২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর : সুখ-দুঃখের পাঁচালি

স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর
স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর : সুখ-দুঃখের পাঁচালি - ফাইল ছবি

স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর অতিক্রান্ত করার পরিপ্রেক্ষিতে আজ যুগপৎ আনন্দ-বেদনা অনুভব করছি। আনন্দ অনুভব করছি এ জন্য যে, নিজেকে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের একজন গর্বিত নাগরিক হিসেবে অর্ধশতাব্দী পার করা। আর বেদনাপ্লুত হচ্ছি এ জন্য যে, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও এই জনপদের দুখী মানুষের সংখ্যা তো কমছেই না বরং বেড়েছে। ৫০ বছরেও দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ভিত্তি মজবুত করা আর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি মানুষের আস্থা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। দেশের মানুষ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সাধারণ প্রশাসনের কাছ থেকে উচ্চমানের সেবা যত্ন পাওয়ার পরিবর্তে অবহেলা অবজ্ঞা আর ভোগান্তিই সহ্য করতে হয়। দেশ আজো যথাযথ সিস্টেমের ভেতর আসতে পারেনি। এ দেশের পরিচিতি গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে। অথচ সেই গণতন্ত্র নিয়ে দেশে-বিদেশে প্রশ্নের কোনো শেষ নেই। গণতান্ত্রিক দেশে রাজনৈতিক দল একে অপরের পরিপূরক বলে ভাবা হয়। রাজনৈতিক দল, দলের নীতি আদর্শের ক্ষেত্রে ভিন্নতা থাকাটাই স্বাভাবিক। এই মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও পরস্পরের সহ-অবস্থান, রাজনীতিকদের মধ্যে শ্রদ্ধা সম্ভ্রম থাকাটা রাজনৈতিক শিষ্টাচার। এসব কিছুই গত ৫০ বছরে অর্জিত হয়নি।

বিগত ৫০ বছরে কেবলমাত্র একটা বড় সম্পদ লাভ করেছি; সেটি আমাদের সংবিধান। সেখানে শুধু কল্যাণ রাষ্ট্র নির্মাণের সব সাজ সরঞ্জাম যেমন আছে, তেমনি রাষ্ট্র পরিচালনার পদ্ধতি কী হবে তার অপূর্ব ছক সন্নিবেশিত রয়েছে। সংবিধানের শুরুতে যে প্রস্তাবনাটি সংযুক্ত রয়েছে, সেখানে সযত্নে লিপিবদ্ধ রয়েছে ‘রাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য হইবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি এমন এক শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠা যেখানে সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনীতি নিশ্চিত হইবে।’ গণতন্ত্রের বিষয়ে সংবিধানের অন্যত্র বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। গণতন্ত্রের প্রাণস্বরূপ নির্বাচন, তা সুষ্ঠু, অবাধ-বাধাহীনভাবে ভোটের ব্যবস্থা করা, যাতে নির্বাচনের বিশুদ্ধতাকে সব সংশয় প্রশ্নের ঊর্ধ্বে রাখাই লক্ষ্য। সংবিধানে যথেষ্ট ক্ষমতা দিয়ে নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশন গঠনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। দেশে আইন বিধি বিধানে সর্বাধিক প্রাধান্য দেয়া, জনগণ সর্বাবস্থায় আইনের দ্বারা সুরক্ষা যাতে পায় সংবিধানের প্রস্তাবনায় তা সংযুক্ত রয়েছে। আইনি প্রাধান্য শুধু এখানে নয় সর্বোচ্চ এই আইন গ্রন্থের অন্যত্র তা সুলিখিত রয়েছে। মৌলিক মানবাধিকার বাংলাদেশের সংবিধানে এতটা গুরুত্ব পেয়েছে যে, এ নিয়ে একটি স্বতন্ত্র অধ্যায় সংযুক্ত রয়েছে। পরিতাপের বিষয় যে, কথায় বলে ‘কাজির গরু কিতাবে আছে’। আমরা বিষয়গুলো সংবিধানের প্রস্তাবনা থেকে যা তুলে ধরেছি বিগত ৫০ বছরে তা শুধু কিতাবেই আছে, গণতন্ত্র মানবাধিকার শোকেসেই শোভিত হচ্ছে।

স্বাধীনতার প্রাপ্তি নিয়ে যে আশা ছিল সে আশার বেশিটাই অপূর্ণ রয়ে গেছে। ৫০ বছরে হিসাব মিলাতে গিয়ে কোনো কূলকিনারাই করা যায় না। তা ছাড়া মুক্তিযুদ্ধে যে লাখো প্রাণ শাহাদত বরণ করেছেন; আর যারা সরাসরি যুদ্ধের ময়দানে না গিয়েও স্বাধীন ভূখণ্ডের স্বপ্ন দেখেছেন, মানুষকে প্রেরণা জুগিয়েছেন তাদের অনেকেই স্বাধীনতার সুফলভাগী বলে মনে করবে। যে স্বপ্ন দেখতেন, তাদের এমন স্বপ্ন এখনও স্বপ্ন হয়েই আছে, তাদের অনেকেই আজ পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন।

বিগত ৫০ বছরে এ দেশে শত নদী দিয়ে যত পানি সাগরে মিশেছে, এ সময়ের মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে, কিন্তু কেউই তাদের দেয়া কথা রাখেনি। দেশ ও দশের কথা নিয়ে যারা ভাবেন, দেশের পরিবেশ পরিস্থিতি নিয়ে সারাক্ষণ পর্যবেক্ষণে থাকেন, অনুসন্ধিৎসু মানুষগুলো কিন্তু অতীত থেকে সেই আজ পর্যন্ত প্রশাসনের দেয়া সব অভয় আশ্বাস, প্রতিশ্রুতি নিয়ে কোনো ভরসা রাখতে পারছেন না। কর্তৃপক্ষের বক্তব্যগুলো বিচার বিশ্লেষণ করে, মনে করেন, তাদের বহু কথাই নিছক ‘বাতকা বাত’। এমন কথার পেছনে নিছক নিম্নমানের রাজনীতিই রয়েছে। মনে রাখতে হবে, দেশের রাজনীতিকরা আকাশের মতো ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলান। ক্ষমতায় থাকাকালে এক রকম বচন আর ক্ষমতা থেকে নেমে আসার পর ভিন্ন রঙ বর্ণ ধারণ করেন; অতীত সব কথাই ওলটপালট হয়ে যায়। অর্থাৎ সময় ও পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতেই কিছু কথা বলতে হয় বলেই বলা। এ তো একধরনের আত্মপ্রতারণা। রাজনৈতিক নির্বাহীদের এমন বক্তব্য বক্তৃতা মানুষের ধাতস্থ হয়ে গেছে।

তারা হামেশাই বলেন দেশের উন্নয়ন অগ্রগতির জোয়ার বইছে। কিন্তু সেই সাথে দেশে যে অনিয়ম বঞ্চনা দুর্নীতির খরস্রোত বইছে এটা বলাও তাদের উচিত। দেশে উন্নতি অগ্রগতি হচ্ছে কি হচ্ছে না সে বিতর্কে জড়িয়ে সময় ক্ষেপণ করতে চাই না; তা ছাড়া এমন বিতর্কে জড়াতে ভয় হয়, কেননা তাতে কোথাকার পানি কোথায় গড়াবে কে জানে, আর আইনের মারপ্যাঁচে কখন কী ঘটে যায় কে জানে। উন্নয়ন প্রকল্প চলছে বটে কিন্তু ক্ষণে ক্ষণে তার ব্যয় বরাদ্দ বাড়ছে। আগে হিসাব কিভাবে হয়েছে? এখন প্রকল্প ব্যয় পাল্টে যাচ্ছে। এ নিয়ে ঘোরের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। এভাবেই গত ৫০ বছরে ঘোড়দৌড়ের মতো ব্যয় কতটা সপ্তম আকাশ ধরতে যাচ্ছে তা বোধগম্য হচ্ছে না। ধরেই নেই, উন্নতি হচ্ছে ব্যয় বাড়ছে কিন্তু তার সমন্বয় কোথায়, তার মূল্যায়ন পর্যালোচনা, জবাবদিহিতা তো থাকা উচিত।

বহুদিন বহুবার প্রশাসন থেকে বলে আসা হচ্ছে, ‘রাষ্ট্রযন্ত্র’ দেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন আকাক্সক্ষা পোষণ করতেন, সেটি বাস্তবায়ন করে দেশের মানুষকে শান্তি স্বস্তি ও তাদের চাওয়া না পাওয়ার মধ্যে সংযোগ ঘটানোর চেষ্টায় তারা ব্রতী রয়েছেন। জনগণের অধিকার তাদের বুঝিয়ে দিতে চাচ্ছেন। দেশের সেই সব মানুষ যারা সব কিছুর ওপর নজর রাখেন, চিন্তা গবেষণা করেন, তারা মনে তো করেন বিগত ৫০ বছরে কোনো কর্তৃপক্ষের মধ্যে কি এই বিবেচনা উঁকি দেয়নি; দেশের জনগণ আর কতকাল অপেক্ষা করবে তাদের দেয়া প্রতিশ্রুতিগুলো বুঝে নিতে। ৫০ বছর তো খুব কম সময় নয়।

বঙ্গবন্ধুর যত স্বপ্ন তার যদি শুমারি করা হয়, তবে সে ফর্দ তো অনেক দীর্ঘই হবে। আমরা অতি কথন করতে চাই না বা সে ফর্দ ধরে এক এক করে কিছু জানতে চাই না। কারণ তাতে তিক্ততা অনেক দূর গড়াবে। মাত্র দু-একটি বিষয় নিয়েই কথা বলতে চাই। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের একটা রূপ ক্রিস্টিলাইজ হয়ে আছে আমাদের অনন্য সংবিধানে।

মূলত একটি ‘ওয়েল ফেয়ার স্টেট’ তথা কল্যাণ রাষ্ট্রের ধারণাকে সেখানে পরিস্ফুট। প্রশ্ন হচ্ছে, তা নিয়ে কতটুকু কাজ চলছে? আমাদের আগ্রহ অনেক কিছুর ব্যাপারে। আমরা দেখছি, এমন সব কাজ হচ্ছে যা নগর-মহানগরকেন্দ্রিক। নিশ্চয় সবাই একমত হবেন, নগর আর মহানগরই কিন্তু গোটা দেশ নয়, মুখ্যত এই মুহূর্তে আমরা জানতে চাই নগর-মহানগরের বাইরেই তো দেশের বেশির ভাগ লোক বাস করে। তাদের হাল অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাওয়াটাই আমাদের উদ্দেশ্য। পশ্চিমের উন্নত দেশগুলো উন্নয়নের একটি বৈজ্ঞানিক ফর্মুলা অনুসরণ করে চলে। সেখানে উন্নয়নের ধারণায় নগর, মহানগর, গ্রাম, গঞ্জের কোনো অগ্রাধিকার নেই। বিবেচনায় থাকে কেবল মানুষের প্রয়োজন আর যদি কোথাও ভুলক্রমে কোনো বিষয় পরিকল্পনা থেকে বাদ পড়ে যায় সেটিই গুরুত্ব পায়। অথচ আমাদের কি সেই ছক অনুসরণ করা হয়? গত ৫০ বছরে যত ভুলত্রুটি হয়েছে দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে, যেখানে কখনো কখনো ব্যক্তির স্বেচ্ছাচারিতা স্থান পেয়েছে, যা বৈষম্য সৃষ্টিসহ সময়ের নিরিখে অপ্রয়োজনীয় বলে প্রমাণিত হয়েছে, প্রকল্পের অগ্রাধিকার নির্ধারণে অমার্জনীয় ত্রুটি হয়েছে।

এসব বিবেচনায় নিতে, গুরুত্ব দিতে যদি ব্যর্থ হই
এবং আমাদের দেশকে উন্নতির একটা পর্যায়ে নিয়ে যেতে অক্ষম হই তবে ব্রেন ড্রেন রোখা যাবে না। তাতে আমরা মেধাশূন্য জাতি হিসেবে পরিচিতি লাভ করব। এমনিতে তো আমাদের দেশকে বিশ্বে একটি দুর্যোগ দুর্বিপাকের জনপদ হিসেবে মনে করা হয়, যা আমাদের ভাবমর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করেছে। আর দেশ মেধাশূন্য হলে ভবিষ্যতে
বহু বিপদ, তা বলে শেষ করা যাবে না

আজ অতীতের সেসব বিচ্যুতির সে দায় নিয়ে বর্তমানে দায়িত্ব পালনকারী কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জবাব চাওয়া সঠিক নয় বলে মনে করি। তা ছাড়া ইতিহাস কালের নির্মোহ সাক্ষী, সেখানে স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ উজ্জ্বললিপিতে সব বাণীবদ্ধ হয়ে থাছে। গত ৫০ বছরে যার যতটুকু দায়িত্ব করণীয় ছিল, তারা সে জন্য কতটুকু করার চেষ্টা করেছেন আর কতটুকু অবহেলা, ভুলভ্রান্তি তাদের দ্বারা হয়েছে? কত মানুষের যে আশা আর স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসাবে পৃথিবীর বুকে তার অস্তিত্ব ঘোষণা করেছে। তার লক্ষ্য উদ্দেশ্য তো সংবিধানে রয়েছে। সে কথা আমরা ইতোমধ্যে উল্লেখ করেছি এবং তার কিয়দংশ নিয়ে হিসাব মেলানোর ব্যবস্থা করার দায়িত্বশীলদের কাছে মানুষ জানতে চায়। সেসব রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রতিফলন জনগণ দেখতে চায়। যথার্থ যে ফোরাম তথা সংসদের সেসব বিষয়ে কথা বলার, সেটি মানুষের আস্থার প্রতীক হতে পারেনি। তাই যে ফোরামেই হোক জনগণকে সেটি জানানো উচিত হবে। এমন জবাবদিহিতা আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার শৈলী। আমরা জানি, অতীত থেকেই এই শৈলীর চর্চার ক্ষেত্রে প্রচুর ঘাটতি রয়েছে। সে জন্য বলছি যা হয়নি তা কোনোকালে হবে না, এমন মানসিকতা পোষণ করা সঠিক নয়। অতীতে করা হয়নি বলে ভবিষ্যতে করা হবে না; এমন ভ্রান্ত ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তা না হলে বড় হয়ে যাবে ভুল। এ দেশের একশ্রেণীর মানুষ রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত। কিন্তু সে রাজনীতি দেশের জন্য কতটা ইতিবাচক হয়েছে রাজনীতিকরা সে প্রমাণ করতে পারেনি। রাজনীতির সাথে তর্ক-বিতর্কের সম্পর্ক গভীর, আর তা এ জন্য যে, তর্ক-বিতর্ক মানুষকে প্রায় সবক্ষেত্রেই সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছার সুযোগ করে দেয় যদি তর্ক শুধু তর্কের খাতিরে না হয়।

মাত্র কিছুকাল আগে মন্ত্রিসভার জনৈক মাননীয় সদস্যের একটি বক্তব্য পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। সেখান থেকে জানা গেছে, গ্রামাঞ্চলে ২৫ শতাংশ পরিবারের মাথার ওপর তেমন কোনো ছাউনি নেই। এটা হচ্ছে স্বাধীনতার ৫০ বছরের বাস্তব অবস্থা। এখানে যোগ করতে হয়, এখন গুটিকতক মানুষের হাতেই বেশির ভাগ সম্পদ পুঞ্জীভূত হয়ে আছে। অথচ সংবিধান দ্রুত দেশের বৈষম্য দূর করার তাগিদ রাষ্ট্রীয় প্রশাসনকে দিয়ে রেখেছে। তবে এ কথাও স্মরণ করতে হবে, প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় কিছু সংখ্যক হতদরিদ্র গৃহহীন মানুষকে তাদের স্বপ্ন নীড় উপহার দিয়েছেন সম্প্রতি যদিও সেটি সমুদ্রে বারিবিন্দুর মতোই। গ্রামের মানুষেরা অতীতের মতো কৃষির ওপরই শত ভাগ নির্ভরতা বজায় রয়েছে। সেই কৃষির হাজারো সমস্যা, তা দূর করার তেমন কোনো উদ্যোগ কতটুকু রয়েছে? বিশেষ করে সেচব্যবস্থা নিয়ে কৃষকদের যে সমস্যা, তা শস্য উৎপাদনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তাতে শুধু কৃষক নয়, দেশের খাদ্য উৎপাদনে অশুভ প্রতিক্রিয়া পড়বে। নীতিনির্ধারকদের ভাবতে হবে মানুষ বাড়ছে, চাহিদাও সে কারণে দ্রুত বাড়বে। এই দুইয়ের সমন্বয়ে প্রশ্নটি ভুলে গেলে চলবে কি? তা ছাড়া গোটা বিশ্বেই আবহাওয়ার সাথে কৃষির কম বেশি সম্পর্ক রয়েছে। সে বিবেচনায় আমাদের কৃষির আবহাওয়ানির্ভরতা অনেক বেশি। তা ছাড়া গোটা বিশ্ব এখন আবহাওয়ার বৈরিতা নিয়ে মহা ফাঁপরে, আমরা সে দিক থেকে মহাবিপদে আছি। বিশ্বব্যাপী মানুষ এখন উষ্ণতাজনিত কারণে হতবিহ্বল। সে এক বিরাট অধ্যায়। উষ্ণতা নিয়ে আলোচনা করে বক্ষ্যমাণ এ নিবন্ধকে প্রসঙ্গচ্যুত করতে চাই না। দেশের অধিকাংশ মানুষ গ্রাম-গঞ্জেই বাস করে। তাদের প্রায় শত ভাগ কৃষিজীবী। কিন্তু কৃষি ক্ষেত্রে মানুষেরা বড় জোর ছয় মাস কাজে ব্যাপৃত থাকে। বাকি সময়টায় তারা কর্মহীন জনশক্তি হিসাবেই পরিগণিত। অর্থনীতিবিদ আর পরিসংখ্যানবিদরাই সঠিকভাবে বলতে পারবেন এত মানুষের কতটা কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে, জাতীয় অর্থনীতি উৎপাদনশীলতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আর আমরা সাধারণ মানুষ যা দেখি সেটি হলো, বাকি ছয় মাস ওই সব মানুষ কতটা কষ্টশিষ্টে থাকে তথা খেয়ে না খেয়ে থাকে, জীবন কত বিষময় আর অর্থহীন হয়ে পড়ে। এ সময় তাদের হাতে কাজ দিতে কৃষিতে কী পরিকল্পনা, পরিবর্তন আনতে হবে তা সরকারকে কৃষিবিদ কৃষি বিজ্ঞানীদের কাছে পরিকল্পনা চাওয়া এবং তা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করা জরুরি। এ ক্ষেত্রে তেমন কিছু সম্ভব না হলে বিকল্প চিন্তা পরিকল্পনা নিয়ে সেই বেকার মানুষগুলোর হাতে কাজ তুলে দেয়ার ব্যবস্থা করার ক্ষেত্রে বিলম্ব করা অন্যায় অমানবিক হবে। বড় কিছু করা সম্ভব না হলে এটাই ভাবতে হবে যে, ‘ছোট ছোট বালি কণা আর বিন্দু বিন্দু জল গড়ে তোলে মহাদেশ সাগর অতল’। কুটিরশিল্প, ক্ষুদ্র ব্যবসার ব্যবস্থা করে দিয়ে মানুষগুলোর জীবনকে অর্থময় করে তুলতে হবে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও বিপুলসংখ্যক মানুষ দীর্ঘ একটা সময় অনাহারে অর্ধাহারে দিন যাপন করা গোটা জাতির জন্য গ্লানির ও লজ্জার। এসব কুরাজনীতির জন্ম দেবে।

মানুষের পাঁচটি মৌলিক চাহিদা পূরণের কথা সংবিধান বলেছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যক্ষেত্রে শহরের মানুষ যতটুকু পাচ্ছে তা দিয়েও নগরবাসীর প্রয়োজন পূরণ হয় না। আর গ্রামাঞ্চলের মানুষের এই ক্ষেত্রে সীমাহীন অবজ্ঞা আর অবহেলার কোনো তুলনা হয় না। একটি সবল শিক্ষিত জনশক্তিবিহীন সুন্দর সুস্থ জাতির অস্তিত্ব কামনা করা যায় না। কিন্তু গ্রামের মানুষের কাছে ন্যূনতম চিকিৎসা আজ অবধি পৌঁছান যদি না যায় তবে একটি সবল জাতির আকাক্সক্ষা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। সুস্থ সবল জাতি গঠন করা সম্ভব না হলে মেধাবুদ্ধির জগতে দেউলিয়াত্ব দেখা দিতে বাধ্য। আজ বিশ্বে দেশে দেশে যে প্রতিযোগিতা তা কেবল অস্ত্রভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করা নয়, যুদ্ধ তো এখন মেধা আর বুদ্ধির রাজ্যে ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হচ্ছে। জ্ঞান গরিমা বিজ্ঞান প্রযুক্তির দৌড়ে যারা পিছিয়ে পড়বে তাদের তো ধার কর্জের ওপরই নির্ভর করে চলতে হবে। আমরা উন্নয়ন অগ্রগতির কথা ভাবি; তা ‘সকলই গরল ভেল’ হয়ে যাবে। ভিক্ষা করা মর্যাদার বিষয় নয়। নিজেকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। আমাদের সংবিধানে স্পষ্ট করে বলা আছে ‘একই পদ্ধতির গণমুখী ও সর্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য এবং আইনের দ্বারা নির্ধারিত স্তর পর্যন্ত সকল বালক-বালিকাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা দানের জন্য, সমাজের প্রয়োজনের সহিত শিক্ষার সঙ্গতিপূর্ণ করিবার জন্য এবং সেই প্রয়োজন সিদ্ধ করিবার উদ্দেশ্যে যথাযথ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও সদিচ্ছা-প্রণোদিত নাগরিক সৃষ্টি জন্য, আইনের দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিরক্ষরতা দূর করিবার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।’ জানতে পারি কি, ৫০ বছর আমরা এ পথে কতটা অগ্রসর হতে পেরেছি?

গ্রামীণ জনগণের কল্যাণের জন্য প্রশাসন তথা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সুষ্ঠু সঠিক ধারণা আমাদের সংবিধানে রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়েই গঠিত হবে। সেখানে পুরুষ বটে, সেই সাথে নারীদের ভূমিকা রাখার ব্যবস্থাও আছে। বস্তুত কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে নিভৃত পল্লীর হাল হকিকত জ্ঞাত হওয়া এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা দুরূহ বলেই স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের অপরিহার্যতা বিবেচনায় নিয়ে দীর্ঘকাল থেকেই এই প্রতিষ্ঠানের জন্ম। তা দিয়ে কার্যকরভাবে সেবা করা সম্ভব শুধু নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সম্ভব। গ্রামাঞ্চলের উন্নয়নের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন সর্বাধিক। আমাদের সংবিধানে স্থানীয় সরকারের ওপর যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ৫৯(১) অনুচ্ছেদে বর্ণিত রয়েছে ‘আইন অনুযায়ী নির্বাচিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিষ্ঠানসমূহের উপর প্রজাতন্ত্রের প্রত্যেক প্রশাসনিক একাংশের স্থানীয় শাসনের ভার প্রদান করা হইবে।’ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাচন এখন হচ্ছে। সে নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে হলে অবশ্যই অংশগ্রহণমূলক হতে হবে। জনগণ যাতে তাদের ভোটাধিকার সুষ্ঠু আর বাধা বিপত্তিহীনভাবে প্রয়োগ করতে পারে; তাদের বিবেচনায় যোগ্য দক্ষ ও সৎ ব্যক্তিদের বেছে নেয়ার অধিকার প্রয়োগের সুযোগ পায়। অযোগ্য অসৎ ব্যক্তিদের হাতে প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব যদি চলে যায় তবে মানুষের কল্যাণের যে উদ্দেশ্য লক্ষ্য তা ব্যর্থ হয়ে যাবে। বস্তুত গ্রামাঞ্চলের জন্য কাজ করা সবসময় কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়।

রাজধানী থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সব জানা, বোঝা, মানুষের তাৎক্ষণিক প্রয়োজনটা উপলব্ধি করা ও তার প্রতিবিধান করা; সে সঙ্কট দূর করতে স্থানীয় সরকারের যে প্রশাসন তাদের পক্ষে সহজ। তারা পারে সমস্যার তাৎক্ষণিক সঙ্কটের সুরাহা করতে। এখন দেশের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাচন চলছে। কিন্তু কথা হচ্ছে এই নির্বাচনকে ঘিরে সারা দেশে হানাহানি সঙ্ঘাত সংঘর্ষ এবং প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। তাতে কোনোভাবে বলা চলে না এসব নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে হচ্ছে, নির্বাচনকে ঘিরে শান্তি বিঘ্নিত হলে তবে ভোটাররা ভোট দিতে যেতে নিরাপদ বোধ করবে কি, তার ফলাফল এটাই হওয়ারই সম্ভাবনা যে, ভোটারবিহীন নির্বাচন হয়ে যাওয়া যা কিনা নির্বাচনের উদ্দেশ্য চেতনা অসম্পূর্ণ থেকে যাওয়া। দেশে এখন শুধু ক্ষমতালাভের জন্য কিছু লোক নির্বাচনে অংশ নেয়; জনসেবার যে মহৎ উদ্দেশ্য সেটি অর্থহীন হয়ে পড়ে আর আত্মসেবাই মুখ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।

গত ৫০ বছরে এই জনপদে কোনো কর্তৃপক্ষই কোনো সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হোক সেটা চেয়েছেন বলে মনে হয় না। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তাদের লুক্কায়িত ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটার সম্ভাবনা হয়তো থাকবে না। আসলে নিম্নস্তর থেকে উপর পর্যন্ত নির্বাচন নিয়ে যা ঘটে চলেছে তাতে গণতন্ত্রের সৌন্দর্য সৌরভ কিছুই সাধারণ মানুষ পাচ্ছে না। অথচ স্বাধীনতার অর্জনের জন্য গণমানুষের যত আকাঙ্ক্ষা অ্যাজেন্ডা ছিল তার ভিতর গণতন্ত্র অন্যতম প্রধান। বলতে চাই, উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সাথে তা সম্পৃক্ত। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত থাকলে রাষ্ট্রীয় জীবনে জবাবদিহিতার একটা সংস্কৃতি পরিচর্যা পায়। উন্নয়নে অর্থের আদান প্রদান ঘটা খুব স্বাভাবিক। যদি জাতীয় জীবনে কোনো জবাবদিহি না থাকে তবে রাষ্ট্রীয় অর্থ কোথায় কিভাবে ব্যয় হচ্ছে ‘ট্যাক্স পেয়ার’ মানুষ তা জানতে পারবে কিভাবে?

সরকারপ্রধান দেশের বাইরে যখন যেখানে যান, বাংলাদেশীদের সমাবেশে বক্তব্য দানকালে দেশের নানা বিষয় কথা বলার পাশাপাশি তাদের স্বদেশে বিনিয়োগের আবেদনটার ওপর বিশেষ জোর দেন। সরকারপ্রধানের এই আহ্বান তার দায়িত্ববোধের উচ্চ মাত্রাকেই প্রতিফলিত করে। তাই দেশের ভেতর যারা বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে আছেন তাদের উচিত সরকারপ্রধানের এমন সব আহ্বান জানানোর পর দেশে নেতিবাচক যা কিছু আছে তাকে ইতিবাচক করার জন্য পদক্ষেপ নেয়া। দায়িত্বশীলদের এসব ক্ষেত্রে কিছু মাত্র পিছিয়ে থাকা উচিত নয়। ভুলে গেলে চলবে না, ইতোমধ্যে সরকারপ্রধান জনগণের কাছে বহু অঙ্গীকার করেছেন। সে ক্ষেত্রে তিনি ‘আইডিয়া ফ্লোট’ করবেন এবং করেছেন। তার আলোকে কাজ করার জন্য তাদের দায়িত্বানুভূতি শতগুণ বাড়িয়ে তুলতে হবে। আমরা নদীর দেশের মানুষ। তাই জানি, তরী তীরে নিতে হাল ধরে রাখেন একজন, আর দাঁড় টেনে যান বহুজন। এটাই এখন মনে সদা সর্বদা জাগ্রত রাখা দরকার গত ৫০ বছর যে পথ পাড়ি দেয়া যায়নি। এখন দ্রুততার সাথে এগিয়ে যেতে হবে। পিছনে তাকানোর কোনো সুযোগ নেই।

এখন ৫০ বছরের কথা স্মরণে করে কিছু তিক্ত কথা বলব। এমন বহু বাংলাদেশী আছেন যারা দীর্ঘকাল আসেননি। দেশে ফিরে প্রথমে স্বাধীন দেশের রাজধানী মহানগরী ঢাকায় আসতে পারায় আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন; আনন্দে অভিভূত হওয়ার সাথে সাথে তাদের মনে নানা প্রশ্ন জাগে, কর্তৃপক্ষ রাজধানীকে এভাবে অপরিকল্পিত এক শহরে পরিণত হতে দিলেন কেন- এসব বোঝার দক্ষ পারঙ্গম ব্যক্তি কি প্রিয় মাতৃভূমিতে নেই? দেশের বহু হর্তাকর্তা তো হামেশাই বিদেশ ভ্রমণ করেন, তারা কি সেখান থেকে কিছুই উপলব্ধি করে ফেরেন না? তাদের মনে আরো প্রশ্ন জাগে কর্তৃপক্ষের এ বোধ কি তৈরি হয়নি, বিশ্বে সবাই একথার ওপর সবিশেষ গুরুত্ব দেন যে, ‘টাইম ইজ মানি’। বাংলাদেশে রাজধানীর যানজট; তা বোধ হয় নতুন এই শিক্ষাই দেয় ‘টাইম ইজ ওয়াটার’। এ ছাড়া বেপরোয়া যান্ত্রিক যান প্রতিদিন কত প্রাণ কেড়ে নেয়। আরো কত প্রশ্ন যে তাদের মনে জাগে তার ইয়ত্তা নেই। তারা শোনেন, দেশে পান করার বিশুদ্ধ পানি নেই, সব খাদ্যে ভেজাল, অসৎ ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য, এখানে আইন অমান্য করাই রেওয়াজ, বিচার পেতে মানুষ বছরের পর বছর ঘুরতে হয়, আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের মানুষ সাহায্যকারী বন্ধু বলে ভাবতে পারেনি, ঘুষ দুর্নীতি এখনকার লাইফ স্টাইল, শিক্ষাদীক্ষায় বহু পিছিয়ে আছে দেশ; নানা ভয়ভীতি, দুর্বৃত্তদের অবাধ বিচরণ।

যে পল্লীতে তার জন্ম জাগরণ, শিশুকাল কৈশোর আর যৌবনের উন্মেষকাল কেটেছে, আজ তার কী হতশ্রী অবস্থা। এসব দেখা শোনার পর তাকে আর প্রিয় জন্মভূমি ধরে রাখতে পারছে না। দেশের পরিবেশ পরিস্থিতি পানি, বায়ু ও শব্দদূষণ, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ তাকে অসুস্থ করে ফেলে। বিদেশ থেকে আসা এমন ব্যক্তিদের দেশ নিয়ে অনুভব, অনুভূতি ও অভিজ্ঞতা তো সুখকর নয়। আমাদের কর্তৃপক্ষের এসব বিষয় অনুধাবন করা গত ৫০ বছরে হলো না কেন? ওই সব ব্যক্তির গুরুত্ব, তাদের মেধা পারঙ্গমতা দেশ মূল্যায়ন করতে অক্ষম অমনোযোগী। যে দেশে তারা থাকেন তারা তাকে সেকেন্ড হোম বলে বিবেচনা করে। তার পরও সেখানে তাদের যথেষ্ট মূল্যায়ন করা হয়। নিজ দেশের নিরাপত্তাহীনতা থাকলে একসময় স্বদেশকে তারা সেকেন্ড হোম হিসেবে ভাবতে শুরু করবে।

পরিস্থিতির উন্নতি না হলে দেশকে ভুলেই যাবে। এসব বিবেচনায় নিতে, গুরুত্ব দিতে যদি ব্যর্থ হই এবং আমাদের দেশকে উন্নতির একটা পর্যায়ে নিয়ে যেতে অক্ষম হই তবে ব্রেন ড্রেন রোখা যাবে না। তাতে আমরা মেধাশূন্য জাতি হিসেবে পরিচিতি লাভ করব। এমনিতে তো আমাদের দেশকে বিশ্বে একটি দুর্যোগ-দুর্বিপাকের জনপদ হিসেবে মনে করা হয়, যা আমাদের ভাবমর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করেছে। আর দেশ মেধাশূন্য হলে ভবিষ্যতে বহু বিপদ, তা বলে শেষ করা যাবে না।

ndigantababor@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement