ভারতে হিমবাহ ধসে ১৪ জনের মৃত্যু, নিখোঁজ দেড় শতাধিক
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১২:১৮
ভারতের উত্তরখণ্ডে হিমবাহ ধসে ১৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিখোঁজ রয়েছেন ১৭০ জন। এদের বেশিরভাগই ওই এলাকার দুটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের শ্রমিক বলে ধারণা করা হচ্ছে। এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
হতাহতদের উদ্ধারে সহায়তার জন্য দুর্গত অঞ্চলে দেশটির সেনা, আধাসামরিক বাহিনীর কয়েকশ সদস্য ও সামরিক হেলিকপ্টার পাঠানো হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা ঘটনাটি তদন্ত করছেন যদিও এটি হিমবাহ ধসের কারণে হয়েছে কিনা তা এখনো পরিষ্কার নয়।
সোমবার এক টুইট বার্তায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন যে, তিনি উত্তরাখণ্ডের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।
তিনি এক টুইট বার্তায় বলেছেন, ‘প্রতিনিয়ত কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলছি এবং উদ্ধারকর্মীদের মোতায়েন, উদ্ধার কাজ এবং ত্রাণ কার্যক্রমের ব্যাপারে আপডেট নিয়ে যাচ্ছি।’
‘ভারতবাসী উত্তরাখণ্ডের পাশে আছে এবং সেখানকার সবার সুরক্ষার জন্য তারা প্রার্থনা করছে।’
বিশ্বজুড়ে নেতারাও নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন একটি টুইট বার্তায় বলেছেন, ‘আমরা ভারতের জনগণ এবং উত্তরাখণ্ডের উদ্ধারকর্মীদের সাথে রয়েছি, যারা হিমবাহ ধসের ফলে ভয়াবহ বন্যার মোকাবিলায় কাজ করছে।’
ভারতের প্রতি যুক্তরাজ্য সংহতি জানিয়েছে এবং প্রয়োজনীয় যে কোনো সহায়তা দেয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
উত্তরাখণ্ড পুলিশ জানিয়েছে, রোববার স্থানীয় সময় বেলা ১১টার দিকে এই হিমবাহ ধসের ঘটনা ঘটেছে এবং ঋষিগঙ্গা জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নামে বাঁধটি ভেসে যায়।
প্রবল পানির তোড়ে তপোবন অঞ্চলের ধৌলি গঙ্গা নদীর তীরে গড়ে ওঠা আরেকটি বিদ্যুৎ প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, জানিয়েছে পুলিশ।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী এই ভয়াবহ বন্যাকে বলিউড সিনেমার দৃশ্যের সাথে তুলনা করেছেন।
ভিডিওতে দেখা গেছে যে, বন্যার পানিতে ওই অঞ্চল পুরো তলিয়ে গেছে। যেদিকে বন্যার পানি যাচ্ছে সব ধ্বংস করে ফেলছে।
জরুরি কর্মীরা এর আগে বহু গ্রামবাসীকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছিল, কর্তৃপক্ষ পরে জানায় যে বন্যার মূল বিপদটি কেটে গেছে।
জরুরি উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসাবশেষের নিচে সুড়ঙ্গের ভেতরে আটকা পড়া ১৬ জন শ্রমিককে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।
এর আগে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে যে, প্রায় ৩০ জন মানুষ একটি সুড়ঙ্গে আটকা পড়েছে এবং জরুরি উদ্ধারকর্মীরা তাদের উদ্ধারের জন্য রাত জেগে কাজ করছিল।
উত্তরাখণ্ড, পশ্চিম হিমালয়ের কয়েকটি এলাকা বন্যা এবং ভূমিধসের ঝুঁকিতে রয়েছে।
কয়েক দশকের সবচেয়ে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ভয়াবহ বন্যায় ২০১৩ সালের জুনে কমপক্ষে ছয় হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রোববারের এই বিপর্যয়ের পরে পরিবেশবাদীরা এমন একটি সংবেদনশীল পাহাড়ি এলাকায় বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ কতোটা যৌক্তিক হয়েছে সেটা পর্যালোচনা আহ্বান জানায়।
‘পাহাড়ি এলাকার নদী অববাহিকায় এ ধরণের হিমবাহ ধস সাধারণ ঘটনা’ উত্তরাখণ্ড স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের পরিচালক এম.পি.এস. বিশত সংবাদ সংস্থা এএফপিকে এ কথা বলেন।
‘এই অঞ্চলে বিশাল ভূমিধসের ঘটনাও প্রায়ই ঘটে থাকে।’
সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী উমা ভারতী বলেছেন, তিনি এর আগে সরকার থাকাকালীন গঙ্গা ও তার শাখা নদীতে বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।