২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
অন্য দৃষ্টি

জঙ্গলের শাসনের আগমন

- সংগৃহীত

জঙ্গলের শাসন কেমন? বাঘ-সিংহ যা চাইবে কেবল তেমনটিই হবে। জঙ্গলের শক্তিশালী পশুদের ইচ্ছায়ই কি সেখানে সব কিছু নির্ধারিত হয়। সম্ভবত সেখানেও একটা ‘আইন’ বা নিয়ম আছে। একারণে নিরীহ পশুরা গোষ্ঠীসহ হারিয়ে যায় না। বাঘ-সিংহ-হায়েনারা নিরীহ পশু হরিণদের ভক্ষণ করে ঠিকই; কিন্তু এমনভাবে তারা দুর্বলদের ওপর চড়াও হয় না যাতে করে দুর্বলের অস্তিত্ব লুপ্ত হয়ে যেতে পারে। পৃথিবীতে অসংখ্য বনজঙ্গল রয়েছে। সব বনজঙ্গলেই সবল-দুর্বলরা পাশাপাশি বসবাস করছে। প্রয়োজনে বাঘরা একটি হরিণকে ভক্ষণ করে নিজেদের ক্ষুধা মেটায়। তবে লোভের বশবর্তী হয়ে একের পর এক হরিণকে হত্যা করে তারা হরিণের বংশ সাবাড় করে ফেলে না। একইভাবে জঙ্গলের সংখ্যাগুরুরা অকারণে চড়াও হয় না সংখ্যালঘুদের ওপর। সংখ্যালঘুরা তাই কখনো সেখানে মার্জিনালাইজড হয়ে যায় না।

পৃথিবীর মানুষ এখন নিজেদের ‘সভ্য’ বলে দাবি করে বড়গলায়। মানুষের দাবি তাদের নিজেদের উচ্চ মানবিক মর্যাদা রয়েছে। ফলে তারা সব মানুষের সমান অধিকার ও মর্যাদার কথা স্বীকার করে নেয়। আবার তারা নিজেদের ইতিহাসও রচনা করেছে। ওই ইতিহাসে মানুষের সীমাহীন কালের এক বিবর্তনের ইতিহাসও বর্ণনা করে থাকে। বিবর্তনের বিভিন্ন পর্যায়ে মানুষ পশুদের থেকে আলাদা হয়ে উন্নত মর্যাদার মানবিক সমাজ কায়েম করতে পেরেছে। সেই সমাজের সর্বশেষ বিকাশের স্তর হলো গণতন্ত্র, সমানাধিকার, মানবাধিকার ইত্যাদি। মানবতার এই উচ্চ অবস্থান থেকে কিছু দেশের এখন বিচ্যুতি দেখা যাচ্ছে। যারা এমন বিচ্যুতি ঘটাচ্ছেন তারা নিজেদের ‘উচ্চ মানবিক মর্যাদাবোধসম্পন্ন মানুষ’ বলেই দাবি করছেন। এদের কর্মকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে দেশ দখল, সংখ্যালঘুদের নিশ্চিহ্ন করা, ভীতি সঞ্চার করে দুর্বল করে দমিয়ে রাখা ইত্যাদি।

সামরিক অভিযান চালিয়ে ইউক্রেনের ক্রিমিয়াকে রাশিয়ান ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত অঞ্চল করে নেয়া, রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালিয়ে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেয়া, উইঘুর মুসলমানদের যাবতীয় মানবাধিকার হরণ করে অন্যায়ভাবে কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে আটকে রাখা, ভারতে সংখ্যালঘু মুসলমানদের ভোটাধিকার হরণ- নব উত্থিত জাতীয়তাবাদী নেতাদের এসব কর্মকাণ্ড মানুষকে ভীষণ ভাবিয়ে তুলছে। মানবসমাজে ঠিক পশুরাজ কায়েম হলে কেমন হতে পারে, তার কিছু নমুনা দেখা যাচ্ছে। জঙ্গলে দুর্বল ও সংখ্যালঘু প্রাণীরা কিন্তু অস্তিত্বের সঙ্কটে নেই। বাঘ হরিণকে খাবে, এটা প্রকৃতির নিয়ম। প্রকৃতি এর মাধ্যমে তার ভারসাম্য রক্ষা করে চলেছে। এতে করে হরিণের অস্তিত্বের সঙ্কট দেখা দেয়ার কোনো লক্ষণ কখনো প্রকাশিত হয় না। অথচ মানুষের সমাজে দুর্বলদের ওপর সবলদের চড়াও হওয়ার ফলে দুর্বলদের নিশ্চিহ্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে।

স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র ইরাকে হামলা চালিয়ে ইরানের সমরনায়ক কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার পর জঙ্গলের শাসনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এবার জোরালো আলোচনা এসেছে। ক্রিমিয়াকে রাশিয়া যখন নিজেদের পেটে পুরছিল, আমেরিকা তখন এর কড়া সমালোচনা করেছে। এরপরই ইউরোপীয় বন্ধুদের নিয়ে রাশিয়ার ওপর তারা অবরোধ চাপিয়ে দেয়। ‘ধনীদের ক্লাব’ জি-৮ থেকে রাশিয়াকে তারা বাদও দিয়েছে। আমেরিকা নিজে বৈশ্বিক পর্যায়ে দুরাচারী ক্ষমতা প্রয়োগে নেমেছে। ক্রিমিয়াকে সে দেশের ‘জনগণের সম্মতিতে’ রাশিয়া নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছে। মোটকথা যুক্তরাষ্ট্র শক্তির জোরে যা করছে সেটা জঙ্গলের রাজত্বকেও হার মানাচ্ছে।

মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকাবিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও কলামিস্ট জেমস এম ডরসি আমেরিকা কিভাবে জঙ্গলের আইনের চর্চায় নেমেছে সোলাইমানি হত্যার পর তা তুলে ধরেছেন। তিনি লিখেছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, সোলাইমানিকে হত্যা করা ছিল জরুরি। কারণ তিনি ইরাকি শিয়া মিলিশিয়াদের নিয়ে ষড়যন্ত্র আঁটছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে আঘাত হানার জন্য। এ হত্যাকে বৈধ করার জন্য কোনো বিশ্বাসযোগ্য তথ্যপ্রমাণ হাজির করতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। অথচ এই গুপ্তহত্যা যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব এবং আন্তর্জাতিক আইন উভয়কেই লঙ্ঘন করেছে। ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে ইরানের ওপর কঠোর অবরোধ আরোপ করেছে। অবরোধের আগে পরে ইরানিরা এমন কোনো ঘটনা ঘটায়নি, যাতে করে যুক্তরাষ্ট্র জেনারেল সোলাইমানিকে নজিরবিহীন হত্যার কোনো অজুহাত পেতে পারে। ডরসির মতে, এই হত্যাকাণ্ড আইনের শাসনের বদলে ‘জঙ্গলের শাসন’কেই উসকে দিয়েছে। ব্যাপারটি ইরাকি প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদুল মাহদি খোলাসা করে বলেছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাকে বলেছিলেন ইরানের সাথে মধ্যস্থতা করতে। সেই সূত্র ধরে ইরানি সামরিক নেতা সোলাইমানির এই ইরাক সফর। এ অবস্থায় বাগদাদ বিমানবন্দরে সোলাইমানি গুপ্তহত্যার শিকার হলেন আমেরিকার দ্বারা। ইরাকি পার্লামেন্টে মাহদি দাবি করেন, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা প্রশমনের প্রচেষ্টায় সোলাইমানি কাজ করছিলেন। তিনি জোর দিয়ে জানান, শান্তিপ্রক্রিয়ায় ইরান ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছিল।

সোলাইমানি হত্যার জেরে কোনো পাল্টা ব্যবস্থা নিলে ইরানের ৫২টি সাংস্কৃতিক স্থাপনায় হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছে ট্রাম্প। ধারণা করা হচ্ছে মসজিদ, জাদুঘর, স্মারকচিহ্ন, প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা প্রভৃতি এ হুমকির লক্ষ্য। ইরানি বিপ্লবের নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির মাজার এর টার্গেট হতে পারে। এ ধরনের কোনো স্থাপনার ওপর হামলা ১৯৫৪ সালের হেগ চুক্তির লঙ্ঘন। পরে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার ট্রাম্পের বেআইনি বক্তব্যকে কিছুটা পাশ কাটানোর চেষ্টা করেন। এসপার বলেছেন, ‘আমি পুরোপুরি নিশ্চিত আমাদের প্রেসিডেন্ট, কমান্ডার ইন চিফ এ ধরনের কোনো বেআইনি আদেশ দেবেন না।’ সোলাইমানির সাথে ইরাকের একজন শিয়া নেতাকে হত্যা করা হয়। ইরাকের অনুমতি না নিয়ে অভিযান পরিচালনা দেশটির সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন। বিখ্যাত সমরনায়ক কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা করতে কোনো নিয়মরীতি ও আইনকানুনের তোয়াক্কা করেনি যুক্তরাষ্ট্র। পৃথিবীতে চলতে গেলে যে ন্যূনতম মূল্যবোধ প্রয়োজন তাও রক্ষা করেনি ট্রাম্প প্রশাসন। ষড়যন্ত্র যুক্তরাষ্ট্র নিজেই করেছে, যার জালে ফেলে সোলাইমানিকে কাপুরুষের মতো হত্যা করা হয়েছে।

পরমাণু অস্ত্র প্রযুক্তি তৈরি করা নিয়ে বিরোধ এখন তুঙ্গে উঠেছে। ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার কোনো জবাব দেয়নি ট্রাম্প প্রশাসন। এ দিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলছেন, ইরানকে কোনোভাবে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে দেয়া হবে না। সেজন্য ‘যত ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন’ সব তিনি নেবেন। বাস্তবে ইরানের পরমাণু অস্ত্র প্রযুক্তি উন্নীতকরণের চেষ্টার বিরুদ্ধে আমেরিকার কোনোভাবে কিছু বলার নৈতিক অধিকার নেই। আমেরিকার কাছেই বিশ্বের সর্ববৃহৎ পরমাণু অস্ত্রের মজুদ রয়েছে। এত বেশি সামরিক সরঞ্জাম সংগ্রহ করার জন্য দেশটি কোনো যুক্তি প্রদর্শন করতে পারেনি। আমেরিকা ভৌগোলিকভাবে বিশ্বের সবচেয়ে সুরক্ষিত ও নিরাপদ রাষ্ট্র। এর দুই দিকে দুটো মহাসাগর। বাকি বিশ্ব যদি তাদের ওপর আক্রমণ করতে চায়, তাহলে মহাসাগর দুটো ডিঙ্গিয়ে আমেরিকার ওপর হামলা করতে হবে।

পরমাণু অস্ত্র কোন দেশের কাছে থাকবে আর কোন দেশের কাছে থাকবে না, সেটা নির্ধারণের অধিকার একা আমেরিকার থাকতে পারে না। এ ব্যাপারে যদি যুক্তিতর্কের অবতারণা করা হয় তাহলে প্রথমেই বিশ্ববাসীকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, পরমাণু অস্ত্র কার কাছে থাকা নিরাপদ আর কার কাছে থাকা নিরাপদ নয়। পরমাণু অস্ত্র এখন অনেক দেশের রয়েছে। দেশগুলো এর কাণ্ডজ্ঞানহীন ব্যবহার এখনো করেনি। পরমাণু অস্ত্রের একমাত্র ব্যবহারকারী রাষ্ট্র আমেরিকা নিজেই। দেশটি আবারো কাণ্ডজ্ঞানহীনভাবে এর প্রয়োগ ঘটানো অসম্ভব নয়। বিশেষ করে ট্রাম্পের মতো বেসামাল ও বেপরোয়া কোনো নেতার কাছে এর চাবি অত্যন্ত অনিরাপদ। আমেরিকাই এ পর্যন্ত দুটো পরমাণু বোমা হামলা চালিয়ে ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ ঘটিয়েছে। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একেবারে শেষ পর্যায়ে পরমাণু বোমা হামলা চালিয়ে জাপানের দুটো শহর ধুলায় মিশিয়ে দিয়েছে তারা। ওই দুটো শহরে বিপুলসংখ্যক বেসামরিক মানুষের বসবাসের বিষয় তারা জানত। পরমাণু অস্ত্রের বিপুল ধ্বংসলীলা এবং এতে বেসামরিক মানুষের বিপুল প্রাণহানির আশঙ্কাও তাদের অজানা ছিল না।

৬ আগস্ট হিরোশিমা নগরীর ওপর ফেলা হয় ‘লিটল বয়’ নামের ওই বোমা। এতে সোয়া লাখের মতো মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর বিপুল ধ্বংস তাণ্ডব যখন সুস্পষ্ট তখন ৯ আগস্ট আবারো আঘাত হানল নাগাসাকিতে ‘ফ্যাটম্যান’ নামের অপর পরমাণু বোমাটি। ওই বোমায় সামান্য ক’জন সামরিক সদস্যের মৃত্যু হলেও প্রায় ৮০ হাজার বেসামরিক নিরস্ত্র মানুষের প্রাণহানি হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। পরমাণু অস্ত্রের দায়িত্বজ্ঞানহীন একমাত্র ব্যবহারকারী আমেরিকা। বিশ্ববাসী যদি আবার এমন কোনো কাণ্ডজ্ঞানহীন পরমাণু অস্ত্রের হুমকির ভয় করে, সেটা আমেরিকার পক্ষ থেকে সবার আগে হওয়া নিশ্চিত।

জেমস এম ডরসি সোলাইমানির বেআইনি হত্যার রেশ ‘অনেকদূর গড়াবে’ বলে আশঙ্কা করেছেন। তার মতে, জঙ্গলের শাসনের অগ্রযাত্রাকে এটি ত্বরান্বিত করবে। সুযোগ সৃষ্টি করবে ভারতের নরেন্দ্র মোদি, চীনের শি জিনপিং, রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন ও মিয়ানমারের শাসকদের জন্য। নিজেদের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের হাতিয়ার হিসেবে এই নেতারা এর ব্যবহার করবেন। কারণ, তারা নিজেদের দেশের সীমানা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী নয়, বরং তাদের ধারণার অস্পষ্ট লাইন দিয়ে বিবেচনা করেন। সাম্প্রতিককালে এদের ঔদ্ধত্য অনেক বেড়েছে।

ইরাকের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের যে কাজটি ট্রাম্প করেছেন, ২০১৪ সালে ক্রিমিয়ায় রুশ আধিপত্য প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সেটা পুতিন তার আগেই করেছেন। আবার জেরুসালেম ও গোলান মালভূমিতে ইসরাইলি বসতি স্থাপনের আগ্রাসনকে সমর্থন করে ট্রাম্প জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবকে একতরফাভাবে অগ্রাহ্য করেছেন। এ দিকে আন্তর্জাতিক আইনকানুনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রোহিঙ্গাদের উৎখাত করে মিয়ানমার এগিয়ে চলেছে। উইঘুরদের বিরুদ্ধে চীনের জল্লাদনীতি অব্যাহত চলছে। স্বেচ্ছাচারী মোদি ভারতের সংখ্যালঘুদের ভোটাধিকার হরণ করছেন। ডরসি তার এক নিবন্ধে এদের সিভিলাইজেশনাল নেতা বলে অভিহিত করেছেন। তাদের কাছে একমাত্র উপাস্য হচ্ছে নিজেদের জাতিধর্মের ‘কল্যাণ সাধন’। এই নেতারা আন্তর্জাতিক আইনের কোনো ধার ধারেন না। আর দেশীয় আইনকে উপেক্ষা করা তাদের জন্য কোনো ব্যাপারই নয়।

জনতুষ্টিবাদী জাতীয়তাবাদী নেতারা আন্তর্জাতিক আইনকে পরিত্যগ করেছেন। সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকারকে করেছেন লুণ্ঠিত। এম ডরসি একটি বিশ্ব জঙ্গল কায়েম হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন। যেখানে যুদ্ধ, রাজনৈতিক সন্ত্রাস, নৃগোষ্ঠীর ও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের কোণঠাসা হয়ে যাওয়া এবং বাস্তুচ্যুত হয়ে গণ-অভিবাসনের মাধ্যমে আইনের শাসনের পরিবর্তে বিশ্বে জঙ্গলের শাসনের আবির্ভাবের শঙ্কা দেখছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক কূটনীতিক ডব্লিউ ফ্রিমেন জুনিয়র এক বার্তায় বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এক সময় ছিল আন্তর্জাতিক আইনের ধারক। বিভিন্ন দেশের আইনের চর্চায় তারা ছিল প্রধান পৃষ্ঠপোষক। এখন তারা নিজেরাই জঙ্গলের আইনের বৈধতা দিচ্ছেন। তবে আমেরিকা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বের ভারসাম্য রক্ষায় আইনকানুনের রক্ষক ছিল। বিভিন্ন দেশের মধ্যে তারা সমঝোতা করেছে। আবার পেছনের রাস্তা দিয়ে অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থান সংঘটিত করেছে। ফ্রিমেন আন্তর্জাতিক রীতিনীতির যে কথা বলেছেন, সেটা আগেও বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। আবার সেটা ভেঙেও ফেলা হয়েছে।

আমেরিকান ইতিহাসবিদ ও পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক ভাষ্যকার রবার্ট কাগান এ ব্যাপারে আরো বিস্তারিত গবেষণা করেছেন। ‘দি জাঙ্গাল গ্রোউস বেক’ নামে সম্প্রতি লিখিত বইতে ক্রমে বিশৃঙ্খল হয়ে ওঠা বিশ্বব্যবস্থা নিয়ে তিনি কথা বলেছেন। তার মতে, এত দিন বিশ্বে যে ভারসাম্য বিরাজ করছিল, এর নেতৃত্ব দিয়েছে আমেরিকা। ১৯৪৫ সালের আগের গোলযোগপূর্ণ অবস্থা থেকে মসৃণ বিশ্বব্যবস্থা কায়েম হয়েছে আমেরিকার সক্রিয় তত্ত্বাবধানে। সে ব্যবস্থাকে ছাপিয়ে নৈরাজ্য ছড়িয়ে পড়ছে আবার আমেরিকার নেতৃত্বেই। এ অবস্থাকে চলতে দেয়া গেলে জঙ্গলের শাসন নেমে আসবে বলে মন্তব্য করছেন কাগান। বাস্তবে জঙ্গলের শাসন মানুষের সমাজের এই অবিবেচনাপ্রসূত শাসনের চেয়ে উৎকৃষ্ট বলতে হবে।

jjshim146@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement
নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা, অন্যদের কথা ব্যক্তিগত : প্রেস উইং সালাহর জোড়া গোলে জিতল লিভারপুল ১০ সাংবাদিকসহ ১১ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ৬ দফা মেনে নেয়ার আহবান হাসিনা-কন্যা পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক লেনদেন স্থগিত বুটেক্স-পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হবে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে : প্রেস উইং ব্যর্থ টপ অর্ডার, মুমিনুলের ফিফটির পর পথ দেখাচ্ছেন লিটন তেজগাঁওয়ে বুটেক্স ও ঢাকা পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ বেলজিয়ামের উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ বাড়ছে এসডিজি কার্যক্রমে যুক্ত হচ্ছে ড. ইউনূসের ‘থ্রি জিরো তত্ত্ব’

সকল