগিয়ে ইকো এবং কমিউনিটি ট্যুরিজম করার। তাদেরকে অংশীদার বা সম্পৃক্ত করে ইকো ট্যুরিজমকে সমৃদ্ধ করতে পারলে তারা অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হবে। এই এলাকাটা ট্যুরিজমের জন্য সমৃদ্ধশালী অঞ্চল। এটাকে কাজে লাগাতে হবে।’

বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আবু তাহের মুহাম্মদ জাবেরের সভাপতিত্বে এ সময় বিশেষ অতিথি ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মিজ নাসরীন জাহান, সিলেট বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) খান মো: রেজা-উন-নবী, এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী। এছাড়া স্বাগত বক্তব্য দেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো: ইসরাইল হোসেন ও মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সুদর্শন কুমার রায়।

মেলায় স্থানীয় বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বিভিন্ন উপকরণ প্রদর্শনীসহ এ অঞ্চলের তাদের ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু খাবারের ৫০টি স্টলের পাশাপাশি প্রায় ২৬টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নিজস্ব সংস্কৃতি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। অতিথিরা তাদের বর্ণিল জীবন ও সংস্কৃতির প্রথম দিনের আয়োজন রাত পর্যন্ত উপভোগ করেন। বৈচিত্র্যের এই মেলবন্ধনের উৎসবটি চলবে আগামী রোববার রাত আটটা পর্যন্ত।


আরো সংবাদ



premium cement