৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬ মাঘ ১৪৩১, ২৯ রজব ১৪৪৬
`

উত্তরাখণ্ডে চালু হওয়া সব ধর্মের মানুষের জন্য একই নিয়ম নিয়ে বিতর্ক

- ছবি : সংগৃহীত

ভারতের বিজেপিশাসিত রাজ্য উত্তরাখণ্ডে সোমবার থেকে চালু হয়েছে বিতর্কের কেন্দ্রে থাকা ইউনিফর্ম সিভিল কোড (ইউসিসি) বা অভিন্ন দেওয়ানী বিধি। এর ফলে যেকোনো ধর্মের মানুষের ক্ষেত্রে বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ, উত্তরাধিকার, ভরণপোষণ, দত্তক নেয়ার মতো বিষয়ে একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।

বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য যে পৃথক পৃথক পার্সোনাল ল বা পারিবারিক আইন রয়েছে, তা এই সমস্ত ক্ষেত্রে কার্যকর হবে না। তবে তফসিলি উপজাতিকে অভিন্ন দেওয়ানী বিধির আওতা থেকে বাদ রাখা হয়েছে।

শুরু থেকেই এই অভিন্ন দেওয়ানী বিধি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে, রাজনৈতিক চাপানউতরও চলেছে। উত্তরাখণ্ডে এই বিধি সোমবার থেকে কার্যকর হতে চলেছে সেই ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই বিরোধীদের নিশানায় রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী ও তার সরকার।

কংগ্রেসের দাবি, এটা বিজেপির ‘পাইলট প্রজেক্ট’ (পরীক্ষামূলক প্রকল্প)। পুরো দেশে এই বিধি কার্যকর করা সম্ভব হবে না।

অন্যদিকে, জনতা দল (ইউনাইটেড), সমাজবাদী পার্টি (এসপি) এবং অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম)-সহ অন্য বিরোধী দলগুলোও এর প্রতিবাদ জানিয়েছে।

এআইএমআইএম-এর প্রেসিডেন্ট আসাদুদ্দিন ওয়াইসির অভিযোগ, মুসলমানদের ‘নিশানা’ করতেই এই বিধি চালু করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, সংখ্যাগরিষ্ঠর বেঁধে দেয়া নৈতিকতার’ মাপকাঠিতে সংখ্যালঘুদের অধিকার কেড়ে নেয়া যায় না- এই যুক্তি দেখিয়ে আগেই এর তীব্র বিরোধিতা করেছিল অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড।

উত্তরাখণ্ডে সোমবার এই বিধি চালু হওয়ার পরই জামায়তে উলেমা-এ-হিন্দ জানিয়েছে, অভিন্ন দেওয়ানী বিধিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হবে তারা। পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য তাদের আইনজীবীরা এর সাংবিধানিক ও আইনি দিকগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করেছেন।

তবে শেষজ্ঞদের মতে, বিজেপির কাছে অভিন্ন দেওয়ানী বিধি হলো ‘রাজনৈতিক অস্ত্র’।

অভিন্ন দেওয়ানি বিধির উল্লেখযোগ্য দিক
নতুন এই আইন জারির ফলে, উত্তরাখণ্ডের যেকোনো বাসিন্দার ক্ষেত্রে ধর্ম নির্বিশেষে বিয়ে, বিবাহ বিচ্ছেদ, উত্তরাধিকার, দত্তক নেয়ার মতো বিষয়ে একই বিধি কার্যকর হবে।

সমস্ত ধর্ম এবং সম্প্রদায়ের কন্যা সন্তানরাই সম্পত্তিতে সমান অধিকার পাবেন। তিন তালাক, বহুবিবাহ, বাল্যবিবাহ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান মেনেই বিয়ে হবে কিন্তু বিয়ের পর তা নথিভুক্ত করা বাধ্যতামূলক। বিয়ের জন্য নির্দিষ্ট বয়স বেঁধে দেয়া হয়েছে। ছেলেদের ক্ষেত্রে এই ন্যূনতম বয়স ২১ বছর এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে তা ১৮ বছর।

এক স্ত্রী জীবিত থাকা অবস্থায় দ্বিতীয়বার বিয়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বহুগামীতাও নিষিদ্ধ।

বিয়ের মতোই বিবাহবিচ্ছেদ, লিভ-ইন সম্পর্কের মতো বিষয়গুলোতে রেজিস্ট্রেশন করা বাধ্যতামূলক।

লিভ-ইনের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন
বিয়ে না করে কোনো যুগল একত্রে বসবাস বা লিভ-ইন করতে পারেন, কিন্তু তাদের নিয়ম মেনে রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে। লিভ-ইনের ক্ষেত্রে ভুল তথ্য দিলে বা নিয়ম না মানলে তিন মাসের জেল এবং ২৫ হাজার টাকা জরিমানা হতে পারে।

লিভ-ইন সম্পর্কের ক্ষেত্রে নথিভুক্ত করতে এক মাস দেরি হলে তিন মাসের কারাবাস বা ১০ হাজার রুপি জরিমানা হতে পারে।

২১ বছরের নিচে যুগল একত্রে থাকতে চাইলে তাদের অভিভাবকের সম্মতি প্রয়োজন।

বিয়ে না করে একত্রে বসবাসকারী যুগলের সন্তান সমস্ত অধিকার পাবে।

যদি ওই যুগল একত্রে না থাকার সিদ্ধান্ত নেন, তাও নথিভুক্ত করাতে হবে। এক্ষেত্রে দু’জনেরই সম্মতি প্রয়োজন।

উত্তরাখণ্ডের সমস্ত নাগরিক, যারা অন্যত্র বসবাস করছেন, তাদের ক্ষেত্রেও এই বিধি কার্যকর হবে।

ইউসিসির বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া মিলেছে বিভিন্ন মহল থেকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লিভ-ইন সম্পর্কে থাকা এক কলকাতার যুগল বলেছেন, ‘উত্তরাখণ্ড সরকার যে রেজিস্ট্রেশনের কথা বলেছে তার ভালো-খারাপ দু’দিকই আছে। ভালো কারণ, রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে প্রতিবেশীদের কেউ আর আমাদের মতো কাপলকে (যুগলদের) বাঁকা চোখে দেখবে না। আবার একইসাথে একেবারে জীবনের এত খুঁটিনাটি ব্যাপারে সরকারের জানাটা, ব্যক্তিগত বিষয়ে নাক গলানোর মতোই।’

অভিন্ন দেওয়ানী বিধিতে বিবাহবন্ধন ছাড়া একত্রে বসবাসকারী যুগলদের সন্তানদের সমস্ত অধিকার রক্ষার কথা বলা হয়েছে, তার প্রশংসা করেছেন বিশেষজ্ঞদের অনেকেই। যদিও সেখানে সমকামী যুগলের অধিকার নিয়ে প্রশ্ন করেছেন কেউ কেউ।

মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী কী বলছেন?
অভিন্ন দেওয়ানী বিধির পক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তি ছিল একই পরিবারের সদস্যদের জন্য যেমন ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম হতে পারে না, তেমনি একই দেশের নাগরিকদের জন্যও আলাদা আইন থাকা উচিত নয়।

পাশাপাশি তিন তালাক, বহুগামিতার মতো বিষয়ের অবসান ঘটিয়ে লিঙ্গ-সমতা বজার রাখা এবং নারী উন্নয়নে সাহায্য করবে বলেও গেরুয়া শিবিরের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়েছিল।

গত বছর বিজেপিশাসিত উত্তরাখণ্ডে বিধানসভার অধিবেশনে এই বিধি-সংক্রান্ত বিল পাশ হয়েছিল। সোমবার থেকে তা আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়েছে ওই রাজ্যে।

উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় এই বিধির প্রশংসা করে জানিয়েছেন, তার আশা ভবিষ্যতে পুরো দেশেই এই বিধি চালু হবে।

অন্যদিকে, একে ঐতিহাসিক ঘটনা বলে আখ্যা দিয়ে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী বার্তা সংস্থা এএনআইকে বলেছেন, ‘অভিন্ন দেওয়ানী বিধি হলো বৈষম্য দূর করার একটা সংবিধানিক ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে সমস্ত নাগরিকদের সমান অধিকার দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এটা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে নারীদের প্রকৃতপক্ষে ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এর মাধ্যমে হালালা, বহুবিবাহ, বাল্যবিবাহ, তিন তালাকের মতো কুপ্রথা পুরোপুরি বন্ধ করা যাবে।’

বিরোধীদের কটাক্ষের জবাবও দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘আমি আরো একবার স্পষ্ট করে দিতে চাই, অভিন্ন দেওয়ানী বিধি কোনোভাবেই কোনো ধর্ম বা সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নয়। এখানে কাউকে নিশানা করার কোনো প্রশ্ন নেই।’

বিরোধীদের অভিযোগ
অভিন্ন দেওয়ানী বিধি নিয়ে বিতর্ক অব্যহত রয়েছে। একে কেন্দ্র করে প্রথম থেকেই বিরোধীদের কড়া নিশানায় রয়েছে গেরুয়া শিবির।

কংগ্রেস নেতা সলমান খুরশিদ বলেছেন, ‘এটা (অভিন্ন দেওয়ানী বিধি কার্যকর) হতে দিন, তারপর আমরা দেখব। উত্তরাখণ্ডে আমারও বাড়ি আছে। এটা কি আমার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে? উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দারা যেখানেই থাকুন না কেন, তাদের ওপর এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু ঠিক কতদূর পিছু করবে ইউসিসি? ওরা কী চিন্তা ভাবনা নিয়ে এটা করেছে- আমরা বুঝতে পারছি না। যদি এর মধ্যে এমন কিছু থাকে যা নিয়ে আলোচনা করা দরকার, তাহলে আমরা তা করব। প্রয়োজনে আমরা আদালতে চ্যালেঞ্জ জানাব।’

কংগ্রেস মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি উত্তরাখণ্ডে অভিন্ন দেওয়ানী বিধি চালু হওয়ার ঘটনাকে ‘পাইলট প্রকল্প’ বলে মন্তব্য করেছেন।

তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এটা পাইলট প্রজেক্ট করার চেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ ওদের কাছে এই বিধির বিষয়ে ঐকমত্য নেই। তাই একটা পাইলট প্রকল্প চালু করেছে।’

একাধিক রাজ্য বিজেপিশাসিত হলেও কেন উত্তরাখণ্ডকেই বেছে নেয়া হলো এই বিধি চালু করার জন্য, সেই বিষয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

এই প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা গুলাম আহমেদ মীর সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘মোদি সরকার জাতীয় স্তরে এই উদ্যোগ নিতে চেয়েছিল। কিন্তু দেশ এতে সম্মতি দেয়নি। তাই তারা একটা ছোট রাজ্যে এই উদ্যোগ নিচ্ছে... উত্তরাখণ্ড এমনিতেই মুসলিম অধ্যুষিত রাজ্য নয় এবং সেখানে কোনো সমস্যা হবে না। খবর বাঁচিয়ে রাখার জন্য তারা এটাকে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে ব্যবহার করছে মাত্র।’

‘নিশানা করা হচ্ছে’
উত্তরাখণ্ডে অভিন্ন দেওয়ানী বিধি প্রয়োগের তীব্র বিরোধিতা করেছেন এআইএমআইএম-এর প্রেসিডেন্ট আসাদুদ্দিন ওয়াইসি। তার পাল্টা যুক্তি এই বিধি ‘অভিন্ন নয়’, বরং নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে ‘নিশানা করা হচ্ছে’।

তার কথায়, ‘হিন্দু বিবাহ আইন, হিন্দু উত্তরাধিকার আইন এবং উপজাতিকে যখন এখানে ব্যতিক্রম বলে ধরা হয়েছে তখন একে অভিন্ন সিভিল কোড বলা যেতে পারে না। এটা কীভাবে অভিন্ন? এটা কি শুধু মুসলিমদের বিয়ে এবং ডিভোর্সকে বেছে বেছে নিশানা করার জন্য তৈরি?’

তার অভিযোগ, ধর্মান্তরকরণের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে এই বিধি।

তার কথায়, ‘অভিন্ন সিভিল কোডের কথা বলছে, কিন্তু যদি কেউ হিন্দু ধর্ম থেকে ধর্মান্তরিত হতে চায়, তাদের আগে অনুমোদন নিতে হবে। সুতরাং এটা অভিন্নতা নয়, এটা নির্বাচনী লক্ষ্যবস্তু মাত্র।’

এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ওয়াইসি প্রস্তাবিত ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে উদ্বেগও উদ্বেগ জানিয়ে বলেছেন, এ জাতীয় একের পর এক পদক্ষেপের একমাত্র লক্ষ্য হলো মুসলমানদের নিশানা করা।

যেভাবে দেখছেন আইনজীবী ও সমাজকর্মীরা
সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী কলিন গঞ্জালভেস ব্যাখ্যা করেছেন, ‘যদি সংবিধানের কথা মাথায় রেখে অভিন্ন দেওয়ানী আইনের ব্যাখ্যা হয়, তাহলে তা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। যদি কোনো ক্ষেত্রে বৈষম্য থেকে থাকে, তাহলে আইনসঙ্গত সমাধানের সুযোগ আছে। কিন্তু বিজেপির অভিন্ন দেওয়ানী বিধি সংবিধানের চেতনার সাথে সমতা রেখে তৈরি হয়নি। এটা একটা রাজনৈতিক অস্ত্র মাত্র যা তারা ধর্মীয় মেরুকরণের জন্য ব্যবহার করছে।।’

একই মত প্রকাশ করেছেন সমাজকর্মী শবনম হাশমি।

তিনি বলেছেন, ‘এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে এটা সমতা-ভিত্তিক কোনো বিধি নয়। এটা রাজনৈতিক অস্ত্র যা বিজেপি ধর্মীয় মেরুকরণের জন্য ব্যবহার করছে। অভিন্ন দেওয়ানী বিধি কী হতে পারে সেই সম্পর্কে বিজেপির কোনো ধারণা নেই, সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনাও নেই। বিজেপির চালু করা অভিন্ন দেওয়ানী বিধিতে সমতা নেই। বরং তারা সমস্ত কিছুকে জোর করে হোমোজেনাইজ (এক করার) করার চেষ্টা করছে।’

বিষয়টাকে বিশদে ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। তার কথায়, ‘প্রতিটা পার্সোনাল ল’য়ের কিছু না কিছু ভালো বিষয় রয়েছে, আবার এমনও অনেক বিষয় রয়েছে, যা সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন করা প্রয়োজন। কিন্তু বিজেপি যেভাবে চাপিয়ে দিচ্ছে সেটা করা যায় না।’

এই নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ভারতে গৃহ সহিংসতা রুখতে যে আইন রয়েছে, তার প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন তিনি।

দিল্লির এই সমাজকর্মী বলেন, ‘ধর্মনির্বিশেষে মানুষ দ্বারস্থ হতে পারে এমন আইনেরও প্রয়োজন আছে। যেমন গার্হস্থ্য হিংসা রুখতে যে আইন রয়েছে সেখানে হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান- যেকোনো ধর্মের নারীরা বিচার চাইতে পারেন। আমি নিজে দত্তক-সংক্রান্ত আইনকে ধর্ম নিরপেক্ষ করার জন্য বহু বছর আইনি লড়াই লড়েছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে এই লড়াই করেছি। একজন মুসলিম নারী হিসেবে আমি যখন কন্যাসন্তানকে দত্তক নিতে ছেয়েছিলাম। আমাকে বলা হয়েছিল, শুধুমাত্র গার্জিয়ানসিপ পাব, নয় বছর আইনি লড়াই চালিয়েছিলাম আমি। শেষপর্যন্ত বদল এসেছিল।’

তারই দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের ফলে এক ঐতিহাসিক রায় দিয়েছিল ভারতের শীর্ষ আদালত।

পারিবারিক আইন ব্যতিরেকে দত্তক নেয়ার ক্ষেত্রে স্বীকৃতি মিলেছিল ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমস্ত দত্তক নিতে ইচ্ছুক অভিভাবকদের।

নারীর ক্ষমতায়নের দিক থেকে অভিন্ন দেওয়ানী বিধির গুরুত্ব রয়েছে বলে দাবি জানানো হয়েছে বিজেপির পক্ষ থেকে।

এই বিষয়ে আইনজীবী কলিন গঞ্জালভেস বলেন, ‘তিন তালাক বা বহুগামীতার মতো বিষয় যা নারীদের জীবনে প্রভাব ফেলে, তার আইনি অবসান হওয়া দরকার। কিন্তু বিজেপি মোটেই লিঙ্গ-সমতা নিয়ে ভাবে না, নারীর ক্ষমতায়ন নিয়েও ভাবিত নয়। বিজেপির লক্ষ্য একটাই, আর সেটা তারা স্পষ্ট করে দিয়েছে।’

প্রশ্ন উঠেছে, কেন উত্তরাখণ্ডেই কেন প্রথম চালু হলো এই আইন।

শবনম হাশমি বলেছেন, ‘উত্তরাখণ্ড বিজেপিশাসিত রাজ্য এই বিষয়টা যেমন ঠিক, তেমন অন্য কারণও রয়েছে। আসলে দেশকে হিন্দুরাষ্ট্রে পরিণত করার এই যে চিন্তাভাবনা, তার সূত্রপাত গুজরাটের হাত ধরে। মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এমন অনেক রাজ্যই তাদের পরীক্ষা নিরীক্ষার তালিকায় ছিল। এখন উত্তরাখণ্ড হয়েছে, এরপর অন্যান্য রাজ্যেও হবে।’
সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement