সবজি বাজারের অস্তিরতা কাটছেই না
- তৌহিদ চৌধুরী প্রদীপ, সুনামগঞ্জ
- ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৩০, আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৪৪
সুনামগঞ্জে সবজি বাজারের অস্তিরতা কাটছে না। লাগাম ছাড়া পাগলা ঘোড়ার মতো উপরেই দৌড়াচ্ছে। নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে ক্রেতাদের। বিশেষ করে বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকজন। তারা না পারছে বলতে না পারছে সহ্য করতে। কাঁচা মরিচের কেজি ছয় শ’ টাকা।
ক্রেতারা জানান, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিবেকহীন, অর্থলোভী, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা বাজার অস্তির করে রেখেছে। এই সিন্ডিকেট ব্যবসা বিগত সরকারের সৃষ্টি। এখন পর্যন্ত কোনো সিন্ডিকেট ব্যবসা ভাঙতে পারছে না বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। তারা শক্ত অবস্থানে থেকে সিন্ডিকেট সদস্যরা কাঁচাবাজারের সবজির ব্যবসা দাপটে চালিয়ে যাচ্ছেন পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা।
এদিকে, জেলার ভুক্তভুগী সাধারণ মানুষের ক্ষোভ, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসন ভূমিকা রাখতে তেমন একটা চোখে দেখা যায়নি। প্রশাসনের এ দুর্বলতা দেখে বিভিন্ন অযুহাত ও কারসাজিতে লাগামহীনভাবে ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত রাখায় সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। তারা মানুষের কথা চিন্তা না করে, কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ করেই সবজি বাজার ঊর্ধ্বগতি রাখার প্রতিযোগীতায় নেমেছে এসব অসাধু পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা।
সবজির পাইকারি বাজারে দরের চেয়ে খুচরা বাজারে কেজি প্রতি ৬০ থেকে ৭০ টাকা ব্যবধানে, এমনকি কোনো কোনো সবজির ১০০ থেকে ১৪০ টাকার নিচে এক পয়সাও কম বিক্রি করছেন না। ফলে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয় ও সাধারণ মানুষজন।
সরেজমিনে সুনামগঞ্জ সবজি বাজারে দেখা গেছে, কোনো কারণ ছাড়াই সবজি বাজারে অস্বাভাবিক হারে দাম বাড়িয়ে রেখেছে। শুধু পেঁপে ৫০ টাকা কেজি ছাড়া আর কোনো সবজিই ৮০ টাকার নিচে বিক্রি করছেন না সবজি ব্যবসায়ীরা।
গতকাল পর্যন্ত সিন্ডিকেট সদস্যরা কাঁচা মরিচ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে। টমেটো ২৫০, বরবটি ১৩০, কাকরোল ১২০, কচুর লতি ১০০, চিচিঙ্গা ১০০, ঝিঙা ১০০, পটল ৯০, ছোট ডাটা আটি ২০ টাকা, লাল শাক নতুন ছোট এক মুঠি ২০ টাকা, পুঁইশাক ৮০ টাকা, লাল আলু ৭০ টাকা, সাদা আলু ৬০ টাকা, মুকি ৮০ টাকা, লেবুর হালি ৪০ থেকে ৬০ টাকা, গাজর ২০০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, লাউ বড় ১২০ টাকা, মাঝারি লাউ ৮০ থেকে ৯০ টাকা, ছোট লাউ ৫০ থেকে ৬০ টাকা, শিম ৪০০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, কচুর মুকি ৮০ টাকা দরে বিক্রি করছেন।
এ ব্যাপারে খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন, আমরা সবজি আড়ৎদারা বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে চড়া দামে কিনে আনতে হয়, আমাদের মালামাল ১৫ থেকে ১৬ টনের ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন যে ট্রাক ২৫ হাজার টাকায় মাল সুনামগঞ্জে পৌঁছে দিতো সেই ট্রাক ৩৫ থেকে ৩৮ হাজার টাকা ভাড়া গুনে দিতে হয়। গাড়ির ভাড়া অতিরিক্ত হওয়ায় মালের দামও বেড়ে গেছে।
এ ব্যাপারে প্রশাসন নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজি বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণে মাঠে নামার আহ্বান জানান সাধারণ মানুষ ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ‘বিএসটিআইয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের ও সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের জরিমানা করলেই নিয়ন্ত্রণে আসবে না। এদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির বিধান রাখলে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা সর্তক হবে, বাজারের নিয়ন্ত্রণে আসবে।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা