ধর্ম ও সংস্কৃতি
- শাহ্ আব্দুল হান্নান
- ০৯ জুলাই ২০২০, ২৩:০১
যেকোনো সংস্কৃতির ভিত্তিকে বিশ্বাস বলে মনে করি। কারণ, আমাদের জীবনের কাজগুলোই যদি সংস্কৃতি হয়ে থাকে, সেগুলো প্রকৃতপক্ষে আমাদের বিশ্বাসেরই প্রতিফলন। সেই বিশ্বাস থেকেই মূল্যবোধের জন্ম এবং তা-ই জীবনের নিয়ামক হয়ে ওঠে। অর্থাৎ বিশ্বাস মূল্যবোধ আকারে দেখা দেয় অর্থাৎ বিশ্বাস থেকেই মূল্যবোধ উৎসারিত। কাজেই দেখা যাচ্ছে, মূল্যবোধের সাথে সংস্কৃতির সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। যে যা-ই বিশ্বাস করে তার মূল্যবোধ সে রকমই হবে এবং তার সংস্কৃতি মূল্যবোধের সাথে সম্পর্কিত।
আমি এখানে আরেকটি কথা যোগ করছি। আমরা বিভিন্ন সময় বলেছি, বিশ্বাস যদি সঠিক হয় তার সংস্কৃতি সুন্দর হবে। সংস্কৃতি সুন্দর হওয়াই প্রয়োজন। ‘সংস্কৃতি’র অর্থের মধ্যেও সৌন্দর্যচেতনার একটি দিক রয়ে গেছে। আমরা মুসলিমরা মহান স্রষ্টার একত্ববাদ বা তৌহিদে বিশ্বাস করি এবং আমাদের মূল্যবোধ অশ্লীলতাকে অনুমোদন করে না। এটি আমাদের সংস্কৃতিকে সুন্দর করতে সাহায্য করে। এ বিশ্বাস বা ধর্মীয় শিক্ষার মধ্যে যদি কোনো দুর্বলতা বা কুসংস্কার দেখা দেয় তাহলে তাতে সৌন্দর্যের হানি হবে।
আসলে সত্যের সাথে মিথ্যার, ধর্মের সাথে অধর্মের, নাস্তিকতার সাথে আস্তিকতার চিরন্তন সংগ্রাম চলছে। বিষয়টি সব বিশ্বাসী ব্যক্তির বোঝা দরকার এবং তা বুঝে এর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। না হলে মানবতা এমনিতেই পতনের দিকে এগিয়ে গেছে, তার আরো পতন ঘটবে। তা একেবারেই পতিত মানবতা হয়ে যাবে, পতিত সমাজে পরিণত হবে। অর্থাৎ মূল্যবোধহীন সমাজ মানে পতিত সমাজ, যা অতীব মারাত্মক বিষয়।
মৌলিক বিশ্বাস যদি ধর্ম থেকে আসে তাহলে বাকি সব মৌলিক মূল্যবোধ, সব মৌলিক আচরণ বা জীবনাচার তার ভিত্তিতেই গড়ে উঠবে। তাতে অন্য কোনো কিছুর প্রভাবের কারণে ত্রুটি থাকতে পারে; কিন্তু সংস্কৃতিকে ধর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন করা যায় না। এই চেষ্টা ফলপ্রসূ হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না।
সংস্কৃতিকে ধর্ম থেকে আলাদা করার চেষ্টা সঠিক নয় মোটেও। প্রথমত ধর্ম ক্ষতিকর কোনো কিছু নয় যে, এটিকে ধ্বংস করতে হবে। বরং ধর্মের মূল বাণী একেবারেই সহজ যে, ‘তোমার স্রষ্টা রয়েছেন এবং তুমি দায়বদ্ধ, তোমার হিসাব দিতে হবে তাঁর কাছে। কাজেই তুমি ভালো পথে চলো। মন্দ কাজ করো না।’ এই হচ্ছে ধর্মের কথা। ইসলাম মানবজাতির একটি অজেয় শক্তিতে পরিণত হতে পারে, যেমন অতীতে হয়েছিল। আমার দৃঢ়বিশ্বাস, ইনশা আল্লাহ হবে। আমরা মনে করি, বাংলাদেশে ইসলাম হবে একটি অজেয় শক্তি।
মূল্যবোধের শক্তি যদি দুর্বল হয়ে থাকে তাহলে প্রোপাগান্ডার ফলে তা দুর্বল থাকে। আর যদি কোনো দেশে ভালো কাজের আদেশ এবং মন্দ কাজের নির্দেশ-কুরআনের এই মৌলিক নির্দেশ পালন করা হয় তাহলে প্রোপাগান্ডা তাকে দুর্বল করতে পারবে না। ইসলামে সমাজকে রক্ষা করার জন্য একটি স্থায়ী ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সেটি হলো সৎ কাজের আদেশ, অসৎ কাজের নিষেধ। যদি প্রত্যেকে এটি করে তাহলে বিরূপ প্রোপাগান্ডা সফল হতে পারবে না। ফলে অপসংস্কৃতি এখানে সফল হতে পারবে না। হতে পারে, সেকুলারিজমের প্রভাব সমাজে এখনো আছে। কিন্ত সেকুলারিজমের উত্থান যেটি ছিল তা থিতিয়ে গেছে। ইসলাম সেকুলারিজমকে থামিয়ে দিয়েছে। এলিটদের মধ্যে ইসলামের প্রভাব বাড়াতে হবে। সার্বিকভাবে ইসলামের প্রভাব বাড়ছে। এ কথাও ঠিক, ইসলামে কর্মীর সংখ্যাও বেড়েছে। কাজেই বলা যায় অপসংস্কৃতি ও সেকুলারিজম ইসলামের কাছে টিকবে না। তারা সমাজের মূল নিয়ামক হবে না।
লেখক : সাবেক সচিব, বাংলাদেশ সরকার
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা