নিরাপত্তাহীনতায় জাতীয় অর্থনীতি
- সৈয়দ মাসুদ মোস্তফা
- ০৪ জুলাই ২০২০, ০৬:২৮
দেশ থেকে অর্থপাচার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। একশ্রেণীর অসাধু ও লোভাতুর মানুষ অর্থপাচারকেই নিজেদের জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বানিয়ে নিয়েছেন। ফলে নিরাপত্তাহীনতার আতঙ্কে পড়েছে জাতীয় অর্থনীতি। প্রাপ্ত তথ্যমতে, শুধু ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাচার হয়েছে এক হাজার ১৫১ কোটি ডলার, যা ৯৮ হাজার কোটি টাকার সমতুল্য। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এ বিষয়ে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিশ্বের অন্যান্য দেশ তথ্য দিলেও বাংলাদেশ ২০১৬ ও ২০১৭ সালের কোনো তথ্য দেয়নি বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক ওই সংস্থাটি। ফলে ২০১৫ সালের পর বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত অর্থের পরিসংখ্যান সংস্থাটি প্রকাশ করতে পারেনি।
জিএফআইয়ের তথ্যমতে, সাত বছরে বাংলাদেশ থেকে পাঁচ হাজার ২৭০ কোটি ডলার পাচার হয়েছে। স্থানীয় মুদ্রায় সাড়ে চার লাখ কোটি টাকা, যা ২০১৯-২০ জাতীয় বাজেটের প্রায় সমান। প্রতি বছর গড়ে পাচার হয়েছে প্রায় ৬৪ হাজার কোটি টাকা। টাকা পাচারে বিশ্বের শীর্ষ ৩০ দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশের অবস্থান। এ ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পরই বাংলাদেশের নাম। সংস্থাটির বলেছে, বাংলাদেশের মোট বাণিজ্যের প্রায় ১৯ শতাংশই কোনো না কোনোভাবে পাচার হচ্ছে।
জিএফআইয়ের রিপোর্ট মতে, ২০০৮-১৭ সাল পর্যন্ত ১৩৫টি দেশ থেকে ৮ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। এর মধ্যে ৩৬টি উন্নত দেশ থেকে পাচার হয়েছে ৮১৭ বিলিয়ন ডলার। চীন থেকে ৩২৩, মেক্সিকো ৬২, রাশিয়া ৫৬, পোল্যান্ড ৪০ এবং মালয়েশিয়া থেকে ৩৬ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে।
আমাদের দেশের মোট বিনিয়োগের ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ আসে বেসরকারি খাত থেকে। কিন্তু বিদায়ী অর্থবছরে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ কমেছে। দেশে বিনিয়োগের সুষ্ঠুু পরিবেশ না থাকায় অর্থপাচারের মচ্ছব চলছে। অনেকেই দেশে টাকা রাখা নিরাপদ মনে করেন না। এটিও বিদেশে অর্থপাচারের একটি অন্যতম কারণ। সূত্রমতে, আমদানিকৃত যন্ত্রপাতির মূল্য বেশি দেখিয়ে বিদেশে টাকা পাচার করা হচ্ছে অবলীলায়। শিল্প বিনিয়োগে মন্দার মধ্যেও শিল্পের যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানি বেড়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে সন্দেহ প্রকাশ করে বলা হচ্ছে, শিল্পের যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানির নামে দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারের ঘটনা ঘটছে।
আসলে যেভাবে শিল্পের যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানি হয়েছে, সেভাবে শিল্পের উৎপাদন বাড়েনি। কৃষিতে কয়েক বছর ধরে ভালো ফলন হওয়ার পরও সাম্প্রতিক সময়ে চাল আমদানি বেড়েছে। সরকারের পক্ষে দাবি করা হচ্ছে, দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। কিন্তু তারপরও কেন চাল আমদানি হচ্ছেÑ এ প্রশ্নের সদুত্তর পাওয়া যাচ্ছে না। এখানেও অর্থপাচারের রহস্য লুকিয়ে আছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সম্প্রতি জিএফআই বৈশ্বিক অর্থপাচার বিষয়ক যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পার্থক্যের মূল্যায়নের ভিত্তিতে করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। সরকারি তথ্যে দেখা যায়, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে তিন বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করেছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের তথ্য হচ্ছে তারা বাংলাদেশ থেকে চার বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। এতে প্রতীয়মান হয়, বাংলাদেশ এক বিলিয়ন ডলারের রফতানির তথ্য গোপন করেছে। ওই অর্থ পাচার হিসেবে ধরা হয়। এভাবেই চলে অর্থের পাচারকাজ। কুশীলবরা থাকে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি বছর গড়ে ৬৫১ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ বাংলাদেশ থেকে পাচার হচ্ছে। ২০১০ সালে ৫৪০ কোটি ডলার অর্থ পাচার হয়েছিল। তিন বছরের ব্যবধানে এই অর্থ বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৯৬৬ কোটি মার্কিন ডলারে। তবে ২০১৪ সালে ৯১১ কোটি ডলারে নেমে আসে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, গত ১০ বছরে ছয় হাজার ৩০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে। পণ্য বা সেবা আমদানিতে ওভার ইনভয়েসিং এবং রফতানিতে আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে এ অর্থ পাচার হচ্ছে বলে রিপোর্টে উল্লেøখ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে ২০০৫ সালে ৪২৬ কোটি ডলার, ২০০৬ সালে ৩৩৭ কোটি, পরের বছর ২০০৭ সালে ৪০৯ কোটি ডলার পাচার হয়। ২০০৮ সালে পাচারের পরিমাণ ৬৪৪ কোটি ডলার দাঁড়ায়। ২০০৯ সাল থেকে পরবর্তী দু’বছর অর্থপাচার কিছুটা কমে আসে। ওই বছর ছিল ৫১০ কোটি ডলার। এ ছাড়া ২০১০ সালে ৫৪০ কোটি, ২০১১ সালে ৫৯২ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ পাচার হয়। ২০১২ সালে পাচার হয় ৭২২ কোটি।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দেশ থেকে প্রতি বছর যে টাকা পাচার হয়, এটি তার খণ্ডিত চিত্র মাত্র। বাস্তবতা আরো ভয়াবহ বলে তারা মন্তব্য করেছেন। তারা মনে করছেন, মোট বাণিজ্যের ৩৬ শতাংশই বিদেশে পাচার হয়। এর অনেক কারণও রয়েছে। এগুলো বন্ধে সরকারের সদিচ্ছা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে মহলবিশেষে। মূলত দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে অর্থপাচারে ভারতের পরের অবস্থানে বাংলাদেশ। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচারের পরিমাণ ৩৬ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার। যা আমাদের দুর্বল অর্থনীতির জন্য খুবই উদ্বেগজনক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি তদন্ত প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, শিল্পের যন্ত্রপাতি ভর্তি কনটেইনারে পাওয়া গেছে ছাই, ইট, বালু, পাথর ও সিমেন্টের ব্লক। এতে শিল্পের কোনো যন্ত্রপাতি পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরে শুল্ক গোয়েন্দাদের তদন্তে খালি কনটেইনার আমদানির ঘটনাও ধরা পড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ভুয়া রফতানি এলসি (ঋণপত্র) এবং ক্রয়চুক্তির মাধ্যমে টাকা পাচারের প্রবণতা আগের তুলনায় বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্তে এ ধরনের বেশ কিছু ঘটনা ধরা পড়েছে। কিন্তু এসব প্রতিবিধানে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর কোনো কার্যকর পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি।
দেশ থেকে অর্থপাচার বিভিন্নভাবেই হয়ে থাকে। গত তিন বছরে মালয়েশিয়া সরকারের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যমতে, বিদেশীদের জন্য মালয়েশিয়ান সরকারের সেকেন্ড হোম প্রকল্পে বাংলাদেশ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিনিয়োগকারী দেশ। এর আগে মালয়েশিয়া সরকারের এক কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, সেখানে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিদেশী বিনিয়োগকারী দেশ বাংলাদেশ। যদিও দেশ থেকে বিদেশে কোনো টাকা নিতে হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। গত ১০ বছরে মালয়েশিয়ায় বিনিয়োগের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কাউকে কোনো অনুমোদন দেয়নি। কিন্তু এরপরও বাংলাদেশ মালয়েশিয়ায় কিভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিনিয়োগকারী দেশ হলো তা বোধগম্য হচ্ছে না। কানাডায় বিপুল বাংলাদেশী বসবাস করেন। সেখানে বেগমপাড়া নামে একটি বাঙালি কলোনিও গড়ে উঠেছে। বিশেষ করে আমাদের দেশের একশ্রেণীর রাজনৈতিক নেতা সেখানে টাকা পাচারের মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি হংকংয়ে অনেক বাংলাদেশী ব্যবসায়ীর অফিস রয়েছে। সেখানে তারা পুঁজি পাচার করে নিয়মিত ব্যবসা করছেন।
আইনের শাসন ও সুস্থ ধারার গণতান্ত্রিক চর্চার অভাবেই দেশ থেকে পুঁজি পাচারের মতো আত্মঘাতী কাজ বন্ধ হচ্ছে না। অবশ্য ২০১৯ সালে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে বাংলাদেশীদের অর্থের পরিমাণ কিছুটা কমেছে। এক বছরের ব্যবধানে দেশটির বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশীদের অর্থের পরিমাণ প্রায় ১৫১ কোটি টাকা কমে গেছে। সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক (এসএনবি) গত ২৫ জুন ‘ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড ২০১৯’ বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। অর্থপাচারকারীরা সুইস ব্যাংককে আর অর্থপাচারের ক্ষেত্রে আগের মতো নিরাপদ মনে করছেন না। যেকোনো মুহূর্তে তথ্য ফাঁসের আশঙ্কায় রয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে ভারতের মতো দেশের অর্থপাচারকারীরা সুইস ব্যাংক টাকা রাখার হার কমিয়ে দিয়েছেন।
সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সালে দেশটির বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশীদের জমা করা অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬০ কোটি ৩০ লাখ ফ্রাঁ। বাংলাদেশী মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় পাঁচ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা। ২০১৮ সাল শেষে যার পরিমাণ ছিল প্রায় ৬২ কোটি সুইস ফ্রাঁ, বাংলাদেশী মুদ্রায় যা পাঁচ হাজার ৫১৮ কোটি টাকা।
উন্নয়নশীল দেশ থেকে অর্থপাচারসংক্রান্ত প্রতিবেদন নিয়মিত প্রকাশ করে আসছে জিএফআই। সর্বশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় ২৫ জুন। এ প্রতিবেদন জিএফআই বৈশ্বিক বাণিজ্যের হিসাবে মোট ৮ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ডলার গরমিল খুঁজে পেয়েছে। ‘ট্রেড রিলেটেড ইলিসিট ফিন্যান্সিয়াল ফ্লোজ ইন ১৩৫ ডেভেলপিং কান্ট্রিজ : ২০০৮-১৭’ শীর্ষক এ প্রতিবেদনে ১০ বছরের অর্থপাচারের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ২০১৪, ২০১৬ ও ২০১৭ সালের কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। এ তিন বছর বাদ দিয়ে সাত বছরে বাংলাদেশ থেকে বছরে অর্থপাচার হয়েছে গড়ে ৭৫৩ কোটি ৩৭ লাখ ডলার। এতে বলা হয়েছে, সাত বছরে সবচেয়ে বেশি অর্থপাচার হয়েছে ২০১৫ সালে। ওই বছর বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ এক হাজার ১৫১ কোটি ৩০ লাখ ডলার। এ ছাড়া ২০১৩ সালে ৮৮২ কোটি ৪০ লাখ ডলার, ২০১২ সালে ৭১২ কোটি ১০ লাখ, ২০১১ সালে ৮০০ কোটি ৭০ লাখ, ২০১০ সালে ৭০৮ কোটি ৭০ লাখ, ২০০৯ সালে ৪৮৯ কোটি ৯০ লাখ ও ২০০৮ সালে ৫২৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার পাচার হয়েছে দেশ থেকে।বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সারা বিশ্বেই অর্থপাচারের প্রধান মাধ্যম হিসেবে ট্রেড বিজনেস তথা আমদানি-রফতানিকে ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশও এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়। আমদানি-রফতানি ব্যাংকের মাধ্যমে হয়, এ জন্য অর্থপাচার প্রতিরোধে ব্যাংকারদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির দাবি উঠেছে। ব্যাংকারদের দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজনের দাবিও উঠেছে। এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) আরো গতিশীল ও কার্যকর করা দরকার বলেও অভিমত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
অবশ্য ট্রেড মিসপ্রাইসিংয়ের মাধ্যমে অর্থপাচার বেশি হয় বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট গবেষকরা। তাদের বক্তব্য, রফতানিতে আন্ডার ইনভয়েসিং ও আমদানিতে ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে এটা হচ্ছে। কিন্তু এসব দেখার কেউ আছে বলে মনে হয় না। এ ক্ষেত্রে এনবিআরের ভূমিকাও আশাব্যঞ্জক নয়। দেশ থেকে যেভাবে নির্বিঘেœ অর্থ পাচার হচ্ছে, তাতে আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতার কথাই বেশি প্রকাশ পেয়েছে। এ ব্যর্থতার দায় সরকারসহ সংশ্লিষ্টরা কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না। তাই দেশ ও জাতিকে এই অশুভ বৃত্ত থেকে মুক্ত করতে হলেও সরকার ও সংশ্লিষ্ট বিভাগকে একযোগে কাজ করতে হবে। অন্যথায় জাতীয় অর্থনীতিকে নিরাপদ করা সম্ভব হবে না। smmjoy@gmail.com
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা