অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙে আরো তলানিতে ভারতীয় রুপি
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪:৪৩
অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙে আরো তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে ভারতীয় রুপির দাম। সপ্তাহের প্রথম দিনে ০.৪ শতাংশ পতনের সাথে সাথেই ডলারের তুলনায় রুপির দাম দাঁড়াল ৮৬.৩৯ টাকা। একে অর্থনীতির জন্য বিরাট ধাক্কা মনে করছে দেশটির অর্থনীতিবিদরা।
মূলত ট্রাম্পের ক্ষমতায় ফেরা ও মার্কিন অর্থিনীতির জেরে ভারতীয় রুপির এই পতনের ধারা অব্যাহত থাকবে বলেও অনুমান করা হচ্ছে।
গত শুক্রবার এক ডলারের তুলনায় টাকার দর ছিল ৮৫.৯৬৫। সোমবার বাজার খোলার পর তা আরো কমে দাঁড়িয়েছে ৮৬.৩৯। কিন্তু কেন এই পতন? বিশেষজ্ঞদের দাবি, ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের ফলে মার্কিন নীতিতে বহু পরিবর্তন আসতে চলেছে। আমেরিকার অর্থনীতিও অনেকখানি উন্নত হয়েছে আগের তুলনায়। মার্কিন শ্রম দফতরের সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, এই দেশে চাকরির ক্ষেত্র আশাতীতভাবে বেড়েছে। অর্থনীতিবিদদের পূর্বাভাষ ছিল দেশে এক লাখ ৬০ হাজার নতুন চাকরি যোগ হতে পারে। সেই তুলনায় গত অক্টোবর মাসে এখানে দুই লাখ ৫৬ হাজার নতুন চাকরি যোগ হয়েছে। বেকারত্ব দূর করতে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি বিদায়বেলায় মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে উঠে পড়ে লেগেছে বাইডেনের সরকার।
মার্কিন অর্থনীতির এই অগ্রগতি সরাসরি প্রভাব ফেলেছে ভারতীয় মুদ্রায়। এমনিতে ডলারের তুলনায় দুর্বল ছিল ভারতীয় টাকা। তার উপর আমেরিকার আর্থিক উন্নতি ডলারের মূল্য বাড়িয়েছে। ফলস্বরূপ টাকার দাম আরো পড়তে শুরু করেছে। যেকোনো দেশের টাকার দর মূলত নির্ভর করে ওই দেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের উপর ভিত্তি করে। আমদানি কম ও রফতানি বেশি হলে দেশের আর্থিক উন্নতির সাথে সাথে বাড়ে টাকার দাম। ভারতের ক্ষেত্রে মোদি সরকার আত্মনির্ভর ভারতের মতো পদক্ষেপ নিলেও বিদেশী পণ্য আমদানি নির্ভরতা খুব একটা কমেনি। পণ্য রফতানিতেও খুব বিশেষ গতি আসেনি।
এর পাশাপাশি অর্থনীতিবিদদের আশঙ্কা, ট্রাম্প সরকার ক্ষমতায় আসার পর এইচ-১বি ভিসা বা বিদেশী কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত ভিসায় কড়া পদক্ষেপ নেয়া হতে পারে। এর জেরে যে ভারতীয়রা আমেরিকায় চাকরি করেন, তাদের উপর বড় প্রভাব পড়বে। আজও ভারতে বৈদেশিক মুদ্রার একটা বড় অংশ আসে বিদেশে চাকরিরত এসব ভারতীয়দের থেকে। ফলে এইচ-১বি ভিসা নীতি লাগু হলে টাকার দাম আরো তলানিতে নামতে পারে। ডলারের তুলনায় রুপির দুর্বল পারফরম্যান্সের ফলে ভারতীয় অর্থনীতির ক্ষেত্রে আমদানির খরচ বাড়তে পারে এবং মুদ্রাস্ফীতির উপর চাপ আরো বাড়তে পারে। যার সরাসরি প্রভাব পড়বে ভারতীয় অর্থনীতির উপর।
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন