কোহিনুর চাওয়ার কোনো আইনগত ভিত্তি নেই ভারতের : সুপ্রিম কোর্ট
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৮ এপ্রিল ২০১৯, ১৬:৪৬
ভারতবর্ষ থেকে পৃথিবীবিখ্যাত হীরা কোহিনুর নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ব্রিটেনে। কয়েকদিন আগে পাকিস্তান এই হীরা ফেরত পাওয়া দাবি করেছিল। ভারতও সম্প্রতি এমন একটি জনস্বার্থ মামলা করেছিল সুপ্রিম কোর্টে। কিন্তু দেশটির সর্বোচ্চ আদালত পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে কোহিনুর চাওয়ার কোনো আইনগত ভিত্তি তাদের নেই।
প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ জানান, ইংল্যান্ডের কাছ থেকে এই হীরা ফেরত চাওয়ার দাবির পিছনে কোনো আইনগত যুক্তি নেই।
এর আগে ‘অল ইন্ডিয়া হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড সোশ্যাল জাস্টিস’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তোলা একই দাবি খারিজ করে দিয়েছিল ভারতের শীর্ষ আদালত। তখনো তারা একই ভাষ্য প্রদান করেছিলেন।
সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের বিশেষ বেঞ্চ বলেন, আমরা বিভিন্ন নথি পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর এই হীরা ফেরত পাওয়ার দাবির পিছনে কোনো যুক্তি খুঁজে পাচ্ছি না। তাই আমরা বিষয়টি নিয়ে শীর্ষ আদালতের পুরনো সিদ্ধান্তই বহাল রাখছি।
কয়েক দিন আগে কোহিনুর হীরা ফেরত নিতে নিজেদের দাবির কথা জানিয়েছিল পাকিস্তানও। ইসলামাবাদ যুক্তি দিয়েছিল, লাহোর ছিল শিখদের রাজধানী। লাহোর চুক্তির মাধ্যমেই কোহিনুর নিজেদের কাছে নিয়ে যায় ব্রিটিশরা। লাহোরেই রাখা ছিল কোহিনুর। তাই এ হীরা ফেরত আসবে লাহোরেই।
পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী তখন বলেছিলেন, ব্রিটিশ রাজ পরিবারের হাত থেকে এই হীরা ফেরত দেয়ার দাবি জানাচ্ছি আমরা। এই হীরার লাহোর জাদুঘরে ঠাঁই পাওয়া উচিত। জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকা-, বাংলার দুর্ভিক্ষ এবং কোহিনুর নিয়ে নেয়ার মতো ঘটনাগুলো ব্রিটিশদের জন্য কলঙ্কজনক। প্রতিটি ঘটনার জন্যই তাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের কাছে।
১৮৪৯ সালে পাঞ্জাব দখলের পর ১১ বছরের পাঞ্জাব কেশরী রণজিৎ সিংহের ছেলে দিলীপ সিংহের সঙ্গে লাহোর চুক্তি করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। সেই চুক্তিমাফিক পঞ্জাবের বালক রাজা দিলীপ সিংহের কাছ থেকে উপহার হিসেবে কোহিনুর হীরা নিজেদের হেফাজতে নেয়। একপাক্ষিক এ চুক্তিতে দিলীপ সিংহের কাছ থেকে প্রায় জোর করেই কোহিনুর কেড়ে নেয়া হয়েছিল বলে দাবি ভারতীয় ঐতিহাসিকদের।
লাহোর চুক্তির তিন নম্বর অনুচ্ছেদে লেখা ছিল, ‘শাহ সুজা-উল-মুলুকের কাছ থেকে রণজিৎ সিংহ যে কোহিনুর হীরা নিয়েছিলেন, সেই হীরা ইংল্যান্ডের মহারানিকে দেবেন দিলীপ সিংহ।
ভারতের ঐতিহাসিকরা বলেন, ১১ বছরের দিলীপ সিংহের কাছ থেকে এই হীরা নেয়া নিয়ে বিবেকের দংশনে ভুগতেন রানি ভিক্টোরিয়াও। ইংল্যান্ডে এই হীরা পৌঁছালেও তা তখনো ইংল্যান্ডের রাজমুকুটে জায়গা পায়নি। শোনা যায়, ইংল্যান্ডের রাজপ্রাসাদ বাকিংহাম প্যালেসে দলীপ সিংহের কাছ থেকে ব্যক্তিগত অনুরোধের মাধ্যমে এই কোহিনুর হীরা ফের উপহার হিসেবে নিয়েছিলেন রানি ভিক্টোরিয়া। সাজানো এ ঘটনার পরই নিজের রাজমুকুটে কোহিনুর বসিয়েছিলেন তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা