মানুষের চামড়া তোলা : পশুর চামড়া বিক্রি করা
- মীযানুল করীম
- ০১ আগস্ট ২০২১, ২০:১৫
আড়তদাররা কোরবানির চামড়া কিনছেন না। তাই হতাশ চামড়া বিক্রেতা মৌসুমি বা ছোট ব্যবসায়ীরা। এটিই টিভির খবর ও মিডিয়ার মূলকথা। মাঝখানে আর্থিক কোরবানি দিতে হচ্ছে গরিব অনাথ এতিমদের। আর কোরবানি ছাড়া অসংখ্য মানুষের কোরবানি বা ত্যাগ স্বীকার তো আছেই। ‘অমুকের চামড়া তুলে নেবো আমরা’ বলা যত সহজ, (পশুর) চামড়ার ন্যায্যমূল্য পাওয়া ততই কঠিন।
এবার ঈদের পরে এক দিন টিভিতে দেখা গেল, সাধারণ বিক্রেতা ও ছোট ব্যবসায়ীরা চামড়ার দাম কম থাকায় দোষ দিচ্ছেন ট্যানারি মালিকদের। আর ট্যানারির মালিকরা বলছেন, দুই কারণে এবার কোরবানির চামড়া দাম পায়নি। প্রথমত, ট্যানারিওয়ালারা পর্যাপ্ত ঋণ পাননি। দুই নম্বর কথা- চামড়ার চাহিদা আন্তর্জাতিকভাবেই পড়ে গেছে। কথা হলো, ৭০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা দিয়ে কোরবানির গরু কিনে যদি মাত্র ২০০ টাকায় চামড়া বেচাও কঠিন হয়, তাকে কোন যুক্তিতে ‘উচিত কর্ম’ বলা যেতে পারে? ট্যানারি ব্যাংক লোন পাচ্ছে কি না, সেটি সরকারের ব্যাপার। আর বিশ্ববাজারে চামড়ার চাহিদার ওপর কি কোরবানির পশুর দাম নির্ভর করে? তখন কেন ট্যানারিওয়ালারা চুপ করে থাকেন?
গরুর চেয়েও ছাগল-ভেড়ার চামড়া উন্নতমানের। ছাগলের চামড়া দিয়ে কাগজের নোটসহ দামি দামি জিনিস তৈরি হয়ে থাকে। সেই চামড়াও দাম পেল না ট্যানারির টনক নড়েনি বলে। তাই পৌরসভার কর্মীদের মুফ্তে ছাগচর্ম সংগ্রহ করার দৃশ্য দেখতে হয় আমাদের। মানুষ বিরক্ত ও হতাশ হয়ে সে চামড়া ফেলে দিয়েছিল।
চামড়া নিয়ে আগে থেকেই আশঙ্কা করেছিলেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। উচ্চপর্যায়ে শঙ্কা ট্যানারির জন্য ঋণের অর্থ পাওয়া আর বিশ্ববাজারে চামড়ার পর্যাপ্ত চাহিদা নিয়ে। মধ্যস্তরের শঙ্কা ট্যানারির কাছ থেকে সময়মতো বকেয়া ও বর্তমান পাওনা আদায় করা নিয়ে। আর নিম্ন পর্যায়ের শঙ্কা হলো, আড়তদাররা কোরবানির চামড়ার উপযুক্ত মূল্য দেবেন কি না। এ ভয়েই ‘পানির দরে’ এবারো কোরবানির চামড়া কিনেছেন ক্ষুদ্র ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। শেষ পর্যন্ত চামড়া ব্যবসায়ীদের সব শঙ্কাই সত্য হলো। সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে সাধারণ কোরবানিদাতা, তথা গরিব এতিম মিসকিনদের। কারণ কোরবানিদাতারা পশুর চামড়া বিক্রির অর্থ বা সরাসরি চামড়া দান করে দেন এতিমখানা কিংবা হিফজখানার লিল্লাহ বোর্ডিংয়ে।
দেশের চামড়া বাজারের অবস্থা বোঝার জন্য আমরা যশোরের অবস্থা তুলে ধরছি। ২৬ জুলাই নয়া দিগন্তের যশোর অফিসের একটি সচিত্র রিপোর্ট ছাপা হয়েছে, যার শিরোনাম- যশোরের রাজারহাট চামড়ার মোকামজুড়ে হতাশা। এতে শুরুতেই বলা হয়েছে, ঈদের পরে (দেশের) দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বৃহত্তম চামড়ার মোকাম যশোরের রাজারহাটে এসে ক্ষুদ্র ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা রীতিমতো হতাশ। তারা কেনা দামেও চামড়া বিক্রি করতে পারেননি। লকডাউন ও পুঁজিসঙ্কটে বাইরের আড়তদাররা মোকামে আসেননি। ফলে ফড়িয়াদের স্থানীয় সিন্ডিকেটের কাছে পানির দরে বিক্রি করতে হয়েছে গরু-ছাগলের চামড়া। করোনাকালের বাজারে চামড়ার সরবরাহও ছিল কম। তবে ইজারাদার বলছেন, মানসম্মত চামড়া ‘সরকার নির্ধারিত দামেই’ বিক্রি হয়েছে। ট্যানারি মালিকরা বকেয়া শোধ না করায় বাজারে আড়তদার সমাগম কম হয়েছে। ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
এরপর প্রতিবেদনে দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়- সরেজমিন দেখা যায়, বিভিন্ন অঞ্চলের ক্ষুদ্র ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে হাজির হয়েছেন। ঈদ-পরবর্তী প্রথম হাট হওয়ায় বাজারে তুলনামূলক চামড়ার সরবরাহ কম। সর্বসাকুল্যে ১৮ হাজার পিস গরু-ছাগলের চামড়া উঠেছে বলে দাবি করেন সংশ্লিষ্টরা। মাঠপর্যায় থেকে কম দামেই এসব চামড়া সংগ্রহ করেছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। তারা লাভের আশায় চামড়া মোকামে এনেছেন। কিন্তু মোকাম চাঙ্গা না হওয়ায় বেশির ভাগ ক্ষুদ্র ও মৌসুমি ব্যবসায়ী হতাশ। অনেকেই চামড়া বিক্রি করেছেন কম দামে।
প্রতিবেদনে কয়েকজন চামড়া ব্যবসায়ীর এবারের অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয়েছে। যেমন- মনিরামপুরের একজন ২২ পিস ছাগচর্ম হাটে এনেছিলেন। প্রতি পিস কেনা হয়েছে ৪০ টাকায়। সাথে লবণ ও পরিবহন ব্যয়। কিন্তু রাজারহাটে এই চামড়ার একেক পিস ৪০ টাকার বেশি দামে বিক্রি করা যায়নি। এতে তার লোকসান হলো।
কথায় বলে, ‘সেই তো মল খসালি;/তবে কেন লোক হাসালি?’ অনেকটা যেন সে রকমই হয়েছে ‘ট্যানারি শিল্পনগরী’র বেলায়। বুড়িগঙ্গার পানি দূষণমুক্ত করতে বছর কয়েক আগে দেশের প্রধান ট্যানারি শিল্প এলাকা ঢাকা মহানগরীর হাজারীবাগ থেকে সরকারি উদ্যোগে সরিয়ে নেয়া হলো সাভারের হেমায়েতপুরে। তবে সেখানে এই শিল্পের বর্জ্য বুড়িগঙ্গার চেয়ে বড় নদী ধলেশ্বরীর মারাত্মক দূষণ ঘটাচ্ছে বলে ব্যাপক অভিযোগ।
এ দিকে গত ২৬ জুলাই নয়া দিগন্তের প্রথম পাতায় নিজস্ব প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, ‘চামড়া খাতের বিপর্যয়ের মূলে সাভার ট্যানারি শিল্পনগরী’ শিরোনামে। এর প্রথম পরিচ্ছেদে জানানো হয়েছে, ‘আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী অবকাঠামো নির্মাণ হয়নি। এতে প্রতি ঘনফুট চামড়ার আন্তর্জাতিক মূল্য যেখানে দুই ডলার, সেখানে বিক্রি করতে হচ্ছে অর্ধেক দামে। এভাবে রফতানিতে মার খাচ্ছেন (বাংলাদেশের) উদ্যোক্তারা। চামড়ার বর্জ্য শোধনাগারের জন্য সেন্ট্রাল এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। আর ট্যানারির কঠিন বর্জ্য পরিশোধনের কোনো ব্যবস্থাই নেয়া হয়নি।
কিন্তু সাভার ট্যানারি শিল্পনগরীর জন্য ব্যয় দু-এক গুণ নয়। একেবারে ছয় গুণ বেড়ে ১৭৫ কোটি থেকে এক হাজার ১৫ কোটি টাকা হয়ে গেছে। প্রায় দুই যুগব্যাপী প্রকল্পটি অসমাপ্ত রেখেই সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। যেন রবিঠাকুরের ছোট গল্পের সংজ্ঞার মতো- ‘শেষ হয়েও হইল না শেষ।’ আর শত শত কোটি টাকা? এর অর্থ হলো, ‘লাগে টাকা দেবে গৌরী সেন’ অথবা ‘সরকার কা মাল, দরিয়ামে ঢাল।’ এ অর্থ যে সাধারণ জনগণের বহু কষ্টার্জিত এবং গায়ের ঘাম ঝরানো কিংবা রক্ত পানি করা; সে খেয়াল থাকে না সংশ্লিষ্ট আমলাদের।
সাভার ‘ট্যানারি পল্লী’ সম্পর্কে জানা গেছে, এখানে দুই বছরের কাজ ১২ বার সময় বাড়িয়ে ১৯ বছর পার করে দেয়া হয়েছে। তার পরও ‘ট্যানারি নগরী’ হয়নি। আজো সাভারে নির্ধারিত স্থানে ট্যানারি শিল্পের জন্য বহু কাজ বাকি বলে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যসোসিয়েশন মনে করে। এটি মালিকদের জাতীয় সংগঠন। এর সভাপতির অভিযোগ, আন্তর্জাতিক মানের শোধনাগার, সিইটিপি, কমন ক্রোম রিকভারি ইউনিট পুরো নির্মাণ না করায় আমরা ব্যবসা ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়েছি। কমে যাচ্ছে দেশের রফতানি আয়। ট্যানারি মালিকরা বলেছেন, আমরা সিইটিপি অর্থাৎ তরল বর্জ্য শোধন প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত বাড়াতে বললেও তা সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। অন্য দিকে সরকার দাবি করছে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ ভিত্তিহীন। আর প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ালে ব্যয়ও বৃদ্ধি পায়।
জানা গেছে, আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন চামড়া শিল্পনগরী গড়ে তোলার জন্য ২০০৩ সালে শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছিল। এর কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০০৫-এ। পরিবেশদূষণ হবে না- বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে এমন ‘কমপ্লায়েন্ট’ শিল্পনগর গড়াই ছিল এ প্রকল্পের প্রধান লক্ষ্য। ২০১০ সালে এই প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে করা হলো ৫৪৫ কোটি টাকা। এর সিইটিপিসহ কিছু কাজ পায় একটি চীনা ফার্ম। ২০১২ সালের মার্চ মাসে তাদের কার্যাদেশ দেয়া হয়, যাতে কাজ শেষ করতে ২৪ মাস সময়সীমা ছিল। পরের বছর এই প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে করা হলো এক হাজার ৭৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা। তবে আলোচ্য প্রকল্পের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে একটি কম্পোনেন্ট বাদ দেয়া হয়েছে। তবুও প্রাক্কলিত ব্যয় এক হাজার ১৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকা এবং এর সময়সীমা জুন, ২০২১ সাল বলে নির্ধারিত হয়। এরপর বিভিন্ন অজুহাতে সময় বাড়তে থাকে চামড়া শিল্প প্রকল্পের কাজ শেষ করার। অবশেষে অনেক অসম্পূর্ণতাসহ গত ৩০ জুন বাংলাদেশের চামড়া শিল্পসংক্রান্ত এত গুরুত্ববহ প্রকল্পের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে ব্যয়ের মাত্রা ১৭৫ কোটি থেকে ছয় গুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। ফলে কোষাগার থেকে খরচ হয়ে গেছে এক হাজার ১৫ কোটি টাকা। কথা ছিল, পরিবেশদূষণ প্রতিরোধ করে বিদেশের বিনিয়োগ আকর্ষণ ও রফতানি বাড়ানোর জন্য আধুনিক কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা হবে। কার্যত এ ক্ষেত্রে তা হয়নি। এ দিকে মানসম্মত অবকাঠামোর অভাবে লেবার ওয়ার্কিং গ্রæপের সার্টিফিকেট মিলছে না, যার দরুন আমেরিকা ও ইউরোপের আমদানিকারক বা ক্রেতারা এখনো বিমুখ। এ অবস্থায় ২০১৭ সালে ঢাকার হাজারীবাগ থেকে ট্যানারিগুলো সাভারে নেয়া হলেও আমাদের দেশের চামড়া রফতানি কমে যায়। ২০১৮ সালেই এ রফতানি আয় একেবারে তৃতীয় স্থানে নেমে গেছে। অবশ্য গত বছর তা সামান্য বেড়েছে বলে দেখানো হয়েছে।
চামড়া শিল্পের উদ্যোক্তাদের মতে, সাভারে এ শিল্পের নগরে কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধন প্রকল্প সিইটিপির বর্জ্য শোধনের সামর্থ্য ২৫ হাজার ঘনমিটার। কিন্তু এখানে বর্জ্যরে পরিমাণ এর তিন গুণের বেশি- ৭৮ হাজার ঘনমিটার। ফলে পুরো পরিশোধন না করেই চামড়া শিল্পের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে পাশের ধলেশ্বরী নদীতে। শিল্পনগরীর পশ্চিম অংশে এ নদীর পাড়ে কঠিন বর্জ্য ফেলা হয়, যা পানিসহ পরিবেশকে মারাত্মকভাবে নষ্ট করছে। আর সিইটিপি স্থাপনে দুই বছরের বদলে সাত বছর সময় লেগেছে। এর কারণ কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা ও ঠিকাদারের খামখেয়াল। অন্য দিকে ট্যানারির কঠিন বর্জ্য পরিশোধনের কোনো পদক্ষেপ আজ পর্যন্ত নেয়া হয়নি। এ পরিস্থিতিতে নয়া দিগন্তের আলোচ্য প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আগে হাজারীবাগের ট্যানারিগুলো যেভাবে বুড়িগঙ্গার পানি বিষে পরিণত করছিল, সেই ভাগ্যবরণ করতে হচ্ছে এককালে স্বচ্ছ পানির ধলেশ্বরীকে। এতে ট্যানারি ও চামড়াজাত শিল্প চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন বলে জানানো হয়।
প্রতিবেদনটির শেষ প্যারা হলো, ‘ট্যানারি মালিকদের প্রকল্পের লিজ দলিল বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। এ জন্য যে অর্থ প্রয়োজন তাও তাদের নেই। গত ১৯ বছরের ধকল সামলিয়ে উঠতে পারছেন না অনেক উদ্যোক্তা। জমি বুঝে পাওয়া তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।’
শিল্পমন্ত্রী যতই বলুন, এ বছর কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা হয়নি, আসলে অবস্থা অনেকটা ছিল গত বছরের মতোই। এটি বোঝা যায়, যখন ৭২ হাজার টাকায় গরু কিনে বড়জোর ২০০ টাকায় চামড়া বেচতে হয়। মন্ত্রী বলেছেন, চামড়া ব্যবসায়ীরা এবার দাম ঠিকঠাকমতো পেয়েছেন।
কথা হলো, কোন ব্যবসায়ীরা চামড়ার উপযুক্ত মূল্য পেয়েছেন? চামড়ার ব্যবসার ক্ষেত্রে কয়েকটি ধাপ আছে। যেমন- নিচ থেকে দেখলে কোরবানিদাতা, মৌসুমি বা খুদে চামড়া ক্রেতা, আড়তদার ও ট্যানারি মালিক। তাদের কোনো স্তরেই স্বস্তি নেই। কারণ কারোই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। চামড়া বেচতে হলো গতবারের মতো ‘পানির দরে’ আর ব্যবসায়ীদের হাপিত্যেশ করতে হলো ঋণ না পেয়ে। সরকারের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ ছাড়া এসব সমস্যা মিটবে না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা