ভারতে এক দিনে রেকর্ড আক্রান্ত, মৃত্যু বেড়ে ৯
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৪ মার্চ ২০২০, ০৭:৩৫
করোনাভাইরাস ভারতে আশঙ্কা-আতঙ্ক বাড়িয়েই চলেছে। এই ভাইরাসের আক্রমণে প্রাণহানি এবং সংক্রমণে রাশ টানা যাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত ভারতে করোনা সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। পশ্চিমবঙ্গে সোমবার প্রথম করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। হিমাচলপ্রদেশে করোনা সংক্রমণে মারা গেছে আমেরিকাফেরত এক প্রৌঢ়। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেব অনুযায়ী, আক্রান্তের সংখ্যা ৪৬৮। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর হিসেবে অবশ্য সংখ্যাটা ৪৭১। সোমবার নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন শতাধিক ব্যক্তি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং আইসিএমআর-এর দাবি, ঠিক মতো লকডাউন কার্যকর করতে পারলে সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে।
সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে আজ মৃত্যু হয় ৫৭ বছরের করোনা আক্রান্ত এক প্রৌঢ়ের। দমদমের বাসিন্দা ওই ব্যক্তির বিদেশ সফরের কোনও রেকর্ড নেই। সর্দি-কাশি-জ্বর নিয়ে গত ১৬ মার্চ তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ২০ মার্চ তার লালারস নাইসেডে পাঠানো হলে পরীক্ষা করে জানা যায়, তিনি কোভিড-১৯ আক্রান্ত।
হিমাচলের কাংড়ার বাসিন্দা ওই প্রৌঢ় একটি বেসরকারি হাসপাতালে সোমবার মারা যান। রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব (স্বাস্থ্য) আর ডি ধীমান জানিয়েছেন, প্রৌঢ় গত ১৫ মার্চ আমেরিকা থেকে দিল্লি ফেরেন। রাজধানীতে তিনি কিছু দিন ছিলেন। গত পরশু ট্যাক্সি করে হিমাচলপ্রদেশে ফেরেন তিনি। পরে করোনার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। তার লালারস পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু রিপোর্ট আসার আগেই তার মৃত্যু হয়। ধীমান জানান, যে ট্যাক্সি করে প্রৌঢ় হিমাচলে এসেছিলেন, সেই গাড়ির চালককে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁকে এবং তার পরিবারের সদস্যদের গৃহ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
এরই মধ্যে করোনা মোকাবিলায় রাজ্যগুলোকে নয়া পরামর্শ দিয়েছে আইসিএমআর। তারা বলেছে, পৃথক পৃথক হাসপাতালে নয়, করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা হোক একটি নির্দিষ্ট হাসপাতালেই। অভিযোগ উঠছে, কোভিড-১৯ রোগের মোকাবিলায় হাইড্রো অক্সি-ক্লোর-কুইনিনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কারণ, কালোবাজারি হচ্ছে। তবে আইসিএমআরের ডিজি বলরাম ভার্গব বলেন, ‘‘যে সব চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী করোনা আক্রান্তদের দেখভাল করছেন, শুধু তাঁদেরই ওই ওষুধ দেয়া হচ্ছে।’’ ‘জনতা কার্ফু’ থেকে ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে কি না জানতে চাওয়া হলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব লব আগরওয়াল বলেন, ‘‘জনতা কার্ফুর পরবর্তী পদক্ষেপই লকডাউন। তা ঠিক মতো করতে পারলে সুফল মিলবে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসবে।’’
লকডাউন সত্ত্বেও জমায়েত আটকানো যাচ্ছে না অনেক রাজ্যেই। বিষয়টি নিয়ে সোমবার মুখ্যসচিব এবং পুলিশের প্রধানকে নিয়ে বৈঠক করেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহ। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কার্ফু জারি হয়েছে পাঞ্জাবে। কার্ফু চলাকালীন কাউকে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না। লকডাউন নিশ্চিত করতে রাজ্যে কার্ফু ঘোষণা করেছে মহারাষ্ট্র সরকারও। কার্ফু জারি হয়েছে পুদুচেরিতেও।
করোনা মোকাবিলায় দেশের ৩০টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সব ক’টি জেলায় লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেব বলছে, দেশে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছে মহারাষ্ট্রে। সেখানে কোভিড-১৯ রোগাক্রান্তের সংখ্যা ৭৪। তামিলনাড়ুতে সোমবার তিন জন নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা