ফিলিস্তিন থেকে ইউক্রেন : পশ্চিমা দ্বিচারিতা
- ড. এ কে এম মাকসুদুল হক
- ৩০ মে ২০২২, ১৯:২৮
গত ১০ এপ্রিল ৪৫ বছর বয়স্কা ফিলিস্তিনি ছয় সন্তানের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মা ‘ঘাদা সাবাতিন’কে ইসরাইলি নিরাপত্তারক্ষী একটি চেকপোস্টে গুলি করে হত্যা করে। অঙ্কশাস্ত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়া শেষ করে সাবাতিন জর্দানে ১৫ বছর শিক্ষকতা করার পর বিধবা হয়ে পড়লে সন্তানদেরসহ মায়ের কাছে নিরাপদে বসবাসের জন্য ফিলিস্তিন ফিরে এসেছিলেন। বেথেলহেমের নিকটবর্তী গ্রামে চাচার বাসা থেকে ফেরার পথে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যুবরণ করেন। সাবাতিনের আত্মীয়স্বজন গুলিবর্ষণকারী ইসরাইলি সৈনিককে প্রশ্ন করেন, কোন অপরাধে তাকে গুলি করা হয়েছিল? উত্তরে সৈনিক শুধু ‘দুঃখিত’ বলে তার দায়িত্ব শেষ করে (ডেইলি স্টার : ২২.৪.২০২২)।
ইসরাইলি সৈনিক ও পুলিশ কর্তৃক ফিলিস্তিনিদের এ ধরনের নির্মম হত্যাকাণ্ড নিত্যদিনের ঘটনা; অর্থাৎ ইসরাইলিদের কাছে ফিলিস্তিনিদের মানবিক মর্যাদা রেওয়ারিশ কুকুর-বিড়ালের পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে মনে হচ্ছে। এই ইসরাইলি ইহুদিবাদকে অন্ধভাবে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে পুরো পশ্চিমা বিশ্ব। আর এশিয়ায় সেই ইসরাইলিদের পরম মিত্র হলো ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী মোদি সরকার। অন্য দিকে সাম্প্রতিককালে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম উম্মাহর শ্রদ্ধা আর সম্মানের রাষ্ট্র সৌদি আরবসহ কয়েকটি দেশ ইসরাইল তোষণ নীতি অবলম্বন করায় ইহুদিবাদ আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে ২০২০ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মরক্কো ইসরাইলের সাথে ‘আব্রাহাম চুক্তিতে’ আবদ্ধ হয়েছে। জানা যায়, সৌদি আরব সরাসরি চুক্তিবদ্ধ না হলেও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ইসরাইলের সাথে গোপন সম্পর্ক রক্ষা করে চলছেন। এ দিকে গত পাঁচ বছরে ইসরাইলি বিমানবাহিনী ৪০৮টি অপারেশনে ফিলিস্তিন ও প্রতিবেশী দেশের এক হাজার ২০০ অবস্থানে মোট ৫৫০০ বার হামলা চালিয়েছে (নয়া দিগন্ত : ০৩/০৪/২০২২)। মেজর জেনারেল আমিকাস নরকিলের নেতৃত্বে তারা এভাবে বছরের পর বছর ফিলিস্তিনি নাগরিক নিধন চালাচ্ছে, তাদেরকে বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ করছে প্রতিনিয়ত; যখন যাকে খুশি ধরে নিয়ে জেলে পুরছে। জানা যায়, বর্তমানে ইসলাইলি কারাগারে বিনা বিচারে সাড়ে চার হাজার ফিলিস্তিনি সাজা খাটছে (নয়া দিগন্ত : ১৯/০৪/২০২২)।
রমজান মাস এলেই যেন ইহুদিবাদীদের গায়ে আগুন লেগে যায়। মাসজুড়েই তারা উত্তেজনা ছড়িয়ে রাখে মুসলমানদের তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ মসজিদ ‘আল আকসা’কে ঘিরে। গত বছর রমজানেও ইসরাইলি বাহিনী পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকায় ১১ দিন ধরে বিমান হামলা চালিয়ে ২৫০ জনের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। এ ছাড়া ২০১৭ সাল থেকে গত পাঁচ বছর সবচেয়ে জঘন্যভাবে তারা আল আকসা মসজিদ চত্বরেও হামলা চালিয়ে মুসলমানদের হতাহত করার ঘটনা ঘটায়। আর পশ্চিমা মোড়লরা তা নীরবে সমর্থন দিয়ে যান। ১৯৬৭ সালে ইসরাইল ‘মসজিদুল আকসা’ দখল করার পর থেকে ফিলিস্তিনি মুসলমানরা এই মসজিদ দখলমুক্ত করার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। ১৯৭৯ সাল থেকে ‘আল- আকসা’ বা ‘আল কুদস’ মসজিদ মুক্তির লক্ষ্যে সমগ্র মুসলিম উম্মাহ প্রতি বছর রমজান মাসের শেষ শুক্রবার ‘আল কুদস’ দিবস পালন করে আসছে। তখন থেকে সারা বিশ্বে দিনটিকে ফিলিস্তিন মুক্তির ও বিশ্ব মুসলিম ঐক্যের প্রতীকরূপে পালন করা হয়। এ কারণেই রমজান মাসটি ও রমজানের শুক্রবারগুলো বিশেষ করে শেষ শুক্রবার ইহুদিদের কাছে অত্যন্ত স্পর্শকাতর হয়ে পড়েছে। কাজেই এসব দিবসে তারা মুসলমানদের ‘আল আকসায়’ ইবাদতের উদ্দেশ্যে সমবেত হতেও বাধা দেয়। গায়ে পড়ে সংঘর্ষ বাধিয়ে ফিলিস্তিনি মুসলমানদের হত্যা, গুম, আহত ও জেলবন্দী করে নির্বিচারে। শিশু-বৃদ্ধরাও নির্বিচারে-নির্বিশেষে তাদের অমানবিক এ নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড থেকে বাদ যায় না। এরই মধ্যে গত ২০ ফেব্রæয়ারি জার্মানির মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গ্যান্টজ বলেন, ‘ভবিষ্যতে একটি পূর্ণাঙ্গ স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে প্রতিষ্ঠিত হতে দেয়া হবে না’ (নয়া দিগন্ত : ২২/০২/২০২২)।
গত রমজান মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার ভোরে ফজরের নামাজ আদায় করার সময় ইরাইলি বাহিনী ‘আল
আকসা’ মসজিদে আসা মুসল্লিদের ওপর লাঠিচার্জ করে এবং কাঁদানো গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটায়। তারা আক্রমণের কারণ হিসেবে বলে, ‘পিএলও’ ও ‘হামাসের’ পতাকা নিয়ে আসা কয়েকজন যুবককে গ্রেফতার করার জন্য তারা মসজিদে হামলা চালায়। এরপর রমজানের পরবর্তী দুই শুক্রবারেও ইসরাইলিরা মসজিদে মুসল্লিদের ওপর নির্যাতন চালায়। এসব হামলায় ইসরাইলি বাহিনীর সাথে এক হাজারেরও বেশি ইহুদি সেটেলার যোগ দেয়। এভাবে তারা ৩০০ মুসল্লিকে আহত করে এবং প্রায় ৪০০ জনেরও অধিক আটক করে নিয়ে যায়। একই সাথে ইসরাইলি সশস্ত্র বাহিনী ফিলিস্তিনের ‘গাজা’ এলাকায় কয়েক দফা বিমান হামলা চালায়। তারা ইসরাইলি ভূখণ্ডে তিনটি কথিত রকেট হামলার প্রত্যুত্তরে বিমান হামলা চালিয়েছে বলে জানায়। তবে রকেটগুলো আয়রন ডোম দিয়ে ইসরাইলিরা নিষ্ক্রিয় করলেও গাজায় বিমান হামলায় বেশ কিছু বাড়িঘর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব সংঘর্ষের বিষয়ে মার্কিন প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত একপেশে এবং ইসরাইলি হানাদারদের প্রতি নির্লজ্জ সমর্থন বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন দু’পক্ষকে সংঘর্ষ থেকে নিবৃত হতে বলেন এবং ইসরাইলি নিরাপত্তা প্রক্রিয়ার প্রতি নিরন্তর ‘অবিচল সমর্থন’ সমর্থন ব্যক্ত করেন। এ ক্ষেত্রে ইসরাইলিদের নিরাপত্তার বিষয়ে মার্কিন সংজ্ঞা অত্যন্ত পক্ষপাতিত্বমূলক। ইসরাইলি সুসজ্জিত সশস্ত্র বাহিনীর অত্যাধুনিক ট্যাংক, কামান ও ক্ষেপণাস্ত্রের বিপরীতে ফিলিস্তিনি শিশু-কিশোর ও নারী-বৃদ্ধদের ইটপাথরের ঢেলা নিক্ষেপকে মার্কিনিরা ইসরাইলের নিরাপত্তার প্রতি হুমকি মনে করেন। আর ইসরাইলিদের বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিমানবাহিনী দ্বারা ফিলিস্তিনি ঘনবসতি এলাকায় নিরস্ত্র ও ঘুমন্ত মানুষের ওপর বোমাবর্ষণকে যুক্তরাষ্ট্র মনে করে ইসরাইলিদের আত্মরক্ষার অধিকার!
এমন প্রেক্ষাপটে সাম্প্রতিক রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণে পশ্চিমা বিশ্বের দ্বিচারী চরিত্র পুরোপুরি উন্মোচিত হয়ে পড়েছে। রাশিয়ান আগ্রাসনের সাথে সাথেই প্রতিক্রিয়ায় আমেরিকার নেতৃত্বে ইউরোপিয়ানরা আর্তচিৎকার শুরু করেছে যেন তাদের নিজেদেরই দেশ আক্রান্ত হয়েছে। একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের ওপর রাশিয়ার এ ন্যক্কারজনক আক্রমণ নিঃসন্দেহে অসভ্যতা, বর্বরতা ও মানবতার প্রতি ভয়ঙ্কর অপরাধ। এর বিরোধিতা অবশ্য কর্তব্য প্রতিটি সভ্য দেশ ও মানুষের। কিন্তু পশ্চিমাদের এই মানবতা, মানবাধিকার, অন্য দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধা, গণতন্ত্রের চর্চা, ন্যায়পরায়ণতা ইত্যাদি দেশ, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্যই কি একই ধরনের? ১৯৪৮ সালের ১৫ মে যখন ফিলিস্তিনে ‘নাকবা’ বা ‘বিপর্যয়’ সৃষ্টি করে ৫০ হাজার ফিলিস্তিনিকে বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদ করে নির্মম হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে নিঃশেষ করে অবৈধ ইসরাইল রাষ্ট্র গঠন করা হয়েছিল, তখন তারা কোথায় ছিলেন? যখন ইসরাইলি বাহিনী দু-তৃতীয়াংশ ফিলিস্তিনির জাতিগত নিধনযজ্ঞ চালিয়ে ৫৩০টি গ্রাম ও শহর ধ্বংস করে ৭০টিরও বেশি হত্যাযজ্ঞে ১৫ হাজার মানুষ হত্যা করে ফিলিস্তিনের ৭৮ শতাংশেরও বেশি ভূমি দখল করেছিল তখন গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের স্বঘোষিত মুরুব্বিরা কী করেছেন? বরং পশ্চিমাদের সরাসরি সহযোগিতায় এই অবৈধ রাষ্ট্র স্থাপন করা হয়েছিল। ৭৪ বছর ধরে কট্টর ইহুদিবাদীরা ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ করে প্রতিদিন শিশু, বৃদ্ধ ও নারীদের নির্বিচারে হত্যা করছে; তখন কি মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে না? ভারতের কাশ্মিরের জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারে জাতিসঙ্ঘের ৪৭ নং সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পরিবর্তে সেখানে ভারত সরকারের গণহত্যা চালিয়ে মুসলিম নিধনের কাজটি কি গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্বের সহায়ক? পশ্চিমাদের এ অন্যায় ও দ্বিচারী চরিত্রের জন্যই দেখা যায় ইস্তাম্বুলে ‘আয়া সোফিয়া’ মসজিদে খ্রিষ্টানদের ছবিগুলোকে যথাযথ সম্মান দেখিয়ে তাতে নামাজ চালু করায় খ্রিষ্টান বিশ্ব ও পোপ প্রতিক্রিয়ায় সরব হয়ে উঠছেন, উদ্বিগ্ন হচ্ছেন; অথচ ভারতের হিন্দুত্ববাদীরা মিছিল করে হাতুড়ি-বাটাল দিয়ে বাবরি মসজিদ ভেঙে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে, তখন তো তথাকথিত পশ্চিমাদের বলতে শোনা গিয়েছিল, সেটি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়! যখন ১৯৯৫ সালে জুলাই মাসে বসনিয়ার স্রেব্রেনিকায় জাতিসঙ্ঘ বাহিনীর সামনে আট হাজার মুসলমানকে মাত্র ছয় দিনে গণহত্যা করা হয় তখন মানবাধিকার ‘খুব বেশি একটা’ লঙ্ঘন হয়নি, কারণ নিহতরা ছিলেন মুসলমান! মিথ্যা অজুহাত দাঁড় করিয়ে, অসত্য গোয়েন্দা প্রতিবেদন তৈরি করিয়ে যখন ইরাককে ধ্বংস করা হয় তখন অন্য দেশের সার্বভৌমত্বকে ‘অশ্রদ্ধা’ করা হয় না; এমনকি এই মহা মিথ্যা প্রকাশিত হওয়ার পরও কোনো ধরনের দুঃখ পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি। অথচ ইরাক আক্রমণে নেতৃত্বদানকারী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ গত ১৮ মে টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ডালাসে এক বক্তৃতায় মনের অজান্তেই বলে ফেলেন, ‘শুধু একজন মানুষের সিদ্ধান্তে ইরাকে পুরো অন্যায্য ও নৃশংস আক্রমণ চালানো হয়েছিল।’ তিনি পরে বলেছেন, “বয়সের কারণে তিনি ভুলে ‘ইউক্রেনের’ স্থলে ইরাক বলে ফেলেছেন” (ডেইলি স্টার : ২০/০৫/২০২২)! কয়েক বছর আগে ইরাক আক্রমণের আরেক কুশীলব ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি বেøয়ার ইরাকে মিথ্যা অজুহাতে আক্রমণ করা হয়েছিল বলে ভুল স্বীকার করেছিলেন। তখন তো ‘মানবতা ভূলুণ্ঠিত হয়নি’; কারণ ইরাক তো পশ্চিমা বিশ্বের কোনো দেশ নয় বা তারা সমধর্মের মানুষ নয়! লাদেন নামক এক ব্যক্তির অবস্থানের কারণে একটি হতদরিদ্র দেশকে যখন দখল করে ২০ বছর ধরে সেখানে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়, তখন সেসব সভ্য দেশের ন্যায়বোধ কোথায় ছিল? আজকে তারা ইউক্রেন আক্রমণ ঠেকানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তারকা খেলোয়াড়দের রাজনৈতিক বিষয়ে কথা বলা নিষেধ ছিল। কিন্তু ইউক্রেন আক্রান্ত হওয়ার পর হঠাৎ এ নিষেধাজ্ঞা উঠে যায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে সবাইকেই সরব করে তোলার জন্য। এরই সুবাদে মিসরীয় ‘স্কোয়াশ’ তারকা আলী ফারাগ বলেন, ‘পুতিন ও তার গুণ্ডাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিতে মাত্র পাঁচ দিন সময় লেগেছে, অথচ ৭৪ বছরেও ফিলিস্তিনিদের ওপর নিপীড়নের প্রতিবাদ জানানো সম্ভব হয়নি’ (নয়া দিগন্ত : ১৬/০৩/২০২২)। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরাইলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপে জাতিসঙ্ঘকে বারবার আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু পশ্চিমা সরকারগুলো অব্যাহতভাবে তা প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণ অবশ্যই মানবতাবিরোধী অপরাধ, অসভ্য-বর্বর কাজ, এতে কোনো সন্দেহ নেই। এর বিরুদ্ধে পশ্চিমা বিশ্ব তীব্র প্রতিবাদ করছেন; তা নিঃসন্দেহে উত্তম কাজ। কিন্তু যখন তারা নিজেরাই এসব অপকর্ম করে লাখো মানুষ হত্যা করে, দেশের পর দেশ ধ্বংসস্ত‚পে পরিণত করে, যখন যে দেশে খুশি আক্রমণ করে, যাকে খুশি তাকে হত্যা করে, তখন তাদের এই দ্বিমুখী নীতিটাই প্রকাশিত হয়ে পড়ে। কাজেই তাদের ন্যায়পরায়ণতার বাণী, সভ্যতার বুলি, গণতন্ত্রের বার্তা ইত্যাদি সবই আজ শঠতা বলেই প্রমাণিত হচ্ছে। তবুও অর্থসম্পদ ও অস্ত্রশক্তির জোরে তারাই আজ বিশ্বের মানবতা, মানবাধিকার, গণতন্ত্র, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব আর ন্যায়পরায়ণতার সংজ্ঞা নির্ধারণ করে দিচ্ছে, যা অন্য সব দুর্বল দেশ, রাষ্ট্র ও জনতাকে মানতে হবে। সবাই তা মেনেও নেবে। কিন্তু ঘৃণা করবে পশ্চিমাদের নগ্ন দ্বিমুখী নীতিকে। পশ্চিমা বিশ্বের বিরুদ্ধে বাকি বিশ্বের ক্ষোভ পুঞ্জীভ‚ত হতে থাকবে, যা একসময় আরো চরমপন্থী গোষ্ঠীর জন্ম দেবে এবং চূড়ান্তভাবে বৈশ্বিক নিরাপত্তাব্যবস্থাকে অস্থির করে তুলবে।
লেখক : নিরাপত্তা বিশ্লেষক
Email: [email protected]
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা