০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ন ১৪৩১,
`

তুরস্ক-মিসর সম্পর্কোন্নয়ন

তুরস্ক-মিসর সম্পর্কোন্নয়ন - ফাইল ছবি

তুরস্ক এবং মিসরের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আছে। ১২ বছর ধরে দুই দেশের সম্পর্ক ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে ছিল। সম্প্রতি তাদের মধ্যে এক নতুন অধ্যায়ের উন্মোচন হতে যাচ্ছে। ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ এরদোগানের মিসর সফরের মধ্য দিয়ে এ নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। এরদোগান বৈশ্বিক মঞ্চে মিসরের সাথে সৌহার্দ্যরে সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার কথাও বলে আসছেন বারবার। সিসিও বলেছিলেন, কোনো সমস্যা নেই, তিনি আসতে পারেন। কিন্তু সে আসা আর হয়নি।
মিসরের সাথে তুরস্কের উত্তেজনা এবং তার সাম্প্রতিক বন্ধুত্বের প্রচেষ্টা উভয়ের সাথে এরদোগানের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ ও আঞ্চলিক উচ্চাকাক্সক্ষার অনেক বিষয় জড়িয়ে রয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। ২০০২ সালে এরদোগানের একেপি, জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি ক্ষমতায় আসার পর মধ্যপ্রাচ্যের ঘটনাবলিতে তুরস্কের সম্পৃক্ততা ক্রমাগত বাড়তে শুরু করে।

একে পার্টির একটি জনপ্রিয় সর্বজন সমর্থিত সেøøাগান ছিল, ‘প্রতিবেশীদের সাথে শূন্য সমস্যা।’ সব দেশের সাথে বিরোধ মিটিয়ে ফেলা ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখা তুরস্কের অভিপ্রায় ছিল। তবে সার্বিক বিচারে এটি অনেক ঝুঁকিপূর্ণ সেøাগান। কেননা, ইসরাইলসহ পার্শ্ববর্তী ও কিছু দূরবর্তী দেশের সাথে তুরস্কের স্বার্থ নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। তুরস্কের সাথে সম্পর্কের বেশির ভাগটাই বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতামূলক হলেও চলমান গাজা যুদ্ধ এসব হিসাব-নিকাশ পাল্টে দিয়েছে।

স্বাভাবিকীকরণের পেছনে প্রতিটি দেশের ভিন্ন ভিন্ন ইস্যু থাকে। কোনো কোনো ইস্যু অন্য দেশের সাথে সাংঘর্ষিক হয়। মিসর-তুরস্ক এমনই দু’টি বিরোধী শিবির। মিসরের জন্য, আঞ্চলিক সঙ্ঘাতে গতিশীলতা, ইথিওপিয়ার রেনেসাঁ বাঁধ, চরম অর্থনৈতিক সঙ্কট, ইসরাইলের সাথে বন্ধুত্ব ও গাজা যুদ্ধ, লিবিয়া ও সুদানে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে সিসির ভূমিকা, ব্রাদারহুডের রাজনীতি, রাফা বর্ডার রক্ষা, সিনাই নিরাপত্তা, নীল নদ থেকে পানি আহরণ, সুয়েজ খাল চালু রাখা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ উত্তপ্ত ইস্যু। মিসরে ব্রাদারহুডের রাজনীতির শিকড় যেমন গভীরে প্রোথিত তেমনি মধ্যপন্থী ইসলামী আন্দোলনও কম জনপ্রিয় নয়। ওয়াসাত পার্টি মিসরে জনসমর্থিত একটি প্রধান মধ্যপন্থী ইসলামী দল।
অর্থনৈতিক দুরবস্থার কারণে সিসি নবদম্পতিদের কার্ড বাতিল করেছেন এবং রুটির জন্য ভর্তুকি কমিয়ে দিয়েছেন, রুটি মিসরের দরিদ্রদের প্রধান খাদ্য। সিসির কৃচ্ছ্রসাধনের সেøাগান শুধু গরিবদের জন্যই। কেননা, তিনি নতুন বিমান কিনেছেন, বিলাসবহুল প্রাসাদ তৈরি করেছেন। প্রেসিডেন্ট সিসির জন্য নতুন পাঁচটি বিলাসবহুল বিমান রয়েছে। সম্প্রতি ৪১৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে একটির উন্নয়ন ও প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত দু’টি বোয়িং চালাতেন সে দু’টি আমিরাতের শাসক শেখ জায়েদ বিন সুলতান উপহার দিয়েছিলেন। তারও আগে প্রেসিডেন্ট নাসের দীর্ঘ শাসনের সময় কোনো বিমান নিজে ব্যবহারের জন্য কেনেননি। চার্টার করা বিমান ব্যবহার করতেন। প্রেসিডেন্ট মুরসির না ছিল বিমান, না ছিল হেলিকপ্টার, এমনকি ব্যক্তিগত গাড়িও। ক্ষমতায় আরোহণের মাত্র সাত বছরে সিসি ৭৭ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলারের বিমান কেনেন।

২০১৪ সাল থেকে সিসি অন্তত তিনটি নতুন প্রেসিডেন্সিয়াল প্রাসাদ এবং ১০টিরও বেশি প্রেসিডেন্সিয়াল ভিলা নির্মাণ করেছেন। এখানে ৩০টি ঐতিহাসিক প্রাসাদ ও প্রেসিডেন্সিয়াল রেস্ট হাউজে যুক্ত করা হচ্ছে। নতুন প্রশাসনিক রাজধানীতে নির্মিত সিসির বিশাল প্রাসাদ কমপ্লেক্সটি প্রায় ২.৫ মিলিয়ন বর্গমিটার। এই পুরো অঞ্চলটি ৬২৬.২ একর কৃষিজমির সমান। রাষ্ট্রপতির বাসভবনের জন্য এটি প্রায় ৫০ হাজার বর্গমিটার বলে অনুমান করা হয়, যা হোয়াইট হাউজের ১০ গুণের বেশি!
সিসি হোয়াইট হাউজের আদলে আরেকটি বিলাসবহুল প্রাসাদ নির্মাণ করছেন, নতুন শহর আল-আলামিনে সমুদ্রের তীরে, কায়রোর গরম পরিবেশের পরিবর্তে ভূমধ্যসাগরের শীতল বাতাস উপভোগ করার জন্য গ্রীষ্মকালীন অবস্থান হিসেবে এটি তৈরি। বিপুল সরকারি অর্থ ব্যয়ের কারণে সমালোচনার মুখে তিনি বলেছেন, ‘আমরা প্রাসাদ তৈরি করেছি এবং আরো করব, তবে নিজের জন্য নয়। আমি এক নতুন মিসর গড়ার জন্য কাজ করছি।’

অন্যদিকে, এরদোগানের মোট সম্পদের পরিমাণ আনুমানিক ৫০০ মিলিয়ন ডলার। জানা যায়, তার পরিবার আইল অব ম্যানের তিনটি ট্রাস্ট নিয়ন্ত্রণ করে, সেখানে মিলিয়ন ডলারের সম্পদ রয়েছে। এরদোগান সুইস ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট নিয়ন্ত্রণ করেন, তার ছেলে আহমেদের সম্পদের পরিমাণ ৮০ মিলিয়ন ডলার। তবে এরদোগানের সম্পদের পরিমাণ নিয়ে নানা বক্তব্যের সুনির্দিষ্ট ও নিরপেক্ষ কোনো তথ্য পাওয়া যায় না।

দুই দেশের মধ্যে অনেক বিতর্কিত বিষয়, অনেক বিপরীত দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে যার কারণে দূরত্ব রয়েই গেছে। মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকায় উভয় দেশ সামরিকভাবে পরস্পর বিরোধী অবস্থানে রয়েছে; বর্তমান গাজা যুদ্ধপরিস্থিতি প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কৌশলগত সহযোগিতার সূত্রপাত ঘটাতে পারে যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দুই নেতা উচ্চ স্তরের কৌশলগত সহযোগিতা পরিষদের বৈঠকের পুনর্গঠন সংক্রান্ত যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন, যা তাদের সম্পর্ক পুনর্নির্মাণের জন্য উভয় দেশের প্রস্তুতির ইঙ্গিত দেয়।
বিশেষ করে গত দশকে মধ্যপ্রাচ্যের উন্নয়নে তুরস্ক ও মিসর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে। তুরস্ক এই অঞ্চলে নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষমতা ও সামর্থ্য রাখে, মিসরও চায় তবে আর্থিকভাবে সামর্থ্য নেই। গত এক দশক ধরে দেশ দু’টির মধ্যে দ্বন্দ্বমূলক প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রাধান্য পেয়েছে। লিবিয়া, পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় ও মুসলিম ব্রাদারহুডের মতো সমস্যাগুলো মতভেদ বৃদ্ধি করেছে। উভয় পক্ষই মতবিরোধের ক্ষেত্রগুলোতে ধীরে ধীরে সমাধান খুঁজে পেতে চেষ্টা করছে। কারণ বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ এককভাবে মোকাবেলা ভুল পদক্ষেপ।

জেনারেল হাফতারের বিরুদ্ধে তুরস্কের সেনাবাহিনীর একটি অংশ লিবিয়ায় যুদ্ধ করেছে। মিসর হাফতারকে সবরকম সহায়তা দিয়েছে। এক সময় ধারণা করা হয়েছিল, উভয় দেশ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে। অথচ জাতিসঙ্ঘ স্বীকৃত লিবিয়ার গভর্নমেন্ট অব ন্যাশনাল অ্যাকর্ড বা জিএনএর সাথে তুরস্কের চুক্তি হয়েছিল। সেখানে লিবিয়ায় নৌবাহিনী, সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনী দিয়ে সহায়তার উল্লেখ করা হয়। সিসি জোর দিয়ে বলেছেন, ‘এ ধরনের পদক্ষেপ চলাকালীন তারা অলসভাবে দাঁড়িয়ে থাকবেন না।’ মিসরের অনুরোধে আমিরাত হাফতারের মিলিশিয়াদের সমর্থনে বিমান হামলা চালায়। কায়রোতে মিসর, ফ্রান্স, ইতালি, গ্রিস ও সাইপ্রাসের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে সিসি লিবিয়া ও ভূমধ্যসাগরে তুরস্কের পদক্ষেপের সমালোচনা করেন। প্রতিটি দেশের সাথেই তুরস্কের তখন খারাপ সম্পর্ক। মূলত মিসর তুরস্কবিরোধী একটি আন্তর্জাতিক ফোরাম তৈরির চেষ্টা করছিল। গ্রিস, মিসর, ইসরাইল এবং সাইপ্রাস ওই অঞ্চলে তার এক্সক্লুসিভ জোন থেকে তুরস্ককে বাদ দেয়ার পরিকল্পনা করছিল।

মুসলিম ব্রাদারহুড বা ইখওয়ানুল মুসলিমিন একটি আন্তর্জাতিক সুন্নি ইসলামী সংগঠন যা মিসরে ইসলামী পণ্ডিত এবং স্কুলশিক্ষকদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। স্কুলশিক্ষক হাসান আল বান্না ১৯২৮ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করেন। দলটি ইসলাম প্রচার করেছে, নিরক্ষরদের শিক্ষা দিয়েছে, হাসপাতাল ও শরিয়াহভিত্তিক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠা করেছে। সময়ের পরিক্রমায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক-বিরোধী একটি রাজনৈতিক আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। ব্রাদারহুডের বিখ্যাত স্লোগান, ‘ইসলামই সমাধান’ এবং শরিয়াহভিত্তিক খেলাফত প্রতিষ্ঠার ডাকে আরব বিশ্বের শেখডোম ও একনায়কতন্ত্রের ভিত কেঁপে ওঠে। এই ব্রাদারহুডকে নির্জীব করা তাদের টার্গেটে পরিণত হয়েছে।

২০১৩ সালে ব্রাদারহুড নিয়ে মিসর-তুরস্কের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। এরদোগান ক্রমবর্ধমানভাবে নিপীড়িত মুসলিম ব্রাদারহুড সদস্যদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করেন। অনেক সময় এরদোগান সিসিকে মৌখিকভাবে আক্রমণ করেন। ইসলামপন্থী পটভূমির এরদোগান সিসির শাসনকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করেন এবং তাকে ‘অবৈধ অত্যাচারী’ হিসেবে বর্ণনা করেন। দুই দেশের মতাদর্শের বিরোধে কৌশলগত স্বার্থ এবং আঞ্চলিক দৃষ্টিভঙ্গিও যুক্ত হয়। সিরিয়া সঙ্কট, লিবিয়ার যুদ্ধ, ভূমধ্যসাগরে সামুদ্রিক সীমানা নিয়ে বিরোধ উত্তেজনায় ইন্ধন জুগিয়েছে। সিসিবিরোধী ব্রাদারহুডের হাজার হাজার নেতাকর্মী ও ইসলামী ছোট ছোট জোট এরদোগানকে প্রাকাশ্যে সমর্থন দিয়ে উত্তেজনা বাড়িয়ে তোলে। এই ইস্যুতে সৌদি আরব ও আমিরাত মিসরের পক্ষ নেয়। উপরন্তু‘, সোমালিয়া ও সিরিয়ায় তুরস্কের সামরিক উপস্থিতি, সুদান থেকে সুয়াকিন দ্বীপের ৯০ বছরের পুরনো ভাড়ার মাধ্যমে আঙ্কারার লোহিত সাগরে পা রাখার প্রচেষ্টা এবং ইথিওপিয়ার সাথে তুরস্কের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক কায়রোকে চিন্তায় ফেলে।
২০১৭ সালের ডিসেম্বরে পুতিন উভয় দেশের মধ্যে শান্তি প্রচেষ্টায় মধ্যস্থতা করতে কায়রো ও আঙ্কারা সফর করেন। মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শুকরি তুরস্কের সাথে তার দেশের সম্পর্ক শক্তিশালী করতে শর্ত আরোপ করেন। বলা হয়, আঙ্কারা মিসরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বন্ধ করলে আলোচনা হতে পারে।

এরদোগান মিসরের অনেক দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। সব কিছু যোগ করে একটি মিশ্র ফলাফলের আশা করা হয়েছিল। একটি বিশাল দরকষাকষি তুরস্ক এবং মিসরকে সব ক্ষেত্রে একই লাইনে নিয়ে আসবে তা সম্ভাবনাহীন হয়ে দেখা দেয়, কারণ সমস্যা প্রচুর।
সিরিয়ায় তুর্কি সেনা মোতায়েনের আগে কমপক্ষে ৪০ লাখ সিরীয় তুরস্কে প্রবেশ করে। তারা আরব লিগের পতাকাধারী কোনো দেশে যায়নি। পরিবর্তে, অ-আরব দেশগুলোতে অভিবাসন বেছে নেয়। সংযুক্ত আরব আমিরাতের জনসংখ্যার মধ্যে ১০ লাখ আরবও নেই, আরবদের পক্ষে কে সোচ্চার হবে? এদের মধ্যে রয়েছে তুরস্কের নাগরিকত্বপ্রাপ্ত আরব, তুরস্কে আশ্রয় নেয়া অন্যান্য আরব ও সিরিয়ায় তুরস্ক সীমান্তে ৬০ লাখ আশ্রয়প্রার্থীসহ প্রায় দেড় কোটি আরবের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে তুরস্ক।

এভাবে ১২টি বছর দুই দেশ দুই প্রান্তে রয়ে যায়। কিন্তু গাজা যুদ্ধ ও মধ্যপ্রাচ্যে অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে উভয় দেশের একসাথে কাজ করার তাগিদ সৃষ্টি হয়। মিসরের সাথে তুরস্কের সম্পর্ক কারো জন্য ক্ষতিকর প্রমাণিত না হলেও তা মুসলিম উম্মাহর জন্য ক্ষতিকর। সম্ভবত এই বোধ থেকে উভয় নেতা একত্রে কাজ করতে চাইছেন। মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে অতিরিক্ত খেলোয়াড জড়ো হয়েছে রাশিয়া ও চীন। দু’টি দেশের সরব উপস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি পরিবর্তন হতে বাধ্য। এ দিকে মিসর সম্পর্ক বৃদ্ধি করেছে রাশিয়া ও চীনের সাথে, তুরস্কও রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক দৃঢ় করেছে। চীন, রাশিয়া ও তুরস্ক নিজস্ব বলয় বৃদ্ধি করে জোট করতে চায়। তাই একা বসে থাকার সময় নেই।

উপসংহারে, প্রেসিডেন্ট এরদোগানের মিসর সফর দুই দেশের সম্পর্কের বিবর্তনে একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক। একটি স্থিতিশীল নিরাপত্তা স্থাপত্য প্রতিষ্ঠা করা তুরস্ক ও মিসর উভয়ের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সম্ভাব্য নিরাপত্তা সহযোগিতার একটি ক্ষেত্র হলো সামরিক সহযোগিতা, বিশেষ করে প্রতিরক্ষা শিল্পে। উভয় দেশই মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিরক্ষা শিল্পে উল্লেখযোগ্য খেলোয়াড়, মিসর সামরিক প্রযুক্তিতে তুরস্কের অগ্রগতি থেকে উপকৃত হতে চায়। অস্ত্রের উৎসের বৈচিত্র্য মিসরের জন্য একটি মূল কৌশল এবং তুর্কি ড্রোনের প্রতি সিসির প্রচুর আগ্রহ। ড্রোন চুক্তি বৃহত্তর সহযোগিতার অনুঘটক হতে পারে এবং পারস্পরিক অর্থনৈতিক ও কৌশলগত স্বার্থ উন্নত করতে পারে। এই সহযোগিতা নিঃসন্দেহে ব্যাপক অংশীদারিত্ব এগিয়ে নেবে।

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব ও গ্রন্থকার


আরো সংবাদ



premium cement