১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

সেনাবাহিনীর ভাবমর্যাদা জনমনে প্রোথিত

সেনাবাহিনীর ভাবমর্যাদা জনমনে প্রোথিত - নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সংশ্লিষ্ট একটি বিষয় নিয়ে দেশে ব্যাপক আলোচনা চলছে। সেটি হলো সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব:) আজিজ আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা। বিষয়টি বেশ সংবেদনশীল। সাধারণ মানুষের বিশেষ আগ্রহেরও ব্যাপার এটি। কারণ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভাবমর্যাদা দেশের মানুষের মনের মণিকোঠায় ঠাঁই করে নিয়েছে। গত অর্ধশত বছর যাবৎ সুখে দুঃখে মানুষের পাশে থেকে তাদের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জন করেছে সেনাবাহিনী। কাজেই তাদের যেকোনো খবর মানুষের হৃদয়কে আন্দোলিত করে।

গত ২০ মে মধ্যরাতের পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার জেনারেল (অব:) আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে বিবৃতি দেন। এতে বলা হয়, ‘উল্লেখযোগ্য দুর্নীতিতে সম্পৃক্ততার কারণে বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব:) আজিজ আহমেদকে ‘ফরেন অপারেশন অ্যান্ড রিলেটেড প্রোগ্রামস অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস’ অ্যাক্টের ৭০৩১ (সি) ধারার আওতায় অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে পররাষ্ট্র দফতর। এর ফলে আজিজ আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অযোগ্য হবেন’ (প্রথম আলো: ২৫ মে ২০২৪)। অভিযোগ সম্পর্কে বলা হয়, ‘আজিজ আহমেদ সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করে গুরুতর দুর্নীতিতে জড়িত ছিলেন। বাংলাদেশে তার ভাইয়ের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জবাবদিহিতা এড়াতে তিনি সহায়তা করেন। সামরিক কন্ট্রাক্টগুলো অনিয়মের মাধ্যমে পাওয়ার ক্ষেত্রে আজিজ আহমেদ তার ভাইয়ের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন। ব্যক্তিগত লাভের জন্য ঘুষের বিনিময়ে তিনি সরকারি নিয়োগ দিয়েছেন’ (নয়া দিগন্ত : ২২ মে ২০২৪)। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘জেনারেল আজিজের কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান ও প্রক্রিয়ার প্রতি জনগণের বিশ্বাস ক্ষুণ্ন করতে ভূমিকা রেখেছে’ (প্রথম আলো; কামাল আহমেদ: ২৩ মে ২০২৪)। জেনারেল আজিজ এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান এবং সর্বৈব মিথ্যা বলে দাবি করেছেন।

অভিযোগগুলোর সত্যতা যাচাইয়ের দাবি রাখে। এই দায়িত্ব নিশ্চয়ই বাংলাদেশ সরকারের উপরই বর্তায় কারণ এর সাথে সরকারের স্বচ্ছতা ও ভাবমূর্তির প্রশ্ন জড়িত। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার তর্কে না গেলেও এ ধরনের অভিযোগ এমন একজন ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে আরোপিত হলো যা অত্যন্ত অবমাননাকর এবং হতাশাব্যঞ্জক। জেনারেল (অব:) আজিজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সম্ভবত ১৫তম সেনাপ্রধান। তার আগে ১৪ জন দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু কারো বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ শোনা যায়নি! কাজেই এ বিষয়টি সেনাবাহিনীর জন্য দুঃখজনক। সেনাবাহিনীর সব সদস্যই তাদের তারুণ্য, যৌবন, মেধা, যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা এবং শ্রম নিয়োজিত করে থাকেন একটি উদ্দেশ্যেই। সেটা হলো যে কোনো মূল্যে সততা, নিষ্ঠা এবং শৃঙ্খলা ধরে রেখে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের সংরক্ষণ।

অভিযোগগুলো নতুন নয়। এর আগেও আমরা আলজাজিরা চ্যানেলের ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ প্রামাণ্য চিত্রে এসব অভিযোগ উত্থাপিত হতে দেখেছি। তখন তিনি সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তা ছাড়া তারই কোর্সমেট কর্নেল (অব:) শহীদের সাথে তার ফাঁস হয়ে যাওয়া ফোনালাপ এবং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার সম্পর্কিত নানান ধরনের ট্রল বিষয়গুলোকে আরো জটিল করে তুলেছে। দেশীয় একটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল, ‘অসত্য তথ্য দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট বানিয়েছিলেন আজিজ আহমেদের ভাই হারিছ আহমেদ ও তোফায়েল আহমেদ ওরফে জোসেফ। নিজেদের ছবি দিয়ে নতুন নাম আর ভিন্ন ঠিকানা ব্যবহার করে তারা জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট সংগ্রহ করেছিলেন। ২০২১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, হারিছ আহমেদ জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও পাসপোর্ট নিয়েছেন মোহাম্মদ হাসান নামে। আর জোসেফ নিয়েছেন তানভীর আহমেদ তানজীল নামে। এ ধরনের কাজ জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন আইন ও পাসপোর্ট অধ্যাদেশ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। প্রথম আলোর খবরে বলা হয়, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ তোফায়েল আহমেদ ওরফে জোসেফ তৎকালীন রাষ্ট্রপতির ক্ষমায় মুক্তি পেয়েছিলেন। অন্য দুই ভাই হারিছ আহমেদ ও আনিস আহমেদের সাজা মওকুফ করেছিল সরকার। হারিছ দু’টি এবং আনিস একটি খুনের মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন। ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ তাদের সাজা মওকুফের প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আজিজ আহমেদ সেনাপ্রধান নিযুক্ত হওয়ার এক মাস আগে ২০১৮ সালের ২৭ মে সাজা মওকুফের পর ছাড়া পান জোসেফ। আর ৯ মাস পর হারিছ আহমেদ ও আনিস আহমেদের সাজা মওকুফের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়’(প্রথম আলো : ২২ মে ২০২৪)।

এই নিষেধাজ্ঞা জারির ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কোন্নয়ন ঘটনা প্রচারের প্রাক্কালে। গত ১৪ মে থেকে তিন দিন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ঢাকা সফর করে গিয়েছেন। তিনি সফরকালে এবার শুধু সরকারি কর্মকর্তাদের সাথেই আলোচনা করেন। একটু অস্বাভাবিক মনে হলেও কোনো বিরোধী পক্ষের সাথে তিনি বসেননি। এসব আলোচনায় কি মার্কিন প্রতিনিধিদল সরকারকে এ বিষয়টি অবহিত করেছিলেন? অবশ্য আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ বলেছেন যে, এ ব্যাপারে আমাদেরকে আগেই জানানো হয়েছিল। কিন্তু ডোনাল্ড লুর এই সফর উপলক্ষে আমাদের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বিভিন্ন বক্তব্যে বেশ অস্থিরতা ও অস্বস্তি পরিলক্ষিত হচ্ছিল! তবে একটি প্রশ্ন রয়েই গেল; জেনারেল আজিজের অবসরে যাওয়ার তিন বছর পর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে মার্কিনিরা কী অর্জন করতে চাচ্ছে? এটা কি শুধুই তাদের পররাষ্ট্রনীতির অংশ নাকি আরো কিছু রয়েছে সামনে?

সাম্প্রতিক এই নিষেধাজ্ঞায় জনমনে অনেক প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে। অনেক সন্দেহ দানা বেঁধেছে। সমালোচকেরা অতীতের সাথে এগুলো মেলানোর চেষ্টা করছে। সেনাপ্রধান হওয়ার মতো অধিকতর যোগ্য এবং জ্যেষ্ঠ অফিসারকে ডিঙ্গিয়ে তাকে সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল বলে তারা মনে করেন। জেনারেল আজিজের ফাঁস হওয়া একটি ফোনালাপে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জন্য তার ভাইদের অবদানের কথা তাকে দৃঢ়ভাবে বলতে শোনা গিয়েছিল। কেউ কেউ আরো পেছনে তাকিয়ে ২০১৪ সালের জাতীয় এবং উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জেনারেল আজিজের ভূমিকা মিলিয়ে নিচ্ছেন। নির্বাচনের আগে যেদিন জাতীয় পার্টির নেতা জেনারেল এরশাদ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিলেন সেই দিনই কাকতালীয়ভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শহরে-বন্দরে বিজিবির ব্যাপক টহল দেখা গিয়েছিল। সেই সময় তিনি বিজিবির মহাপরিচালক ছিলেন। ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে সেনাপ্রধান হিসেবে জেনারেল আজিজের বক্তব্য ছিল বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য। সেই নির্বাচনে দেশের অনেক অঞ্চলে বিরোধী পক্ষের নেতাকর্মীরা নির্বাচনী প্রচারণায় মাঠে নামলেই বিভিন্ন ধরনের অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হচ্ছিল। কিন্তু নির্বাচনের কয়েক দিন আগে জেনারেল আজিজ সাংবাদিকদেরকে বলেছিলেন, এত সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ তিনি এর আগে দেখেননি! তার সেই বক্তব্য বাস্তবতার সাথে কতটুকু মিল ছিল দেশবাসী দেখেছে। তা ছাড়া ওই নির্বাচনের সময় বিভিন্ন চ্যানেলে দেখা যায় নির্বাচন কেন্দ্র থেকে সাহায্য চাইতে আসা ভীত-সন্ত্রস্ত মানুষগুলোকে হতাশ করে সেনা টহলের একটি গাড়ি দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। সেই দিনের ওই নির্লিপ্ততার জন্য নিশ্চয়ই সংশ্লিষ্ট টহল দলকে দায়ী করা যাবে না। যে কোনো সেনাদল সব সময়ই ঊর্ধ্বতনের আদেশ মতো কাজ করে থাকে।

অথচ সেনাপ্রধান নিয়োজিত হওয়ার পর তিনি সাভার সেনানিবাসে সফরকালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেছিলেন সেনাবাহিনী তার অধীনে পেশাদারিত্বের সাথেই দায়িত্ব পালন করবে। তার সেই বক্তব্য জনগণের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছিল। ২০১৩ সালে ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনে উত্থিত পরিস্থিতি সামাল দেয়ার অভিযানেও তিনি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। ২০২০ সালে কক্সবাজারে ওসি প্রদীপের গুলিতে মেজর (অব:) সিনহা হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে অবসরপ্রাপ্ত অফিসারদের সংস্থা ‘রাওয়া’ ক্লাব যখন আন্দোলনের হুমকি দিয়েছিল তখন তার নেতৃত্বেই ‘রাওয়ার’ গঠনতন্ত্রে আমূল পরিবর্তন করে এর খোলনলচে পাল্টে ফেলা হয়েছিল। এই সব কারণে সচেতন মহলে অনেক প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। তবে সাবেক সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে দেশের ইতিহাসের প্রথম নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জন্য বিব্রতকর হতে পারে। এই অভিযোগের দায় সরকার কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। একজন সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগে উত্থাপিত বিষয়গুলো সরকারের চোখ আড়াল করে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। আর সেটা হলে তা হবে সরকারের ব্যর্থতা অথবা নির্লিপ্ততা। সেটি সরকারের ভাবমর্যাদা খর্ব করবে এবং সশস্ত্র বাহিনীর জন্য তা হবে অত্যন্ত দুঃখজনক।

তবে যত বড় আঘাতই আসুক না কেন আমাদের সেনাবাহিনী ঠুনকো কোনো প্রতিষ্ঠান নয়। এই বাহিনীর গৌরবময় ঐতিহ্য এবং ঈর্ষণীয় সাফল্য রয়েছে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের প্রথম প্রহরে যখন পাকবাহিনী নিরীহ বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তখন সেনাবাহিনীই মুক্তিযুদ্ধের নিউক্লিয়াস হয়ে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছিল। বাঙালি সৈনিকরা নির্ঘাত মৃত্যুদণ্ডের খড়গ মাথায় নিয়ে দেশের বিভিন্ন সেনানিবাসে পাক জান্তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। এতে মুষড়ে পড়া জাতি অগ্নিস্ফুলিঙ্গের মতো ঝলসে উঠেছিল। সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে শুরু করেছিল মুক্তিযুদ্ধ। স্বাধীন করার পর দেশ পুনর্গঠন, স্বৈরশাসক এরশাদের কবল থেকে মুক্ত হয়ে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন, পার্বত্য চট্টগ্রামের অখণ্ডতা রক্ষা, বন্যা-জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদিতে জাতিকে আগলে রেখেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির কাজে সেনাবাহিনীই জাতিকে পথ দেখিয়েছিল। আর দেশের ক্রান্তিলগ্নে অনেকেই জাতির পাশ থেকে সরে গেলেও এই সেনাবাহিনী কোনো দিনই জনগণকে ছেড়ে যায়নি।

সেনাবাহিনী গড়ে তোলার জন্য আমাদের পূর্বপুরুষেরা অকাতরে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছেন। সেনা অফিসাররা ঘাম, রক্ত ও শ্রম দিয়ে এ বাহিনীকে তিলে তিলে গড়ে দিয়ে গেছেন। তারা হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে রিক্রুট এবং অফিসার ক্যাডেটদেরকে সততা ও সত্যনিষ্ঠার চর্চা করিয়েছেন এবং দেশপ্রেমের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। আর জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘চির উন্নত মম শির’ বাণীর জীবন দর্শনে উজ্জীবিত হয়ে নবীন সেনাদের শপথ করিয়েছেন, জান দেব তবু মান দেব না’।

এমন একটা সেনাবাহিনীর মনোবলে এতটুকুও চিড় ধরাতে পারবে না একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ । এসব অভিযোগ যদি সত্য প্রমাণিত হয় তবে তার শাস্তি হবে। পুরো বাহিনীর ওপর এর কোনো দায় বর্তাবে না। সে দায় রাজনৈতিক।

আমাদের সেনাবাহিনীর ওপর বাইরের নেকড়ের রক্তচক্ষু রয়েছে। তারা চাচ্ছে না এ দেশের সেনাবাহিনী শক্তিশালী পেশাদার বাহিনী হিসেবে টিকে থাকুক। তাই তারা একটির পর একটি ষড়যন্ত্রের আঁচড় দিয়েই যাচ্ছে। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারিতে পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে অনেকেই সেই নেকড়ের হিংস্র থাবা বলেই মনে করতে চান।

কিন্তু বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অনেক দূর এগিয়েছে। বিশে^র দরবারে একটি সুশিক্ষিত পেশাদার বাহিনী হিসেবে ইতোমধ্যেই প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। আর আমাদের সেনা নেতৃত্ব যে কোনো মূল্যেই আমাদের প্রিয় সেনাবাহিনীর মনোবল, শৃঙ্খলা, সততা এবং শক্তি অটুট রাখতে বদ্ধপরিকর। কাজেই একজন মাত্র সাবেক জেনারেলের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ স্পর্শকাতর হলেও তা আমাদের সেনাবাহিনীকে সামান্যতম দুর্বল করতে সক্ষম হবে না। কারণ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বুনিয়াদ মানুষের হৃদয়ের গভীরে প্রোথিত রয়েছে।

লেখক : নিরাপত্তা বিশ্লেষক
ইমেইল : [email protected]


আরো সংবাদ



premium cement