উন্নয়নের ধারণা ও তার ব্যাপকতা
- সালাহউদ্দিন বাবর
- ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯, ২০:০০
দেশের উন্নয়নের যে গতিধারা তাকে মসৃণ ও বাধামুক্ত রাখার জন্য যে আহ্বান সম্প্রতি এসেছে ক্ষমতাসীনদের হাইকমান্ড থেকে, সেখানে বলা হয়েছে- উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এগিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশ প্রায় অর্ধশতাব্দী হলো স্বাধীনতা অর্জন করেছে। সে তুলনায় বাংলাদেশ তেমন উন্নত হতে পারেনি। তাই উন্নয়ন নিয়ে এই আহ্বানের ব্যাপারে গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। অবশ্যই এ ক্ষেত্রে যেসব বাধা বিদ্যমান রয়েছে, তাকে চিহ্নিত করা এবং তার যথাযথ প্রতিবিধান করা তথা উদ্যোগী হওয়া জরুরি। আর তাহলেই কেবল এমন আহ্বান ফলপ্রসূ হতে পারে। উন্নয়নের ধারণা প্রকৃতপক্ষে একটি ব্যাপক এবং বিস্তৃত বিষয়। উন্নয়ন বলতে যদি নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে বা বিশেষ কোনো প্রকল্পের মধ্যে ধরে রাখা হয়, তবে এই সীমাবদ্ধ চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
উন্নয়নের ধারণায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে পুরো আর্থসামাজিক অবস্থায় পরিবর্তন আনার এক সমন্বিত ভাবনাকে। বর্তমান গণতান্ত্রিক বিশ্বে মানুষের নিছক কিছু বৈষয়িক আয়-উন্নতিকে একমাত্র উন্নয়নের সোপান হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। এই স্বাধীন ভূখণ্ডের জন্য যে লক্ষ্য-উদ্দেশ্য রাষ্ট্রে স্থপতিরা জনগণের অভিপ্রায় অভিব্যক্তির আলোকে নির্দিষ্ট করেছিলেন, আজকের উন্নয়ন পরিকল্পনায় সেই বিষয়গুলো অবশ্যই সন্নিবেশিত হতে হবে। সেই সাথে একেও গুরুত্ব দিতে হবে, সমাজে যে ভিন্ন মত ও চেতনা রয়েছে; তারও সমন্বয় হওয়া দরকার। অর্থাৎ উন্নয়নের সাথে এই জনপদের সব মানুষের আকাক্সক্ষা-অনুভূতিকে সম্পৃক্ত করা আবশ্যক। কেননা, উন্নয়ন হতে হবে সবার, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীবিশেষের নয়। উন্নয়নের মহৎ উদ্দেশ্য তখনই পূর্ণতা পাবে, যখন সেখানে কোনো বিতর্ক থাকবে না। যার অভাব এখন সমাজে বিরাজমান। উন্নয়নের ধারা চলমান রাখতে হবে, যাতে সরকার পরিবর্তন ঘটলেও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা কোনোভাবে রুদ্ধ না হয়।
উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের নেতৃত্ব দিয়ে থাকে রাজনৈতিক ও প্রজাতন্ত্রের নির্বাহীরা। এ দুই নির্বাহীদের বোধ-বিবেচনা এবং সততা-যোগ্যতা, সেই সাথে তাদের প্রতিশ্রুতি যুক্ত না হলে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড কখনোই ত্বরান্বিত হবে না। তাই এ দুই শ্রেণীর নির্বাহীদের দায়িত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে বাছাই প্রক্রিয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রাজনৈতিক নির্বাহীদের বাছাইয়ের একমাত্র পথ হচ্ছে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ। অবাধ, নিরপেক্ষ ও প্রশ্নহীন নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের বিবেচনায় যারা যোগ্য-দক্ষ এবং সৎ, তাদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের জন্য বাছাই করবে। জনগণের এ প্রতিনিধিরা মানুষের কল্যাণের জন্যই নিবেদিতপ্রাণ হয়ে থাকবে। তারা যখন রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে নিয়োজিত হবে, তারা তখন স্বাভাবিকভাবেই জনগণকে দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুসারে নিজেদের যোগ্যতা ও দক্ষতার ষোলআনা উজাড় করে জাতির জন্য কাজ করবে।
কিন্তু এখন সমস্যা হচ্ছে, যে রাজনৈতিক নির্বাহীদের নিয়ে কথা হলো, তাদের বাছাই-প্রক্রিয়ায় যে শর্তের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, অর্থাৎ প্রশ্নহীন নির্বাচনের বিষয়। অথচ গত দুটো সাধারণ নির্বাচন নিয়ে শুদ্ধতার প্রশ্ন আছে। দেশের মানুষের সত্যিকার অভিমত, সেসব নির্বাচনে প্রতিফলনের কোনো সুযোগ হয়নি। তাই এখন যারা রাষ্ট্রের রাজনৈতিক নির্বাহী, তাদের যোগ্যতা, সততা ও দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক। তাই এমন সব নির্বাহীর কাছ থেকে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অবদান রাখার ব্যাপারে কতটা আস্থা রাখা যেতে পারে। তা ছাড়া এরই মধ্যে এসব নির্বাহী দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো দক্ষতা দেখাতে পারেননি। যাদের দিয়ে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে, তাদের নিষ্ঠা যোগ্যতার ক্ষেত্রে এমন ঘাটতি সামগ্রিক উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অবশ্যই নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সেজন্য এ বিষয়টি নিয়ে ভাবা এবং সামগ্রিক পরিবর্তন আনা তথা পুনরায় জনগণের কাছে যাওয়ার কথা ভাবা উচিত। আর প্রজাতন্ত্রের নির্বাহীরা তো রাষ্ট্রের কর্মে নিযুক্তি পাওয়ার আগে তাদের মেধা-যোগ্যতার যথাযথ পরীক্ষা দিয়ে থাকে। কিন্তু এই যোগ্যতাই সব নয়, তার সাথে যুক্ত হতে হবে নীতি-সততা ও প্রতিশ্রুতির। এসব গুণাবলির সমন্বয় ঘটলেই এই ব্যক্তিদের পক্ষে দেশের অগ্রগতির জন্য নিবেদিত হওয়া সম্ভব হবে। কিন্তু এমন আদর্শিক অবস্থা কি দেশে বিরাজ করছে? পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলে এই প্রশ্নের কোনো ইতিবাচক উত্তর খুঁজে পাওয়া যাবে না।
নির্বাহীরা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পেলেও এখন তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তারা সরকারের ইচ্ছা ও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য তাদের মেধা-বুদ্ধি ব্যয় করছেন। এমন সব কর্মকর্তা দিয়ে কি আসলে প্রজাতন্ত্রের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হবে? রাজনৈতিক নির্বাহীদের পরিবর্তন ঘটতে পারে, কিন্তু প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী স্থায়ী। তাই দায়িত্ব পালনে তাদের গুরুত্ব সর্বাধিক। রাজনৈতিক নির্বাহীরা সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনাকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকতে পারেন। কিন্তু প্রজাতন্ত্রের নির্বাহীদের সিদ্ধান্ত নেয়ার মানদণ্ড হতে হবে দেশ ও দেশের স্বার্থে। দেশে এখন যে সুশাসন ও আইনের শাসনে ঘাটতি রয়েছে, তার দায়ভাগ রাজনৈতিক নির্বাহীদের পাশাপাশি এসব আমলার ঘাড়েও পড়বে। কেননা, রাষ্ট্রের প্রশাসনিক ভালো-মন্দ দেখা তাদের অন্যতম দায়িত্ব। আর সুশাসন কায়েম না হলে রাষ্ট্রের উন্নয়ন বিঘœ হওয়াই স্বাভাবিক।
জাতীয় উন্নয়নে ক্ষমতাসীনদের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তো বটেই। কিন্তু এর পাশাপাশি একটি সক্রিয় বিরোধী দলের গঠনমূলকভাবে সরকারের ভুলত্রুটি ধরিয়ে দিয়ে তাদের সঠিক পথে রাখার দায়িত্বও তাদের। তবে আজ সমাজের যে বাস্তবতা, তাতে সেখানে সরকারের প্রতিপক্ষের জন্য ভূমিকা পালন দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। সংসদে যে সাংবিধানিক বিরোধী দল রয়েছে, তারা যেহেতু ক্ষমতাসীনদের নির্বাচনী জোটের সহযোগী হিসেবে এখন পার্লামেন্টে রয়েছে; তাই সঙ্গত কারণেই তাদের পক্ষে সরকারের সমালোচকের দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হয় না। সেজন্য সাংবিধানিক বিরোধী দল বলতে গেলে কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে আছে। একাদশ সংসদের বয়স এখন এক বছর হয়ে গেছে, কিন্তু এ পর্যন্ত এই সভায় এখনো কোনো ভূমিকা এই বিরোধী দলটি রাখেনি; যার মাধ্যমে তাদের বিরোধী দল হিসেবে অবহিত করা যায়। অথচ এ সময়ের মধ্যে সরকারের বহু বিচ্যুতি দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে।
এমন নির্জীব বিরোধী দলের কারণে যে জাতীয় সংসদ রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র হয়ে ওঠার কথা, তা এই সভা হয়ে উঠতে পারেনি। অপর দিকে সংসদের বাইরে যে বিরোধী দল রয়েছে, তাদের প্রতি সরকারের মনোভাব এতটা বৈরী যে, সেগুলোকে তারা শত্রুজ্ঞান করে। এমনকি এসব দলকে তাদের স্বাভাবিক রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করার ক্ষেত্রে প্রচণ্ড বাধার সৃষ্টি করা হচ্ছে। এমন সাপে-নেউলে সম্পর্কের কারণে বিরোধী দলের সৎ ও গঠনমূলক সমালোচনাও এখন শোনা হয় না। এটা অবশ্যই অহমিকার ব্যাপার। এমন বিবেচনা থেকে ক্ষমতাসীনরা কেবল মুদ্রার একটি পিঠই দেখতে পান। এমন নীতি অনুসরণের কারণে অবশ্যই জাতীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে একটা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে। দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত রয়েছে, এমন অবস্থায় যদি সংসদীয় বিরোধী দল এবং এর বাইরে সংগঠনগুলোকে ভূমিকা রাখতে না দেয়া হয়; তবে তো দেশের সরকারব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।
উন্নয়নের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব বাছাইয়ের জন্য গণতন্ত্রের কতটা প্রয়োজন সে বিষয়ে ওপরে কিঞ্চিৎ বর্ণনা করা হয়েছে। তা ছাড়া রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এমন মনে করেন, উন্নয়ন আর গণতন্ত্র পরস্পর হাত ধরাধরি করে চলে, সেজন্য উভয় সম্পর্কযুক্ত। গণতান্ত্রিক সমাজে মানুষ বহুবিধ অধিকার ভোগের সুযোগ পায়, এসব অধিকার ভোগ করার অর্থই একটি উন্নত সমাজের নজির। আর গণতন্ত্র যদি ত্রুটিমুক্ত না হয়, তবে সমাজে মানুষের বহু মৌলিক অধিকার অপূর্ণ থেকে যায়। যে সমাজে গণতন্ত্র নেই, তার প্রশাসন নানা বাধাবিপত্তি সৃষ্টি করে এবং সেখানে ভিন্নমত পোষণ ও পৃথক পথ অনুসরণ করার কোনো সুযোগ থাকে না। আর ত্রুটিপূর্ণ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা থেকে সৃষ্টি হয় কর্তৃত্ববাদিতা। গণতন্ত্রের প্রধান অনুশীলন নির্বাচন তখন রূপ নেয় প্রহসনে। মানুষের ইচ্ছা ও পছন্দ পদদলিত হয়। এমন পরিস্থিতিতে উন্নয়ন কর্মসূচিতে কখনোই সংযুক্ত হতে পারে না সব মানুষের আকাক্সক্ষা আর স্বপ্নের বিষয়টি। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, এ দেশে এখন সবার মতো করে কোনো উন্নয়ন কর্মসূচি প্রণীত হচ্ছে না।
উন্নয়নের আরো একটি বিষয় দেশে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে সুশাসন থাকা। শাসনব্যবস্থায় যদি নীতি-আদর্শ ও জবাবদিহিতার বালাই না থাকে, তবে উন্নয়ন কার্যক্রমে অনিয়ম-দুর্নীতি হতে বাধ্য। দেশে আজ দুর্নীতির যে বিস্তৃতি ঘটেছে এবং অনিয়ম নিয়মে পরিণত হয়েছে; তার একটা উদাহরণ সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অভিযান। আর এ অভিযানে যেসব দুর্নীতিবাজকে চিহ্নিত ও পাকড়াও করা হয়েছে, তাদের সবাই ক্ষমতাসীন দলের সাথে সম্পৃক্ত। সেজন্য দুর্নীতি নির্মূলের অভিযান ঘর থেকেই শুরু করা হয়েছে বটে।
কিন্তু সে অভিযানের গতি এখন শ্লথ হয়ে পড়েছে। কোনো প্রশাসনের পক্ষে তখনই সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব, যখন কোনো প্রশাসন নীতিবোধ ও আদর্শের আলোকে পরিচালিত হয়ে থাকে। রাষ্ট্রের সংবিধানে এসব নীতি-আদর্শ নির্ধারিত করে রেখেছে। দেশে এখন সেই সুশাসনের ঘাটতি থাকার কারণ হচ্ছে, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে সেই নীতির বিচ্যুতি নিয়ে কোনো জবাবদিহিতা নেই। এমন পরিস্থিতিতে প্রশাসন চলে কেবল ব্যক্তির বোধ বিবেচনার পথ ধরে। আর যে প্রশাসন সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হয় না, তাদের পক্ষে রাষ্ট্রীয় উন্নয়নে অবদান রাখা কঠিন।
সুশাসনের পাশাপাশি আইনের শাসন যদি দেশে কার্যকর না হয় তাতেও উন্নয়ন বিঘিœত হবে। আইন প্রণীত হয়ে থাকে দেশের কল্যাণ তথা আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য। তাই সেসব আইন কার্যকর করার মাধ্যমে সমাজের শৃঙ্খলা বিধান হয়ে থাকে। সমাজে যদি অশান্তি-বিশৃঙ্খলা বিরাজ করে তবে স্বাভাবিকভাবেই নাগরিকদের স্বস্তি বিনষ্ট হয়। অথচ একটি উন্নত দেশের প্রশাসনকে নাগরিকদের স্বস্তির জন্য উদ্যোগী হতে হয়।
আইন অমান্য করে যেসব দুর্বৃত্ত শান্তিশৃঙ্খলা ভঙ্গ করে, তাদের সেই অপকর্মের সমুচিত শাস্তির ব্যবস্থা করা প্রশাসনের দায়িত্ব। কিন্তু এই দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এখন যে ভূমিকা তা কোনোভাবে মানুষের নিরাপত্তার অনুকূল নয়। শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্তব্য পালনের ক্ষেত্রে আইনই হবে তাদের পথচলার নির্দেশিকা। কিন্তু দেশে এই নীতি অনুসৃত হয় না, বরং ব্যক্তির রাজনৈতিক পরিচয় বিশ্বাস ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয় হয়ে থাকে। অনুরাগ-বিরাগের বশবর্তী হয়েই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলেই কেবল সমাজের শৃঙ্খলা নিশ্চিত হতে পারে। এমন শৃঙ্খলাই উন্নয়নের একটি অনিবার্য শর্ত। এই শর্ত পূরণ হলে রাষ্ট্রে স্থিতিশীলতা আসতে পারে। আর তাতে ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্প বিকাশের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হতে পারে। সমাজে যে বাহিনী এমন শৃঙ্খলা বিধানের দায়িত্বে রয়েছে, তাদের মধ্যে নীতিবোধের চেতনার বিকাশ ঘটাতে হবে।
দেশের উন্নয়ন নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনাকারীদের এখন একটা সন্তুষ্টির ভাব বিরাজ করছে। সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় এমন দাবি করছে যে, দেশে দারিদ্র্যের হার ২০১৮ সালে ২১ দশমিক ৮ শতাংশ। এই পরিসংখ্যানে আশা প্রকাশ করা হলেও বিপুলসংখ্যক মানুষ এখনো দরিদ্র। এমন বিরাটসংখ্যক মানুষের অবস্থার কথা বিবেচনায় নিলে উন্নয়নের দাবি কতটা যৌক্তিক। তা ছাড়া দেশের সব মানুষের অন্ন, বস্ত্র, আশ্রয়, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের বিষয়টি অগ্রাধিকার নিয়ে বিবেচনার জন্য জাতীয় সংবিধান বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। তাই উন্নয়নের কথা এলে স্বাভাবিকভাবে এ বিষয়টি সামনে আসে যে, আজ দেশে এসবের কী গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে? সংবিধান দেশে সব প্রকার বৈষম্য দূর করার জন্য তাগিদ দিয়েছে। তবে দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে, যে দেশের ধনীর সংখ্যা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে, সেই সাথে দরিদ্র মানুষের হারও বৃদ্ধির দিকে। এমন সমন্বয়হীনতা বজায় থাকার সাথে উন্নয়নের ধারণা কখনো সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে পারে না।
ndigantababor@gmail.com
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা