২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

সুশাসন ও আইন

- প্রতীকী ছবি

সুশাসন ও আইন একে অপরের পরিপূরক। গণমুখী আইন ও এর যথাযথ প্রয়োগই সুশাসনের অপরিহার্য অনুষঙ্গ। এ জন্য রাষ্ট্র জনস্বার্থেই সময় ও প্রয়োজনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নতুন নতুন আইন প্রণয়ন করে থাকে। নতুন আইন প্রণয়নের সময় রাষ্ট্রের আইন বিভাগ বা সরকার আইনের শিরোনাম ও ব্যাখ্যায় জনস্বার্থের কথা ফলাও করে প্রচার করে থাকে। কিন্তু প্রণীত সব আইনই জনগণের স্বার্থের পুরোপুরি অনুক‚লে হয় না; বিশেষ করে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে। তাই কোনো কোনো সময় এসব আইন বাতিলের জোরালো দাবি ওঠে। ক্ষেত্রবিশেষে তা বাতিল ও সংশোধনের রেওয়াজও আমাদের দেশে রয়েছে। ২০০০ সালে প্রণীত ‘জননিরাপত্তা আইন’ তার প্রকৃত প্রমাণ।

নতুন নতুন আইন প্রণয়ন বা আইনের হালনাগাদকরণ একটি চলমান প্রক্রিয়া। সম্প্রতি ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা সুরক্ষায় সরকার ‘পারসোনাল ডেটা প্রোটেকশন অ্যাক্ট’ শিরোনামীয় নতুন একটি আইনের খসড়া প্রস্তুত করেছে। শুরু থেকেই প্রস্তাবিত আইনটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার অন্ত নেই। কিন্তু তার পরও আইনটি হবে; কারণ অতীতে কোনো সমালোচনার মুখে সরকার বা সংশ্লিষ্ট বিভাগ তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে বলে অন্তত আমাদের দেশে রেকর্ড নেই। নিকটাতীতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে কম কথা হয়নি; কিন্তু তার পরও সরকার তাদের সিদ্ধান্তে অটল থেকেছে। কোনো কোনো সময় চাপে পড়ে আইন সংশোধনের কথা বলা হলেও তা কোনোভাবেই বাস্তবতা পায়নি। এমনকি আইনটি গণমাধ্যমকর্মীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না বলে বারবার প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও এ আইনে অধিকসংখ্যক সম্পাদক-সাংবাদিক মামলায় পড়েছেন এবং নানাভাবে হয়রানির শিকারও হয়েছেন।

ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষাবিষয়ক আইনটি জনগণের স্বার্থের বিবেচনায় প্রণীত হচ্ছে বলে সরকার দাবি করেছে। কিন্তু আদ্যোপান্ত বিশ্লেষণে তাদের কথায় কেউই আস্থা রাখতে পারছেন না। বরং আইনটি ‘বিশেষ উদ্দেশ্যে’ করা হচ্ছে বলে বিভিন্ন মহল থেকেই অভিযোগ উঠেছে।

প্রতিটি আইন প্রণয়নের সময় খসড়ায় আইনের উদ্দেশ্য উল্লেখ করা হয়। যেমন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, ‘যেহেতু ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং ডিজিটাল মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধ শনাক্তকরণ, প্রতিরোধ, দমন, বিচার ও আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিধান প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়; সেহেতু এত দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল।’ এ ক্ষেত্রে ‘ব্যক্তি’ বা ‘নাগরিক’ শব্দগুলো একেবারেই অনুপস্থিত। তাই এ আইনটি সাধারণ মানুষের স্বার্থরক্ষায় প্রণীত হয়েছে বলে মনে করার কোনো কারণ নেই।

যেকোনো প্রস্তাবিত আইনের বিষয়ে তাই প্রথমেই মৌলিক যেসব বিষয় জানা জরুরি; তা হলো কার প্রয়োজনে, কেন-ই-বা সেটি করা হচ্ছে? অতীতের নজির হিসেবে এখানে টেলিযোগাযোগ খাতের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বিটিআরসির আইনের বিষয়টি আলোচনা করা যেতে পারে। ২০১০ সালে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ আইন সংশোধন করা হয় এবং এটি এখন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ (সংশোধন) আইন, ২০১০ নামে পরিচিতি পেয়েছে। এই সংশোধনে মূল আইনের কয়েকটি ধারায় ‘টেলিযোগাযোগ’ কথাটি সংশোধন করে ‘টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ’ করা হয়েছে। ১৬ নম্বর দফায় ‘কমিশন’ শব্দ সরকার দ্বারা প্রতিস্থাপন করে কার্যত ট্যারিফ নির্ধারণের ক্ষমতাও সরকার নিয়ে নিয়েছে। সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রণ এবং আপাতদৃষ্টে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান কমিশনের ক্ষমতা অধিগ্রহণই যে আইন তৈরির ক্ষেত্রে সরকারের প্রধান উদ্দেশ্য, সে বিষয়ে আইনটিতে কোনো অস্পষ্টতা থাকেনি।

সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা ছিল টেলিসেবার ভোক্তাদের স্বার্থরক্ষাই হবে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) কাজ। বাস্তবে হয়েছে ঠিক উল্টো। ভোক্তার স্বার্থ এখানে রক্ষা করা হয়-ইনি; বরং সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তা প্রণীত হয়েছে অভিযোগ উঠেছে। সব মহলের জোরালো বিরোধিতা সত্ত্বেও কথিত নিরাপত্তার অজুহাতে ফোনের জন্য বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন চাপিয়ে দিয়েও ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কোনোভাবেই সম্ভব হয়নি। গ্রাহকদের তথ্য এখন কত দেশী-বিদেশী কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের হাতে পৌঁছে গেছে, তার কোনো হিসাব সংশ্লিষ্টদের কাছে নেই।

প্রস্তাবিত ‘পারসোনাল ডেটা প্রোটেকশন অ্যাক্ট’-বিষয়ক আলোচনায় এই পটভ‚মি ও নজিরগুলো বাদ দিলে তাতে নতুন আইন তৈরির উদ্দেশ্য যেমন বোঝা যাবে না, তেমনি নাগরিক অধিকারের ওপর এর প্রভাব এবং গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য জটিলতার বিষয়টিও উপেক্ষিত থেকে যাবে। এ বিষয়ে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর বক্তব্য খুবই স্পষ্ট। সম্প্রতি সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে দেয়া তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সরকার ফেসবুক ও ইউটিউবের কাছে যত তথ্য চেয়েছে, তার মাত্র ৪০ শতাংশ দিয়েছে ফেসবুক ও ইউটিউব। বাকিগুলোর ক্ষেত্রে তারা বাকস্বাধীনতার প্রশ্ন তুলেছে। এ অবস্থায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন যথেষ্ট নয়। এ সমস্যা সমাধানে নতুন আইন করা হচ্ছে। তার খসড়াও করা হয়েছে।’ ফলে নতুন আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্য কারো কাছেই অস্পষ্ট থাকেনি।

মূলত টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সেবার ক্ষেত্রে এখন প্রধান মাথাব্যথা যেন সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ। আনুগত্য ক্রয় ও ভীতির পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে মূলধারার মিডিয়ায় সরকারের সমালোচনা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে মোটামুটি পূরণ হওয়ার পর এখন নিয়ন্ত্রণের পরিধি বাড়িয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিন্নমতের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপই যে সরকারের লক্ষ্য, তা মন্ত্রীর বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

অবশ্য সরকার পক্ষের দাবি, তারা চান না দেশের নাগরিকদের তথ্য অরক্ষিত থাকুক। সরকারের ভাষায়, ফেসবুক ও গুগল এখন নতুন ঔপনিবেশিক শক্তি। সামনের দিনগুলোয় তথ্য হবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র। মানুষ বুঝে বা না বুঝে তাদের ব্যক্তিগত তথ্য এদের হাতে তুলে দিচ্ছে। তাদের কাছ থেকে তথ্য ফাঁসের ঘটনাও ঘটেছে। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে, কথিত স্বাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো আমাদের ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। উপরন্তু কোনো ধরনের বিচারিক প্রক্রিয়া ও তদারক ছাড়াই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসব তথ্য ইচ্ছামতো ব্যবহার করছে, যা আইনের শাসনের সাথে মোটেই সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার বিষয়ে অনেকেই ইউরোপের জেনারেল ডেটা প্রোটেকশন রেগুলেশনের (জিডিপিআর) কথা বলেছেন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, ইউরোপ আইন করেছে নাগরিকদের গোপনীয়তার অধিকার সুরক্ষিত করতে; কারো ব্যক্তিগত তথ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার জন্য নয়। সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানি বা প্রযুক্তি দৈত্য হিসেবে পরিচিতি পাওয়া কোম্পানিগুলোর সার্ভার নিজেদের সীমানায় স্থাপনের বাধ্যবাধকতা আরোপ করে নয়। ব্রিটেনে ‘ব্রেক্সিট’ ভোটের পর এই ডেটার রাজনৈতিক ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে এবং ব্রেক্সিটে একাধিক অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে ব্রিটেনের স্বাধীন তথ্য কমিশনার জরিমানাও করেছেন। ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ, মাস্টারকার্ড, টি মোবাইলের মতো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হওয়ার কারণে ওই সব কোম্পানিকে জরিমানা ও গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণ দিতে হয়েছে। সন্ত্রাস দমন বা গুরুতর অপরাধ মোকাবেলায় ব্যক্তিগত তথ্যের ব্যবহারের ক্ষেত্রেও আছে বিচারিক তদারকের বিধান; কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে তা কল্পনারও অতীত। বিষয়টি ‘কিসে আর কিসে, ধানে আর তুষের মতোই শোনায়।

প্রস্তাবিত আইন নিয়ে প্রায় সব মহলেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এ অবস্থায় প্রস্তাবিত ‘ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন’-এর খসড়া ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার নামে বিরুদ্ধ মত নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হওয়া এবং স্বাধীন মতপ্রকাশ বাধাগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা তৈরি করছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, আইনটির মাধ্যমে কোনোভাবেই যেন সরকারের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড, দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে জনমত সৃষ্টি এবং ব্যক্তির মতপ্রকাশ ও বাকস্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত না হয় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের যতœবান হওয়া দরকার। অংশীজন নিয়ে আলোচনা ও মতামতের ভিত্তিতে প্রস্তাবিত এ আইনকে জনবান্ধব আইনে পরিণত করা দরকার। এ বিষয়ে টিআইবির পক্ষে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত আইনটি যাতে অধিকতর জনবান্ধব, ব্যক্তিতথ্যের সুরক্ষা এবং স্বাধীন মত ও ভাব প্রকাশের সহায়ক হয়, তা নিশ্চিত করতে বৃহৎ পরিসরে সব পক্ষের অংশগ্রহণে আলোচনা ও মতামতের ভিত্তিতে আইনটি চূড়ান্ত করতে সরকারকে আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসতে হবে।

এ আইনের খসড়াটি ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাজেন্সির সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হলেও ‘অজ্ঞাত কারণে’ তা সরিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ফলে সরকারের স্বচ্ছতা নিয়েও উঠেছে বড় ধরনের প্রশ্ন। মূলত এ পদক্ষেপকে আইনটি নিয়ে সাধারণের মধ্যে আলোচনা ও মতামতের সুযোগকে বঞ্চিত করার প্রয়াস বলে মনে করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সব সংশয় দূর করতে শিগগিরই খসড়া আইনটি সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার ওয়েবসাইটে প্রকাশের মাধ্যমে সর্বসাধারণের মতামতের জন্য উন্মুক্ত করার দাবি উঠেছে। জানা গেছে, প্রস্তাবিত আইনে জনসাধারণের তথ্যের দেখভাল করার জন্য ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাজেন্সি’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান এবং একজন সরকারি কর্মকর্তাকে ‘মহাপরিচালক’ হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হবে।

তবে সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য হচ্ছে, সময়ের প্রয়োজনে আইনটি যদি প্রণয়ন করা হয়, তা হলে তা দেখভাল করার দায়িত্ব মহাপরিচালকের অধীনে থাকা অ্যাজেন্সির হাতে নয়, বরং একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের মাধ্যমে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির স্বার্থ সুরক্ষাসহ ব্যক্তির গোপনীয়তা ভঙ্গকারী অভিযুক্ত যেকোনো পক্ষকে যাতে আইনের আওতায় আনা যায়, তা নিশ্চিত করা দরকার। প্রস্তাবিত আইনে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ‘ডাটা নিয়ন্ত্রণ’ করার উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ‘দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা’ নির্ধারণ ও মহাপরিচালকের প্রতি তার দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার কথা বলা হচ্ছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, এর ফলে গবেষণা ও অধিপরামর্শমূলক কার্যক্রম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজ ভীষণভাবে বাধাগ্রস্ত হবে, যা আইনের উদ্দেশ্যকেই ব্যাহত করবে নিঃসন্দেহে।

সরকার ফেসবুক ও ইউটিউব থেকে তথ্য চেয়ে মাত্র ৪০ শতাংশ পেয়েছে- মন্ত্রীর এমন বক্তব্য সম্পর্কে টিআইবির অভিমত হচ্ছে, প্রস্তাবিত আইনটির মাধ্যমে কি সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের শতভাগ নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়? শত প্রতিক‚লতার মধ্যেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে কিছুটা হলেও জনমত তৈরি ও প্রতিবাদমুখর হতে দেখা যায়। ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে টিআইবির বিবৃতিতে বলা হয়, আইনটির মধ্যে অনেক নিবর্তনমূলক ধারা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যাতে স্বাধীন মতপ্রকাশ ও সরকারের সমালোচনাকারীদের নির্বিচারে একহাত নেয়ার সুযোগ তৈরি হবে। বিষয়টি গণতান্ত্রিক চেতনার সাথে মোটেই সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

মূলত আইন সব সময়ই সাধারণ মানুষের স্বার্থের অনুক‚লে হওয়া উচিত। কিন্তু আমাদের দেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আইন তৈরির মহোৎসব শুরু হলেও অনেক ক্ষেত্রেই সেসব সাধারণ মানুষের সুরক্ষার জন্য সহায়ক হচ্ছে না। তাই যেকোনো আইন প্রণয়নে জনস্বার্থের বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া দরকার; অন্যথায় আইনগুলো জননিবর্তনের হাতিয়ার হবে। সুশাসনের ক্ষেত্রেও সৃষ্টি হবে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা, যা গণতান্ত্রিক ও সভ্য সমাজে কাক্সিক্ষত নয়।
smmjoy@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement