২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

নতুন বছরে ‘ভূতের অর্থনীতি’

নতুন বছরে ‘ভূতের অর্থনীতি’ -

বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ সব রেকর্ড ভঙ্গ করে বেড়ে চলেছে। সারা বিশ্ব মহামারীর উপর্যুপরি আঘাতে বিপর্যস্ত। তাই পৃথিবীর সব জায়গায় অর্থনীতির সব সূচক নিম্নগামী। বিদেশে থাকা আমাদের প্রবাসীরা চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরছেন। যারা ফিরে আসছেন তারা ফিরে যেতে পারছেন না। কোনো দেশ নতুন করে শ্রমিক নিতে আগ্রহ হচ্ছে না। আবার প্রবাসে থাকা শ্রমিকদের অনেকে এখন বেকার। বছরটি সবার জন্য সব কিছু ‘নাই’ আর হারানোর হলেও এ সময়ে বিস্ময়কর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য বাংলাদেশ স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

২০১৩ সাল থেকে ছয় বছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন থেকে বেড়ে ৩০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। এই সময় বিশ্ব ছিল অনেকটাই স্বস্তি ও শান্তির। বিদেশী মুদ্রার মজুদ বাড়ার কৃতিত্বের অধিকারী বাংলাদেশের প্রবাসীরা। এই শ্রমিকরা বিদেশে গিয়ে শ্রমে ও ঘামে এই অর্থ উপার্জন করে পাঠিয়েছেন। প্রবাসী আয়ে এমন ধারাবাহিক অগ্রগতি স্বাভাবিক ও প্রত্যাশিত। ২০২১ সালে করোনা পরিস্থিতির অবনতি না হলে ২০২০ সাল পৃথিবীর ইতিহাসে বিপর্যয়ের বছর হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। সম্ভবত কয়েক শতাব্দীর সারা বিশ্ব ভয়াবহ যুদ্ধ ছাড়া এমন ভীতি ও বিশৃঙ্খল অবস্থা দেখেনি। ইতালি, ফ্রান্স ও স্পেনের মতো অতি উন্নত দেশগুলো পর্যন্ত দিশা হারিয়ে ফেলেছে। সব কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়ে তারা ঘরে বসে থেকে মহামারীজনিত পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করেছে।

তবে পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ নেয়ার যে চেষ্টা, সেটা কোনো কাজে আসেনি। যেখানে যতটা আঘাত হানার করোনা সেই আঘাত হেনেছে। মানুষের ইচ্ছা চেষ্টা চাওয়া ইত্যাদি তার বিপরীতে খুব কার্যকর কিছু করতে পারেনি। স্কুল কলেজ অফিস আদালতসহ সব অর্থনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ করে বাঁচার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। ইউরোপে এর ব্যতিক্রমও ছিল। সুইডেন কোনো ধরনের লকডাউনে যায়নি। তারা চলাচলের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেননি। তাদের স্কুল কলেজ অফিস আদালত বন্ধ হয়নি। ইউরোপের অন্য দেশগুলোর তুলনায় তাদের করোনায় আক্রান্ত ও প্রাণ হারানোর সংখ্যা কম। করোনাকে প্রতিরোধ করার মানবীয় চেষ্টা এবং কারো কারো করোনা পরাজিত করার আস্ফালন বৃথা গেছে। ‘অতি সচেতনতা’ করোনার আঘাত হানার গতিকে খুব বেশি একটা হেরফের করেনি।

প্রতি বছর পৃথিবীতে যে হারে মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে, ২০২০ সালেও একই হারে মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। করোনা মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যুহারকে প্রভাবিত করেনি। এই অবস্থান থেকে দেখলে করোনাকে একটি উচ্চ প্রচারণা বলা যায়। এই প্রচারণা নামিয়ে এনেছে ভয়াবহ ভীতি, যা বিশ্ব অর্থনীতিকে বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। গ্লোবাল ভিলেজ হয়ে গিয়েছে অগুনতি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। একটি বাড়ির সাথে অন্য একটি বাড়ির যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়েছে। একই বাড়িতে থেকেও মানুষ হয়েছে প্রবাসী। কেউ কারো সাথে যোগাযোগ করতে কিংবা কথা বলতে পারেনি। এ কারণে সারা বিশ্বের অর্থনীতি ধসে গেছে।

সব দেশের অর্থনীতির সঙ্কোচন হয়েছে। কেউ কারো জন্য সাহায্য নিয়ে এগিয়ে আসতে পারেনি। সবাই নিয়েছে সংরক্ষণবাদী প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা। ঘর দরজা বন্ধ করে দিয়ে সবাই নিজে বাঁচতে চেষ্টা করেছে। মানুষের চরম স্বার্থপর প্রবণতা বোঝার জন্য করোনা একটা মোক্ষম দৃষ্টান্ত হিসেবে আমাদের সামনে এসেছে। ঠিক এই বছরে অর্থনীতির সব গ্রামার ব্যর্থ করে দিয়ে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ বেড়ে যাচ্ছে। ছয় বছরে যে পরিমাণ মজুদ বেড়েছে, অবিশ্বাস্যভাবে এই বিপর্যয়ের এক বছরে বেড়েছে তার চেয়ে বেশি। এখন আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ ৪৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। অর্থাৎ, এক বছরে বিদেশী মুদ্রার মজুদ ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বেড়ে গেল।

করোনার ভীতিকর পরিবেশে দেশে নতুন করে শিল্প স্থাপন বন্ধ। রফতানিমুখী পণ্যের ক্রয়াদেশ কমে গেছে। তাই কাঁচামাল আমদানিও বন্ধ। এসব কারণে বড় ধরনের বৈদেশিক মূল্য পরিশোধ করতে হচ্ছে না। অন্য দিকে সরকার প্রবাসীদের অর্থ প্রেরণের ওপর ২ শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে। এসব কারণে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ ১০ গুণ বেড়ে যেতে পারে কি না অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের ভেবে দেখার বিষয়। পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর বিস্ময়কর অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ‘ইস্ট এশিয়ান মিরাকল’ নামে অভিহিত করা হয়। এ ধরনের উন্নয়ন মানবিক কর্মকাণ্ডের স্বাভাবিক গতিতে হয় না বলেই অর্থনীতিবিদরা মনে করেছিলেন। তাই এই উন্নয়নের এমন নামকরণ হয়েছিল। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বিদেশ থেকে অর্থ প্রবাহের এই অলৌকিক স্রোত নিয়ে মানুষের মধ্যে কৌতূহল। সবাই যখন নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছে, শুধু নিজে খেয়ে-পরে বাঁচতে চাইছে, তখন কি ভূতেরা বাংলাদেশে টাকা পাঠাচ্ছে? এমন ভৌতিক কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে আরো বহু দেখা গেছে। এই দেশটিকে বিগত একযুগে কেমন যেন চেনা যাচ্ছে না। এসব ব্যাপারে দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা নেই।

রেকর্ড পরিমাণ মুদ্রা পাচার হচ্ছে
যুক্তরাষ্ট্রকেন্দ্রিক গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই) বলছে, বিগত এক দশকে বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর গড়ে ৬৪ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। ডলারে এ অর্থ প্রতি বছর সাড়ে ৭ বিলিয়ন। সেই হিসাবে গত এক দশকে বাংলাদেশ থেকে ৭৫ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়ে গেছে। টাকার অঙ্কে সাড়ে ৬ লাখ কোটি টাকা।

এক দশক ধরে মুদ্রাপাচারকারীরা অবাধে দেশ থেকে লুটে নিয়েছে। মুদ্রাপাচার রোধের জন্য দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানগুলোকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়নি। এমন শোনা যায়নি যে, বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ চোরদের শনাক্ত করেছে। এমনকি কেন্দ্রীয় ব্যাংক, দুর্নীতি দমন কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কারো কোনো আওয়াজ আমরা শুনিনি।

‘জিএফআই’ চারটি পদ্ধতি শনাক্ত করেছে যার মাধ্যমে মুদ্রা বাংলাদেশ থেকে সহজে পাচার করা হচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে হুন্ডি। ব্যাংক ঋণ নিয়ে সহজে পাচার করা হচ্ছে হুন্ডির মাধ্যমে। এই প্রক্রিয়ায় দেশের ব্যাংকগুলো লুট হয়ে গেছে। এসব ঋণ আর ব্যাংকগুলো ফেরত পাবে না। এ ধরনের খেলাপি ঋণের পরিমাণ তিল লাখ কোটি টাকা। অর্থাৎ ১০ বছরে যে পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে তার প্রায় অর্ধেক টাকা ব্যাংক লুট করা।

সম্প্রতি বাংলাদেশের উচ্চ আদালতকে এগিয়ে আসতে দেখা গেল। আদালত এক আদেশে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সরকারের ছটি সংস্থাকে মুদ্রাপাচারকারীদের একটি লিস্ট উপস্থাপন করার নির্দেশ দিয়েছেন। দুদক এবং চারটি সংস্থা ১০০ জন পাচারকারীর নাম দিয়েছে। তারা জানিয়েছেন আড়াই হাজার কোটি টাকা পাচারের কথা। জিএফআই যে তথ্য প্রকাশ করেছে সে তুলনায় এটা একেবারেই নগণ্য। আদালত পুনরায় আদেশ দিয়েছেন পাচারকারীদের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা উপস্থাপন করার জন্য। মুদ্রাপাচারের সাথে উচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে ফেরার কোনো সম্পর্ক রয়েছে কি না সে ব্যাপারে এখনো কেউ পরিষ্কার বক্তব্য রাখেননি।

দেশের মানুষের দুর্দিন
সারা বিশ্বের মতো করোনাকালে বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার বড় ধরনের অবনতি হয়েছে। ২০১৯ সালে বাংলাদেশে দরিদ্র মানুষ ছিল ২০ শতাংশ। চরম দরিদ্র ছিল দেশের ১০ শতাংশ মানুষ। করোনা আগমনের পরে ২০২০ এর জুনে দেখা যাচ্ছে, দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৩০ শতাংশ ছুঁয়েছে। চরম দরিদ্র মানুষের হার দ্বিগুণ হয়ে ২০ শতাংশ হয়েছে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) বছর শেষে দরিদ্র মানুষের হার ৩৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে বলে তথ্য-উপাত্তে দেখিয়েছে। সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) বলছে, বছর শেষে এ দেশে দরিদ্রতার হার ৪০ দশমিক ৫ শতাংশ হবে। জাতিসঙ্ঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশে দুই কোটি মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়ে গেছে। অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্য-উপাত্তের মধ্যে খুব একটা ফারাক নেই। সবার হিসাবে দেশের মানুষের অর্থনৈতিক দুরবস্থার চিত্রই ফুটে উঠেছে।

দারিদ্র্য কমার রেখাচিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, আমরা মাত্র এক বছরে ঠিক ২০ বছরের অর্জন হারিয়ে ফেলেছি। ২০০০ সালের দিকে দেশে দরিদ্র মানুষের হার ছিল ৪০ শতাংশ। করোনার ভয়াবহ আঘাতে মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে আমরা ২০ বছর আগের অবস্থানে ফেরত গেছি। ইউএনডিপির সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, করোনার আগমনের পর দেশের শহরাঞ্চলে এই সময়ে দারিদ্র্য বেড়েছে তিনগুণ। এর প্রধান কারণ মেগাসিটি ও শহরগুলোতে মানুষ পাইকারিহারে চাকরি হারিয়েছে। যারা এখন চাকরি করছেন, তাদের অনেকের বেতন কমিয়ে দেয়া হয়েছে।

জাতিসঙ্ঘের একটি প্রতিবেদনে জীবিকার ওপর করোনার আঘাত দেখানো হয়েছে। করোনার অভিঘাতে ঢাকায় ৭৬ শতাংশ মানুষ তাদের কর্ম হারিয়েছে। এর বাস্তব চিত্র ঢাকায় আমরা দেখতে পাচ্ছি প্রতিদিন। কোভিডের আগের ঢাকা এখন আর নেই। দেশের দ্বিতীয় প্রধান শহর চট্টগ্রামে কর্ম হারিয়েছে ৫৯ শতাংশ মানুষ। এ দুই শহরের ৮০ শতাংশ কর্মজীবী বলছেন, তাদের আয় কমেছে। অন্য দিকে ৯৪ শতাংশ ব্যবসায়ী বলেছেন, তাদের ব্যবসা কমে গেছে। ‘দিন আনে দিন খায়’ এমন লোকদের অবস্থা আরো খারাপ। বাসাবাড়িতে কাজ করে কিংবা পরিচ্ছন্নতা কর্মী- এই শ্রেণীর অবস্থা তার চেয়েও খারাপ। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, তাদের ৫৪ শতাংশ চাকরি হারিয়েছে।

পোশাক কারখানায় পাইকারিহারে চাকরি হারানোর ঘটনা ঘটেছে। শ্রমিক নেতারা দাবি করছেন, ইতোমধ্যে এক লাখ পোশাক শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন। পোশাক শিল্প মালিকরা জানাচ্ছেন, ৭৬ হাজার শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন। চাকরিরত শ্রমিকদের বেতন কমিয়ে দেয়া হয়েছে।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাব বাংলাদেশে পড়েছে। প্রধানত আমাদের পোশাক শিল্প এতে আবারো বড়সড় ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছে। পোশাক রফতানির প্রধান দুটি বাজার ইউরোপ ও আমেরিকার বাজারে আবার মন্দা শুরু হয়েছে। রফতানি আদেশ বন্ধ করে দিচ্ছে তারা। এ ক্ষেত্রে ধনী পক্ষগুলো কোনো ধরনের অঙ্গীকার রক্ষা করার প্রয়োজন মনে করে না। একইভাবে পোশাক শিল্প মালিকরা শ্রমিকদের প্রতি থাকবেন দায়দায়িত্বহীন। তাই আবারো ঘটতে চলেছে নতুন করে চাকরি হারানোর ঘটনা। বেতন কমিয়ে দেয়ার ঘটনা।

সানেমের হিসাবে, বছর শেষে দেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর হার ৪০ দশমিক ৫ শতাংশ দাঁড়ানোর কথা। বাইরে থেকে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থায় এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। শহরগুলো প্রায় খালি হয়ে গেছে। ছোটখাটো চাকরি করে যারা জীবন নির্বাহ করতেন, তারা আর শহরে টিকতে পারেননি। ফুটপাথে হকারির সেই রমরমা চিত্র নেই। শহরের রাস্তায় জনসমাগম আগের মতো হচ্ছে না। তাই ফুটপাথের আগের ব্যবসা নেই। রাস্তায় ভিক্ষুকের সংখ্যা আগের চেয়ে বেড়ে গেছে।

বাংলাদেশের জনসংখ্যা এখন প্রায় ১৭ কোটি। সানেমের হিসাবে তাই দরিদ্র মানুষের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৭ কোটি। এর মধ্যে অতি দরিদ্র মানুষের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন কোটি। আফ্রিকার কয়েকটি দেশ মিলিয়েও আমাদের দেশের দরিদ্র মোট মানুষের সংখ্যার সমান হবে না। অর্থাৎ প্রকৃতপক্ষে করোনার আঘাতে আমাদের দেশের একাই আফ্রিকার কয়েকটি দারিদ্র্যপীড়িত দেশের মতো অবস্থা। অতি দরিদ্র সাড়ে তিন কোটি মানুষের আহারের ব্যবস্থা যদি আমরা করতে না পারি তা হলে আমাদের অবস্থা প্রকৃতপক্ষে সোমালিয়া ও ইথিওপিয়ার মতোই করুণ।

সামাজিক নিরাপত্তা জোরদার করতে আগে থেকে এ দেশে বহুসংখ্যক কর্মসূচি চালু রয়েছে। ওই কর্মসূচি থেকে দরিদ্র মানুষ যতটা সাহায্য পায়, তার চেয়ে বেশি অর্থ ও ত্রাণসহায়তা দুর্নীতিবাজদের পকেটে চলে যাওয়ার রেকর্ড রয়েছে। এসব দুর্নীতি ঠেকাতে না পারলে চরম দরিদ্র মানুষ না খেয়ে মরবে।
jjshim146@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement