২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

করোনা ডাবলস্ট্যান্ডার্ড

করোনা ডাবলস্ট্যান্ডার্ড - ফাইল ছবি

করোনা শুরুর দিনগুলোতে ভারতে তাবলিগ জামাতের এক মারকাজ সেই দেশে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। ২০২০ সালের মার্চে ওই অসময়োচিত জমায়েতকে উপলক্ষ করে ভারতীয় জনতা পার্টি বিজেপির সাম্প্রদায়িক অঙ্গ ও শাখা সংগঠনগুলোর চরম ঘৃণা ছড়ানোর প্রচারণা বহু মুসলমানের জীবনে নির্মম নির্যাতন নেমে আসে। বিজেপি দন্ত-নখরবিহীন তাবলিগকে রীতিমতো ‘জঙ্গি রেডিক্যাল সংগঠন’ হিসেবে দাঁড় করিয়ে ফেলে। মারকাজে অংশগ্রহণকারী বিদেশী অতিথিসহ সবার বিরুদ্ধে বিজেপির পক্ষ থেকে মামলা ঠুকে দেয়া হয়। দেশব্যাপী তাদের এলোপাতাড়ি তৎপরতায় দেশী- বিদেশী তাবলিগের সবাই লাঞ্ছিত অপমানিত ও মারধরের শিকার হন। ঘটনার ভয়াবহতা শুধু মারকাজে অংশগ্রহকারী সদস্যদের মধ্যে সীমিত ছিল না, পুরো ভারতের মুসলমানদের এজন্য মাশুল গুনতে হয়েছে।

একটি সংবাদ প্রতিবেদনে ওই সময়ে বিজেপির বিভিন্ন মন্ত্রীর আক্রমণাত্মক বক্তৃতা স্মরণ করিয়ে দেয়া হলো। ওই সব মাথাগরম কথাবার্তা সারা দেশে মুসলমান নির্যাতনকে উসকে দিয়েছিল। এবারের করোনার সর্বগ্রাসী বিস্তারের সময় ভারতের উত্তরখণ্ডে মহাকুম্ভ মেলার ধুমধাম আয়োজন হয়েছে। তবে বিজেপির একই নেতারা এবার নিশ্চুপ ভূমিকা গ্রহণ করছেন। কেউ কেউ মেলার পক্ষে বিরাট যুক্তি প্রদর্শন করছেন। নেতারা তখন বলেছিলেন তাবলিগের ওই জমায়েত একটি মারাত্মক অপরাধ। কোভিড-১৯ ছড়ানো এক ধরনের সন্ত্রাস, যারা এই কাজ করছে তারা বিশ্বাসঘাতক। কেউ কেউ উসকানি দিয়ে বলেছিলেন লকডাউন নিশ্চিত করার জন্য এদের গুলি করে হত্যা করে নিয়মনীতি মানতে বাধ্য করা হোক। সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের এসব বক্তব্যকে ভারতের পুরো মুসলমান সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে হেইট ক্যাম্পেইন তুঙ্গে নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়। মুসলমানদের তারা ভাইরাস হিসেবে আখ্যা দেয়। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে তাবলিগে অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন জায়গায় আটক করে নির্যাতন করা হয়। তাদের আত্মীয়স্বজন এমনকি কোথাও কোথাও মুসলিম সম্প্রদায়, তাদের বিচ্ছিন্ন পরিবার এবং তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে একঘরে করে ফেলা হয়। করোনা ছড়ানোর কাজকে ‘করোনা জিহাদ’ নাম দেয়া হয়। করোনাকে তাবলিগ জিহাদি কাজ হিসেবে গ্রহণ করেছে বলে প্রচারণা চালানো হয়।

এ বছর উত্তরখণ্ডের মহাকুম্ভমেলা হলো ১০ থেকে ১৪ এপ্রিল। এই মেলা বন্ধের ব্যাপারে বিজেপি সরকারের তাবলিগের বিরুদ্ধে মারদাঙ্গা বক্তব্য দেওয়া ব্যক্তিরা সব নীরব। তাবলিগের জমায়েতে কয়েক হাজার মুসলমান একত্র হয়েছিল। আর এই মেলায় এবার ৪৮ লাখ ৫১ হাজার পুণ্যার্থী অংশ নেন। মেলার পর ভারতে প্রতিদিন দুই লাখের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। উত্তরখন্ডের নতুন মুখ্যমন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা তীর্থ সিং রাওয়াত মেলার প্রায় এক মাস আগে থেকে কুম্ভমেলার পক্ষে আধ্যাত্মিক প্রচারণা শুরু করেন। ২০ মার্চ সারা বিশ্ব থেকে পুণ্যার্থীদের তিনি এই মেলায় অংশ নেয়ার আমন্ত্রণ জানান, মহাকুম্ভে এসে তারা যেন গঙ্গায় স্নান করেন। তিনি অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে বলেন, কোভিড-১৯ এর নামে কেউ মেলাকে বন্ধ করতে পারবে না। কারণ স্রষ্টায় তার নিশ্চিত বিশ্বাস রয়েছে, তিনি (স্রষ্টা) ভাইরাসের ভয় দূর করে দেবেন। এর দুই দিন পরে রাওয়াত নিজে করোনায় আক্রান্ত হয়ে সেল্ফ আইসোলেশনে চলে যান। তবে মেলা বন্ধ কিংবা সীমিত করার কোনো ঘোষণা আসেনি।

এ দিকে মেলা শেষ হওয়ার পর খবর পাওয়া যায়, বহু মানুষ পুণ্য স্নান করতে এসে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আখিল ভারতীয় আখড়া পরিষদের প্রেসিডেন্ট নিজে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যারা মেলা নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছেন সেই সাধুদের ৩০ জন করোনায় আক্রান্ত। সর্বশেষ খবর পাওয়া যাচ্ছে, প্রতিদিন গড়ে ভারতে আড়াই লাখের বেশি করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন, মারা যাচ্ছেন দেড় হাজারের বেশি। বিজ্ঞান সাময়িকী ‘ল্যানসেট’ জানাচ্ছে, জুন মাসে ভারতে প্রতিদিন গড়ে করোনায় মৃত্যু আড়াই হাজার হবে।

করোনা রোগের চিকিৎসায় বাংলাদেশের চেয়েও পিছিয়ে পড়ছে ভারত। রয়টার্সের একটি ছবিতে করোনার চিকিৎসায় ভারতে ভয়াবহ সঙ্কটের প্রতীকী চিত্র উঠে এসেছে। হাসপাতালে রোগীর জায়গা দিতে পারছে না। এই অবস্থায় সঙ্কটাপন্ন রোগীদের দুজনে মিলে এক বেড ভাগাভাগি করছেন। নিরাপদ দূরত্ব, সামাজিক দূরত্ব বা শারীরিক দূরত্ব সবই এখন বেহাল অবস্থায় রয়েছে। চিকিৎসার দীনতা প্রকাশকারী রয়টার্সের ছবিটি নয়াদিল্লির জয়প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতালের। এ অবস্থায় ভারতীয় মিডিয়ার খবরে দেখা যায়, বিজেপি সরকার মহাব্যস্ত পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হওয়া নিয়ে। সরকারের প্রধান দুই ব্যক্তি নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহ ভোটের প্রচারণায় প্রায়ই হাজির হচ্ছেন রাজ্যটিতে। মোদি ইতোমধ্যে এজন্য ১২ বার সফর করেছেন পশ্চিমবঙ্গ। দেশটির একজন প্রধানমন্ত্রীর কোনো রাজ্য সফরের এমন নজির আর নেই।

করোনার মোকাবেলায় ভারত সর্বজনীন, অসম্প্রদায়িক ও জনহিতৈষী কোনো নীতি নিতে পারেনি। অক্সফোর্ডের আবিষ্কৃত টিকা উৎপাদনের অনুমতি পেয়ে তারা সেটিকে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের কাজে লাগানোর জন্য জোর চেষ্টা চালায়। এটিকে তারা ‘টিকা কূটনীতি’ নাম দেয়। তাদের কূটনীতির মূলনীতি হলো বন্ধুদের উপহার শত্রুদের না দেয়ার সঙ্কীর্ণ নীতি। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাসহ বৈশ্বিক দাতব্য প্রতিষ্ঠানগুলো দরিদ্র মানুষের কাছে টিকা পৌঁছানো নিয়ে পেরেশান। এই অবস্থায় ভারত টিকা নিয়ে দাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ। শেষ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে, তাদের নিজেদের পুরো করোনা ব্যবস্থাপনা মুখ থুবড়ে পড়েছে। কয়েক দিন ধরে আন্তর্জাতিক মিডিয়ার গুরুত্বপূর্ণ খবর হচ্ছে, করোনায় দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় প্রস্তুতি গ্রহণে ভারত ব্যর্থ হয়েছে।

বাংলাদেশের সাথে ভারতের টিকা কূটনীতি ব্যাপক আলোচনায় আছে। বিশেষ করে আমাদের মিডিয়া ভারত থেকে টিকা প্রাপ্তির ‘সৌভাগ্যের খবর’ টানা প্রচার করতে থাকে। মিডিয়ার এ খবরের টোন হচ্ছে, এই দুর্দিনে আমরা সৌভাগ্যবান। ঘনিষ্ঠ বন্ধু হওয়ায় ভারত থেকে আমরা টিকা পেয়ে যাচ্ছি। এমন কি, অনেক সচ্ছল উন্নত দেশের তুলনায় আমরা আগে টিকা পেতে যাচ্ছি। এতে করে থার্ড হ্যান্ড বাংলাদেশ থেকে অনেকে টিকা নিতে ধরনা দিচ্ছে। জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে আমাদের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রীতিমতো জানিয়ে দিলেন, কোন কোন দেশ আমাদের কাছ থেকে টিকা পেতে আগ্রহী।

৩১ জানুয়ারি ডেইলি স্টার এ ব্যাপারে একটি রিপোর্ট করেছে। ওই রিপোর্ট মতে, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলম সংসদকে জানিয়েছেন, হাঙ্গেরি বাংলাদেশের কাছ থেকে পাঁচ হাজার ডোজ কোভিড-১৯ টিকার জন্য ‘অনুরোধ’ করেছে। প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের ওপর ধন্যবাদ দিতে গিয়ে তিনি সংসদের মাধ্যমে জাতিকে এ খবর জানান। ওই সময় আরো জানান, বলিভিয়াও আমাদের কাছ থেকে টিকা পেতে চায়। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে এখন সিদ্ধান্ত নিবেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

সংসদে দেয়া মন্ত্রীর ওই খবরের পাঁচ দিন পর ডেইলি স্টার আরেক খবরে জানাচ্ছে, বাংলাদেশ হাঙ্গেরিকে পাঁচ হাজার ডোজ টিকা দেয়ার প্রস্তাব করেছিল। তবে ইউরোপীয় দেশটি এ টিকা নিতে আগ্রহী নয়। স্টার হাঙ্গেরির একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকাকে উদ্ধৃত করে জানাচ্ছে, বাংলাদেশ আসলে হাঙ্গেরির একটি বদান্যতার জন্য টিকা দেয়ার প্রস্তাব করেছিল। সেটা হচ্ছে, দেশটির ডাক্তারেরা প্লাস্টিক সার্জারি করে বাংলাদেশী টুইনকে আলাদা করেছিল। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দেয়া খবরের সাথে হাঙ্গেরির ট্যাবলয়েডে প্রচারিত খবরের মিল নেই। ওই খবর অনুযায়ী বাংলাদেশ সৌজন্যতাবশত টিকা দেয়ার প্রস্তাব করেছে। অন্য দিকে বাংলাদেশের সংসদে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর যে খবর প্রকাশ পেয়েছে তাতে দেখা যায়, মন্ত্রী জানাচ্ছেন হাঙ্গেরি বাংলাদেশ থেকে টিকা পেতে ‘রিকোয়েস্ট’ করেছে। সংসদে বক্তব্য দিতে গিয়ে আমাদের মন্ত্রী কি কিছুটা স্মৃতিভ্রষ্ট হয়েছিলেন? না তিনি অসত্য বলেছেন? আমাদের সংবাদমাধ্যম কূটনৈতিক শিষ্টাচার বিষয়ে আর কোনো সংবাদ প্রচার করতে দেখা যায়নি।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকোকে নিয়ে ভারত থেকে টিকা পেতে সরকার ত্রিপক্ষীয় চুক্তি করেছে। চুক্তি অনুযায়ী, বেক্সিমকো প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে টিকা এনে স্বাস্থ্য অধিদফতরকে সরবরাহ করবে। এভাবে ছয় মাসে বাংলাদেশের তিন কোটি ডোজ টিকা পাওয়ার কথা। এখন জানা যাচ্ছে, মাত্র প্রথম চালানে ৫০ লাখ টিকা ভারত সরবরাহ করেছিল। পরের মাস ফেব্রুয়ারিতে ২০ লাখ টিকা সরবরাহ করার পর ভারতের সেরামের টিকা আসা বন্ধ হয়ে রয়েছে। টিকা প্রাপ্তি নিয়ে বাংলাদেশে প্রথম দিকে অনেক মাতামাতি হলো। চুক্তিকারীরা অনেক আত্মবিশ্বাস দেখালেন। তাদের বক্তব্যের সারকথা হচ্ছে বন্ধুদেশ তাদের প্রতিশ্রুতি ঠিক রাখবে। এখন খবর পাওয়া যাচ্ছে, প্রথম ডোজ পাওয়া ব্যক্তিদের অনেকের দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার নিশ্চয়তা নেই। সরকার মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে গেছে তিন কোটি টিকার জন্য আশা করে বসে থাকা ভারতের সাথে থাকা অন্যান্য ইস্যুগুলোর মতো বোকামি হবে। এখন নিশ্চয়ই চীনা টিকার ট্রায়াল নিয়ে নানা শর্ত ও দীর্ঘসূত্রতার বিষয়টি সবার নজরে পড়ার কথা। শেষ পর্যন্ত নানা প্রকার গড়িমসির কারণে চীনারা এ দেশে এ টিকার ট্রায়াল দেয়া থেকে সরে যায়। সেই চীনের কাছ থেকে টিকা পাওয়ার জন্য বাংলাদেশ এখন ধরনা দিচ্ছে।

চুক্তি করে টাকা দিয়ে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুত টিকা ভারত থেকে পাচ্ছে না। চুক্তি করার মধ্যে একটা বাধ্যবাধকতা থাকে। অন্য অনেক বিষয়ের মতো ভারত বা ভারতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অঙ্গীকার রক্ষা করে না। আমাদের প্রতিবেশী বৃহৎ দেশটির নীতি ও আদর্শের ক্ষেত্রে দৃঢ়তার বড় ঘাটতি সবসময় লক্ষ্য করা যায়। দেশটি যখন অঙ্গীকার রক্ষা করতে পারছে না সেই সময় দেখা যাচ্ছে আমাদের তারা টিকা ‘উপহার’ দিচ্ছে। প্রথমে তারা আমাদের ২০ লাখ টিকা উপহার দিলো। এরপর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমাদের দেশ সফরে এসে সৌজন্য হিসেবে আনলেন ১২ লাখ টিকা। তাদের এমন বদান্যতা দেখা যাচ্ছে ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রধানের সফরেও। তিনিও বাংলাদেশের সেনাপ্রধানকে এক লাখ টিকা উপহার দিয়েছেন।

হিন্দুস্থান টাইমসের খবরে জানা যায়, টিকা রফতানিকারক ভারত নিজে এখন টিকা আমদানির চেষ্টা চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে তারা টিকা আমদানি করার জন্য রাশিয়ার সাথে চুক্তি করেছে। অচিরেই করোনার রুশ টিকা ‘স্পুটনিক’ আমদানি করা শুরু হবে। নিজের দেশের মানুষকে দেয়ার জন্য পর্যাপ্ত টিকা তাদের হাতে নেই। দেশটিতে মহামারী যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে তা মোকাবেলা করা তাদের দুঃসাধ্য হয়ে গেছে। করোনা নিয়ে দেশটি কূটনীতি করার যে চেষ্টা চালিয়েছিল সেটা যে তাদের টেকসই ও দৃঢ় কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না, অল্প সময়ের মধ্যে তা প্রমানিত হয়ে গেল।

কিছু কিছু দেশের রাজনীতিবিদরা করোনাকেও নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে চাইলেন। একে তারা উপস্থিত লাভ তুলে নেয়ার হাতিয়ার হিসেবে দেখলেন। তারা ভাবতে পারেননি, এটি প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের মত কোনো নিয়ন্ত্রণযোগ্য শক্তি নয়। বাংলাদেশে সাহেদ সাবরিনারা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এটিকে বিক্রি করে খেয়েছে। সরকার চেয়েছে করোনার ব্যবসা করে নিজের ভাবমর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে। তাই অন্য দেশের টিকা পাওয়ার উপর ভর করে টিকা উপহার দেয়ার হঠকারী বক্তব্য আমরা পেয়েছি। সরকার বরাবর বলতে চেয়েছে, করোনা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম সফল দেশ। তারা এটিকে নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছে। এটা তাদের রাজনৈতিক কৃতিত্ব অর্থাৎ রাষ্ট্র পরিচালনায় দক্ষতা। ভারতের সরকার চেয়েছেন, অক্সফোর্ডের আবিষ্কৃত টিকা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উপহার পাঠিয়ে নিজেদের লক্ষ্য হাসিল করবেন। আমাদের প্রতিবেশী দুটো দেশই এখন পেছনে তাকিয়ে দেখতে পাচ্ছে বাইরে তাদের ভাবমর্যাদা বাড়েনি। অন্য দিকে এই অন্যায্য তৎপরতা চালাতে গিয়ে নিজেদের দেশেও করোনা মোকাবেলার প্রস্তুতি গ্রহণ করা যায়নি। ভারতে ১৪০ কোটি জনগণের জন্য আসন্ন করোনার হুমকি মোকাবেলায় তাদের প্রস্তুতি নেই। বাংলাদেশে দেখা গেল করোনার জন্য নির্মিত হাসপাতাল ‘হাওয়া হয়ে গেছে’। মনে হয়েছিল করোনা চলে যাচ্ছে; আমাদের রাজনীতিটা করে নেই। দেখা গেল, না করোনা অধিক শক্তি সঞ্চয় করে ফিরে এসেছে।

jjshim146@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement