১৮ অক্টোবর ২০২৪, ২ কার্তিক ১৪৩০, ১৪ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

আফগানিস্তানের ৩ প্রদেশে মানুষসহ জীবন্ত প্রাণীর ছবি নিষিদ্ধ

তালেবানের এক সদস্য ক্যামেরা বন্ধ করছেন - ছবি : সংগৃহীত

আফগানিস্তানের শাসক গ্রুপ তালেবান তিনটি প্রদেশে মানুষসহ ‌ যেকোনো জীবন্ত প্রাণীর ছবি প্রচারের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে । তাদের এই কঠোর পদক্ষেপের বিরুদ্ধ সাংবাদিকতা ও নাগরিক স্বাধীনতা গোষ্ঠীগুলো ব্যাপক সমালোচনা করেছে।

তালেবানের এক কর্মকর্তা এ সপ্তাহে বলেন যে তাখার, কান্দাহার ও মায়দান ওয়ার্দাক প্রদেশকে জীবন্ত কিছুর ছবি দেখানো বন্ধ করতে বলা হয়েছে।

ভয়েস অফ আমেরিকাকে বিশেষজ্ঞরা বলেন, তালেবান স্থানীয় মিডিয়ার লোকজনের সাথে দেখা করে বলেছে যে এ নিয়মটি তাদের ক্ষেত্রেও প্রয়োজ্য।

ন্যায় প্রচার ও অন্যায় রোধ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাইফুল ইসলাম খাইবার বলেন, নতুন নৈতিকতা আইনের অংশ হিসেবে এ আদেশটি গোটা দেশেই আরোপ করা হবে। তিনি ফ্রান্সের বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, 'এই আইন সমস্ত আফগানিস্তানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।'

মুখপাত্রটি আরো বলেন, তালেবান জনগণকে এ কথা বোঝাবে যে জীবন্ত কোনো কিছুর ছবি তোলা ইসলামি আইনের পরিপন্থী।

ছবির উপর এই নিষেধাজ্ঞা হচ্ছে, তালেবানের ইসলামের ব্যাখ্যা-সম্বলিত নতুন অনুমোদিত আইনের অংশ। এই আইনে মুসলমানদের নিয়ে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করা কিংবা ইসলামি আইন লঙ্ঘন করা নিষেধ করা হয়েছে । তাছাড়া এতে নারীদের অধিকারও কমানো হয়েছে।

কর্মকর্তারা এর শাস্তি ঠিক কী হবে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি। তবে বলেছেন, এটি ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত গত তালেবান আমলের অধীনে যে রকম শাস্তি ছিল, সে রকমই হবে অর্থাৎ ছবি দেখানোর জন্য কারাদণ্ড হবে।

সাউথ এশিয়ান এসোসিয়েশন অফ রিপোটার্স ক্লাব এবং জার্নালিস্ট ফোরামের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ গ্রান ভয়েস অফ আমেরিকা বলেছেন, নতুন এই সব নির্দেশ মিডিয়ার জন্য দুশ্চিন্তার বিষয়।

আফগান সাংবাদিক গোলাম জিলানি জোয়াক ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন যে এ ধরণের নিষেধাজ্ঞা 'নজিরবিহীন', অন্য কোনো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে এমন নিষেধাজ্ঞা নেই।

বিশ্বব্যাপী অনেক ইসলামি বিশেষজ্ঞ জীবন্ত কারো ছবি বা ভিডিও দেখানোর ব্যাপারে আপত্তির কিছু দেখেন না।

জোয়াক বলেন, 'আমার মনে হয়’এর কারণ (তালেবান সরকার) কর্তৃত্ববাদী সরকার। তারা মতপ্রকাশের ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে ভয় পায়; কাজেই তারা মিডিয়ার উপর এ রকম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।'

তিনি বলেন যে তালেবান 'ভিন্ন মতপোষণকারীদের কিংবা তাদের সরকারের কোনো রকম সমালোচনা সহ্য করে না।'

অধিকারবিষয়ক নজরদারি সংস্থাগুলো জানিয়েছে যে তালেবান আমলে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে।

হিউমান রাইটস ওয়াচের নারী অধিকারবিষয়ক সহযোগী পরিচালক হিদার বার ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন যে মানবাধিকারের বিষয়টি তুলে ধরতে তালেবানের নির্দেশ ‘তাৎপর্যটূর্ণ প্রভাব’ ফেলবে।

তিনি বলেন, এ আইনটি আফগানিস্তানে নারী অধিকার কর্মীদের জন্য উদ্বেগজনক। কারণ তারা তাদের কন্ঠস্বর তুলে ধরতে মিডিয়াকে ব্যবহার করে থাকেন।
সূত্র : ভিওএ


আরো সংবাদ



premium cement