২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

শ্রাবণ মাসের ঈদ বনাম কালবৈশাখীর ঈদ!

-

এমন ঘটনা আমার জীবনে কোনো দিন ঘটেনি। ঈদের দিনে সবকিছু ফেলে পত্রিকার জন্য কলাম লেখা এবারই প্রথম ঘটল। ২০২২ সালের ঈদুল ফিতরের সরকারি বন্ধ এবং ঈদপূর্ব ব্যস্ততার সাথে যুক্ত হয়েছে ঈদ-পরবর্তী ব্যস্ততা। আমার এক প্রবীণ বন্ধুর অনুরোধে তার বেয়াইবাড়ি সিলেটে বেড়াতে যেতে হবে ঈদের পরের দিন সকালে। আর অন্য দিকে, স্ত্রী-সন্তানরা গ্রামের বাড়ি যাবে ঈদের দু’দিন পর। ফলে আমার হাতে কেবল ঈদের দিনটিই অবশিষ্ট আছে নয়া দিগন্তের শুক্রবারের উপসম্পাদকীয় লেখার জন্য। কাজেই ঈদের দিনের গতানুগতিক কাজকর্ম সেরে দুপুরের ভাতঘুম বাতিল করে যখন উল্লিখিত শিরোনামে লিখতে বসলাম তখন বড় সমস্যা দেখা দিলো। কোনটি আগে লিখব? আমার শৈশবের সেই শ্রাবণ মাসের ঈদের স্মৃতি নাকি ২০২২ সালের মে মাসের তিন তারিখের স্মৃতি?

যখন সকাল সাড়ে ৬টায় নামাজের জন্য বের হলাম-তখন দেখলাম, ছেলে-মেয়েসহ সবাই ঘুমাচ্ছে। রাস্তায় লোকজন এবং যানবাহন ছিল না বললেই চলে। অনেক কষ্টে একটি রিকশা পেলাম এবং ধানমন্ডি সাত নম্বর রোডের মাথায় বায়তুল আমান মসজিদের উদ্দেশে রওয়ানা দিলাম। মসজিদে ঈদের জামাতের জন্য নির্ধারিত সময় ছিল সকাল সাড়ে ৮টা; কিন্তু আমি দুই ঘণ্টা আগে বাসা থেকে বের হলাম প্রথম কাতারে স্থান পাওয়ার জন্য। ঢাকার অন্যান্য মসজিদে কী হয় তা বলতে পারব না; কিন্তু এই মসজিদটিতে কম করে হলেও তিন-চারবেলা নিয়মিত মুসলিম- মুসলিমা রয়েছেন, যারা প্রথম তিনটি কাতারে বসার জন্য নামাজ শুরুর অনেক আগে এসে অপেক্ষা করেন। বিশেষ করে জুমার দিন এবং দুই ঈদের দিনে এই প্রবণতা প্রবলরূপে দেখতে পাওয়া যায়।

নামাজ-কালাম তসবি তাহলিল কিংবা জিকির আজকারের সাথে অবশ্যই শরিয়ত মারেফতের অনেক কিছু জড়িত। কিন্তু সবকিছুর ঊর্ধ্বেই মানুষের অভ্যাস। মানসিকতা এবং প্রতিবেশ-পরিবেশ ইবাদতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমার ক্ষেত্রেও এটির ব্যতিক্রম হয় না। অর্থাৎ মসজিদের যে স্থানটিতে আমি সচরাচর বসি সেই স্থানটিতে জায়গা পাওয়ার জন্য আমি নির্ধারিত সময়ের দুই ঘণ্টা আগে গিয়ে বসে থাকি, যা আমার সন্তানরা বরদাশত করতে পারে না। তাদের তারুণ্য তাদের এতটা অস্থির করে রাখে, যার ফলে তারা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মসজিদে যায় সবার শেষে এবং বের হয়ে আসার ক্ষেত্রেও কে আগে বের হবে, তা নিয়ে মাঝে মধ্যে প্রতিযোগিতা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

আমার সন্তানরা যখন ১৪-১৫ বছর বয়সী ছিল তখন আমরা একসাথে মসজিদে যেতাম; কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় আমি প্রথম কাতারে স্থান পাওয়ার জন্য যেভাবে এগিয়েছি একইভাবে যাদের বালকবেলা ও কৈশোরের অভ্যাস, তারুণ্যের প্রবল ঝাঁকুনিতে আমার সাথে তাদের যে বন্ধনটি তা কিছুটা আলগা করে দিয়েছে। ফলে তারা মসজিদে যায় বটে; কিন্তু পেছনের সারিটি কেন যেন তাদের খুব ভালো লাগে। এটাকে আমি দোষণীয় মনে করছি না। কারণ ১৯৭২ সালের শ্রাবণ মাস এবং ২০২২ সালের বৈশাখ মাসের মধ্যকার যে ৫০টি বছর তা এই মহাবিশ্বের অনেক কিছুই পরিবর্তিত করে ফেলেছে। ভূমি, আকাশ, সমুদ্রের তলদেশ সর্বত্রই পরিবর্তন। আকাশে লাখ লাখ স্যাটেলাইট ঘুরছে। বায়ুমণ্ডল ও আয়নস্তর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভূমি-নদী পাহাড় সর্বত্রই বিষ ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে আমাদের অন্ন-বস্ত্র বাসস্থান আসবাবপত্র সবকিছুতেই বিষের ছড়াছড়ি। এ অবস্থায় আমাদের শরীর মন বেড়ে ওঠা কিংবা জন্মমৃত্যু সবকিছুর সাথেই বিষের সংযোগ রয়েছে, যা ১৯৭২ সালে ছিল না।

আমার শৈশবের ঈদের গন্ধ এখনো আমাকে মোহিত করে। বহু স্মৃতি আমাকে এখনো আন্দোলিত করে এবং বহু আবেগ উচ্ছ্বাসে আজো আমি স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ি। আমার শৈশবের ঈদগুলোর মধ্যে সেই ঈদটির কথা কোনো দিন ভুলব না, সেটি হয়েছিল এক শ্রাবণ মাসে। সেবার শ্রাবণ মাসেই ভাদ্র মাসের তালপাকা গরম পড়েছিল আর বর্ষার পানিতে ভরে যায় ফসলের মাঠ, নদী-নালা-খালবিল-পুকুর সব একাকার হয়ে গিয়েছিল। পুরো গ্রামের মধ্যে মাত্র কয়েকটি উঁচু বাড়িতে পানি উঠতে পারেনি; কিন্তু বেশির ভাগ বাড়ির উঠোনে বর্ষার পানি ছিল এবং কারো কারো ঘরেও পানি ঢুকে গিয়েছিল। ফলে সেই আমলে বন্যার পানির যত আপদ-বিপদ, ময়লা আবর্জনা এবং অভাব অভিযোগের মধ্যেই রমজানের চাঁদ উঠেছিল এবং মানুষজন তাদের সাধ্য অনুযায়ী ইবাদত-বন্দেগিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল।

আমাদের বাড়িটি ছিল তুলনামূলক উঁচু। ফলে বাড়িতে পানি না উঠলেও পুরো বাড়ির চার দিকটা ছিল পানিতে টইটম্বুর। বাড়ির এক দিকে জঙ্গল, অপর দিকে ফসলি মাঠ এবং বাকি দুই দিকে প্রতিবেশীদের বাড়িঘর। আমাদের বাড়িতে পানি না ওঠার সুফল যেমন ছিল তেমনি কুফলও কম ছিল না। জঙ্গলের দিক থেকে পচা গন্ধ ভেসে আসত। এ ছাড়া মলমূত্র আবর্জনা, বিভিন্ন প্রাণীর মৃত্যুদেহ ইত্যাদি ভেসে এসে বাড়ির চার পাশে জড়ো হতো এবং সেগুলো পরিষ্কার করার জন্য প্রতিদিনই কসরৎ করতে হতো। বাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্য নৌকা অথবা কলাগাছের কয়েকটি ভেলাসহ একটি তালের ডোঙ্গা ছিল। বাড়ির সামনে পানির যে গভীরতা ছিল তা প্রায় ১০-১২ ফুটের কম ছিল না। ফলে সাঁতার কাটা বা নৌকা-ভেলা-ডোঙ্গা ছাড়া কোনো প্রতিবেশীর বাড়ি যাওয়া অথবা হাটবাজার করা কিংবা তারাবির নামাজ ও ঈদের জামাতে যাওয়া ছিল অসম্ভব।

আমাদের বাড়ির সামনে যে ফসলি মাঠ ছিল সেখানে সাধারণত ধান ও পাটের চাষ হতো এবং তৎকালীন জামানায় এই ফসলের মধ্যে বন্যা প্রতিরোধী আশ্চর্য এক প্রাকৃতিক গুণ ছিল। বন্যার পানি বাড়ার সাথে সাথে ধান ও পাটগাছের উচ্চতা বেড়ে যেত এবং এসব ধানক্ষেত ও পাটক্ষেতে কিভাবে যে প্রাকৃতিক মৎস্যের অভয়ারণ্য গড়ে উঠত তা যারা সেই দৃশ্য নিজ চোখে দেখেননি তারা কোনোমতেই বিশ্বাস করতে পারবেন না। প্রতিটি ধানক্ষেত, পাটক্ষেত কিংবা ইক্ষুক্ষেত ছিল শত শত প্রজাতির ছোট-বড় মাছে পরিপূর্ণ এবং সেই মাছ খাওয়ার জন্য গুইসাপ, ঢোঁড়াসাপসহ অন্যান্য সরীসৃপ সেখানে কিলবিল করত। এর বাইরে বিভিন্ন আকৃতির জোঁক, বক, চিলসহ অন্যান্য মৎস্যভোজী পাখিদের মহড়া দেখে মনে হতো- ধান-পাটক্ষেতগুলো যেন সাক্ষাৎ যমপুরী। রাতের বেলা তো দূরের কথা, দিনের বেলাতেও ওসব পাড়ি দিয়ে একাকী কারো পক্ষে কোথাও যাওয়া ছিল রীতিমতো দুঃসাহসের ব্যাপার।

উল্লিখিত বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবেলা করেই লোকজন তারাবিহ পড়ার জন্য নিকটবর্তী কোনো মসজিদে যেত এবং ঈদের জামাতের জন্য ঈদগাহে হাজির হতো। তো সেবারের শ্রাবণের সেই রমজান মাসের তিনটি মজার কাহিনী বলে ২০২২ সালের কালবৈশাখীর ঈদ নিয়ে কথা বলে আজকের নিবন্ধের ইতি টানব। আমাদের শৈশবের সেই উত্তাল দিনে আমরা তারাবিহ পড়ার জন্য মসজিদে যেতাম। মুরুব্বিরা নিতে চাইতেন না। কারণ একে তো বিরূপ পরিবেশ তার ওপর বেশির ভাগ পোলাপানের পেট খারাপ থাকত। তারা ক্ষণে ক্ষণে উচ্চৈঃশব্দে বায়ু ত্যাগ করত এবং একটু পরপর প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়ার জন্য বলে উঠত, ‘বাজান হাগা আইচে টাট্টিতে যামু’। তাদের এসব কাণ্ডকারখানা বেশি বেশি শুরু হতো তখন যখন সবাই নামাজে দাঁড়িয়ে গেছেন এবং ইমাম সাহেব সূরা কেরাত শুরু করেছেন। এ অবস্থায় বালকদের কাণ্ডে মুরুব্বিরাও হেসে গড়াগড়ি দেয়ার পর্যায়ে চলে যেতেন, যার ফলে সংশ্লিষ্ট বালকের পিতাকে খুবই বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হতো আর এ জন্যই সাধারণত বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ছোট বালকদের এড়িয়ে চলা হতো।

তারাবির নামাজের পর ঈদের নামাজের কথা বলছি। আমাদের শৈশবে বেশির ভাগ মুরুব্বি লুঙ্গি ও পাঞ্জাবি পরতেন। কেউ কেউ পাজামাও পরতেন। তবে পাজামার নিচে আধুনিক অন্তর্বাস বা হাফপ্যান্ট তখনো গ্রামবাংলায় চালু হয়নি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে লুঙ্গি অথবা গামছা পরে তারপর আচ্ছামতো মালকোঁচা দেয়া হতো এবং সেই মালকোঁচার উপর পাজামা পরা হতো। যারা এভাবে পাজামা পরতেন তাদের আধুনিক এবং ভদ্দর লোক মনে করা হতো। তো এমন এক ভদ্রলোকের নাম ছিল ফজা মিয়া, যার গল্প আজ আমি আপনাদের বলব। ফজা মিয়া মূলত ভীতু প্রকৃতির লোক ছিলেন; কিন্তু তার ভীরুতা ধামাচাপা দেয়ার জন্য তার ডাঁটফাট-হম্বিতম্বি ও গালগল্পের অন্ত ছিল না। সে ঘটনার দিন ফজা মিয়া কয়েকজন লোকসহ একটি ডিঙ্গি নৌকা করে ঈদগাহের কাছাকাছি এলেন এবং হঠাৎ করে তাদের নৌকাটি ডুবে গেল। নৌকার আরোহীরা সবাই হাসিমুখে উঠে এলেন; কিন্তু ফজা মিয়া এলেন না। তিনি বুক পানিতে দাঁড়িয়ে হঠাৎ ভয় পেয়ে গেলেন এবং পাজামার মধ্যে কিছু একটা ঢুকেছে তা অনুভব করা মাত্র ‘সাপ সাপ’ বলে চিৎকার দিয়েই জ্ঞান হারিয়ে ফেললেন।

লোকজন ধরাধরি করে তাকে টেনে তুলল। কিন্তু তার পাজামার মধ্যে সাপ আছে এই ভয়ে কেউ আর বেশিদূর এগোতে পারল না। সেখানে একজন সাপুড়ে ছিলেন। তিনি এগিয়ে এসে পাজামা খুললেন- কিন্তু কিছুই পাওয়া গেল না। অবশেষে তার কাছার মধ্যে ছোট্ট একটি চ্যাংটাকির সন্ধান মেলার পর ফজা মিয়ার জ্ঞান ফিরল এবং ঈদের ময়দানে আনন্দে হাসির জোয়ার বইতে আরম্ভ করল।

তৃতীয় গল্পটি আমার নিজের। আগেই বলেছি যে, সেবার শ্রাবণ মাসে ভাদ্র মাসের তালপাকা গরম পড়েছিল। ফলে তৃষ্ণা এবং ক্ষুধা আমাকে প্রবলভাবে তাড়া করত। আমি যাতে ডুবে ডুবে পানি পান না করি এ জন্য দাদা ভয় দেখিয়েছিলেন যে, যদি কেউ চুপিসারে ডুব দিয়ে পানি পানের চেষ্টা করে তবে তার গলার মধ্যে ট্যাংরা মাছ ঢুকে পড়ে। দাদার কথা আমি প্রচণ্ডভাবে বিশ্বাস করেছিলাম। আমার দাদী-মা-কাকাও বিশ্বাস করেছিলেন। আমি মরে গেলেও হয়তো ডুব দিয়ে পানি খেতাম না; কিন্তু আমার স্নেহময়ী দাদী মনে করতেন পোলাপান মানুষ যদি ভুল করে ডুব দিয়ে একটু পানি খায় বা মুখটা যদি একটু হা করে আর তখন যদি আল্লাহর হুকুমে একটি ট্যাংরা মাছ আমার গলায় ঢুকে পড়ে তাহলে তার আদরের নাতি তো আর বাঁচবে না। এ জন্য আমাকে পানিতে নামতে দেয়া হতো না।

সেবারের রোজার মাসের বিকেলবেলায় আমার ক্ষুধা ও তৃষ্ণা মারাত্মক আকার ধারণ করত। আমি খুব করে কাঁদতাম এবং দাদার কাছে গিয়ে বলতাম, কখন ইফতার হবে। দাদা বলতেন, যখন মোরগ-মুরগি খোঁপে ঢুকবে তখনই সন্ধ্যা হবে এবং মাগরিবের আজান পড়বে। আমি দাদার মশকারা বুঝতাম না। আমি তার বক্তব্যকে সত্যি মনে করে মোরগ-মুরগির পেছনে ছুটতাম এবং ওগুলোকে ধাওয়া করে খুপরির মধ্যে ঢুকানোর চেষ্টা করতাম আর সেই দৃশ্য দেখে ফোকলা দাঁতের বুড়ো দাদীরা হেসে কুটি কুটি হতেন।

আমার শৈশবের ঈদের কথা স্মরণ হলে আজো আমি একধরনের নস্টালজিয়ার মধ্যে পড়ে যাই। কারণ সেই ঈদের মধ্যে স্বপ্ন ছিল, কল্পনা ছিল, বিশ্বাস ও ভালোবাসা ছিল। ছিল যথেষ্ট শ্রম এবং অনুকূল পরিবেশ। আনন্দ করার জন্য বা উপভোগ করার জন্য যে প্রকৃতি পরিবেশ ও পরিবার এবং সমাজব্যবস্থার প্রয়োজন তার সবকিছুই তখন ছিল বিধায় কাগজের টুপি, আট-দশটা আতশবাজি, কিছু খেলনা, সামান্য নতুন কাপড়, একজোড়া স্যান্ডেল বা জুতা, যার সর্বসাকুল্য মূল্য হয়তো আজকের একটি বার্গার অথবা একটি পিজার চেয়ে বেশি হবে না, তা সত্ত্বেও প্রতিটি শিশু-কিশোরের কাছে উল্লিখিত ঈদ উপহারের মূল্য ছিল পুরো দুনিয়ার মূল্যের চেয়েও বেশি।

শ্রাবণ মাসের উল্লিখিত ঈদের সাথে যদি ২০২২ সালের বৈশাখ মাসের ঈদের তুলনা করি তবে সবার মধ্যে যে অস্থিরতা-অতৃপ্তি, হতাশা এবং অতুষ্টি দেখতে পাওয়া যাচ্ছে তা আদিকালে ছিল না। বিবর্তিত সমাজের অনৈতিকতার বাড়াবাড়ি, প্রযুক্তির নামে অশ্লীলতা, দুর্নীতির অঢেল কালো টাকার ভয়াল ছোবল, অগণতান্ত্রিক এবং অসৎ রাজনীতির রাক্ষসদের তাণ্ডবে দেশের সামাজিক বন্ধনগুলো আলগা হয়ে পড়েছে। অকৃতজ্ঞতা, অবাধ্যতা, মিথ্যাচার, লুটপাট, চুরি-ডাকাতি ইত্যাদির প্রকাশ্য দাপটে তরুণরা তাদের মুরুব্বিদের সম্মান তো দূরের কথা বিশ্বাস পর্যন্ত করতে পারছে না। আর বয়স্করা সারাক্ষণ তরুণদের নিয়ে যেভাবে আতঙ্কগ্রস্ত থাকেন তার মধ্যে যদি আকাশের সব চাঁদ-তারকা ঈদের দিনে ধরাধামে নেমে আসে তবুও কালবৈশাখীর ঈদ শত চেষ্টা করেও শ্রাবণ মাসের ঈদের সমতুল্য হতে পারবে না।

লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য


আরো সংবাদ



premium cement